চট্টগ্রামের জিয়া স্মৃতি জাদুঘর সবার জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বিপ্লব উদ্যান থেকে উই রিভোল্ট বলে বিদ্রোহ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন, আবার অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন। তিনি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে চট্টগ্রামের এই সার্কিট হাউসে শাহাদাত বরণ করেন। এই সার্কিট হাউসে শহীদ জিয়ার রক্ত মিশে আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘদিন ধরে সার্কিট হাউসে স্থাপিত জিয়া স্মৃতি জাদুঘর বন্ধ করে রেখেছিল। জাদুঘর থেকে শহীদ জিয়ার নাম মুছে দিয়েছিল। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি। শহীদ জিয়ার নাম বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে। শহীদ জিয়া স্মৃতি জাদুঘর সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে কাজীর দেউরীর জিয়া স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে যুবদলের উদ্যোগে আয়োজিত এতিম শিশুদের অংশগ্রহণে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।
জিয়াউর রহমানের ছবি পাহারা দিতে হয় না মন্তব্য করে ডা. শাহাদাত বলেন, দেশের মঙ্গল যারা চায়নি তারাই জিয়াউর রহমানকে সেদিন চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে নির্মমভাবে খুন করেছে। জিয়ার জীবনের শুরুই এই চট্টগ্রামে, শেষও এ চট্টগ্রামে। তিনি বলতেন স্লোগানে মুক্তি আসবে না। আমাদের উৎপাদনমুখী হতে হবে। কর্মমুখী হতে হবে। প্রত্যেকটি মানুষের হাতে কাজ পৌঁছে দিতে হবে।
কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাবেক সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ মুন্না, যুবদলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মনজুরুল আজিম সুমন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসান, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভুঁইয়া, সাবেক উপজাতি বিষয়ক সম্পাদক ও রাঙ্গামাটি জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য সাইফুর রহমান শপথ, আমিনুল ইসলাম তৌহিদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ জসিম, সাধারণ সম্পাদক এস এ মুরাদ চৌধুরী প্রমুখ।
এর আগে ২০১৯ সালে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নাম পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নামকরণ করার দাবিতে ‘মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ছাত্র ফোরাম’ সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধন করে ছাত্রলীগ। মানববন্ধন শেষে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নামফলক কালি দিয়ে মুছে দেয় তারা। ২০২২ সালের মার্চে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর বন্ধ ও কিউরেটরকে বহিষ্কারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লেখক-সাংবাদিক ও সংগঠনের ব্যানারে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এরপর সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিএনপি দাবি জানালেও খুলে দেওয়া হয়নি। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর অবশেষে জাদুঘরটি সবার জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে।