গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় তদন্তে র্যাবের গাফিলতির প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা
বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় গৃহবধূকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখার ঘটনায় ছেলেকে গ্রেফতার করেছিল র্যাব। এ ঘটনায় পুলিশের তদন্তে জানা যায়, গৃহবধু হত্যার ঘটনায় ছেলে নয়, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বাড়ির ভাড়াটিয়া।
আসামি ভেবে ছেলেকে গ্রেফতারের ঘটনায় র্যাবের তদন্তে যদি কারও গাফিলতি থাকে বা তথ্যগত, প্রক্রিয়াগত ভুল থাকে, এর সঙ্গে র্যাবের কেউ যদি দায়ী হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব জানান তিনি।
বগুড়ায় গৃহবধূ খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে প্রথমে ছেলেকে গ্রেফতার করেছিল র্যাব। ওই ঘটনায় তদন্তে পুলিশ সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেছে। যেখানে ছেলে নয় তিন ভাড়াটিয়া জড়িত বলে উঠে আসে। অথচ ছেলে নিরীহ হলে বিচারের আগেই মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হলেন।
এ ঘটনায় র্যাবের বক্তব্য জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস বলেন, বগুড়ার ধুপচাচিয়ার ঘটনায় ছেলে জবানবন্দি দিয়েছে। সে তথ্য আমরা রেকর্ড করেছি। তখন তার আত্মীয়স্বজন ছিলেন। তাকে যখন ক্যাম্পে আনা হয় তখনও তার আত্মীয় স্বজনরা ছিলেন। ছেলের দেয়া জবানবন্দির ভিত্তিতেই র্যাব কাজ করেছে।
তিনি বলেন, তদন্তে ভিন্নতা হতেই পারে। ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও তদন্ত করছে। পুলিশ তদন্তে যদি র্যাবের সহযোগিতা নেবার প্রয়োজন করে আমরা করব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের র্যাবের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ আসে বা তদন্তে গাফিলতির তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
দুই সংস্থার তদন্তে ভিন্নতা কেন? আর ছেলে তো আদালতে স্বীকার করেনি। আদালতে অস্বীকার করায় রিমান্ডে নিতে হয়েছে। এখনো রহস্য উদঘাটিত হলো না, কিন্তু ছেলে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হলেন। এ বিষয়ে মুনীম ফেরদৌস বলেন, স্বীকারোক্তি অনেক ধরনের আছে। কেউ কোনো ঘটনায় স্বীকারোক্তি দেয়া মানেই ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করে না। আবার যিনি স্বীকারোক্তি দেবেন তিনি যেকোনো সময় তার বক্তব্য অস্বীকার, পরিবর্তন, পরিমার্জন করতে পারবেন। এটা তার আইনগত অধিকার। ১৬৪, ১৬১ আলাদা। এখানে র্যাবের অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। তবুও ঘটনায় তদন্তে কোন গাফিলতি থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে।
তিনি বলেন, মিডিয়া ব্রিফিং সচেতনতামূলক কাজ। এখানে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই। ব্রিফিং নিবারণমূলক কাজের অংশ। মানুষ যাতে শিক্ষা নেয় বা সচেতন হয়। এখানে পুলিশের তদন্ত ভুলের সুযোগ নেই। ঘটনার আরও অধিকতর তদন্ত হবে। তদন্ত কিন্তু শেষ হয়নি।
এর আগে বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় গৃহবধূকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখার ঘটনায় ছেলেকে গ্রেফতার করেছিল র্যাব। গ্রেফতারের পর র্যাব জানায়, ছেলে মাকে হত্যা করেছে। তবে পুলিশের তদন্তে মোড় নেয় ঘটনার। পুলিশ বলেছে, গৃহবধু হত্যায় ছেলে নয়, বাড়ির ভাড়াটিয়াই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।