নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঘন কুয়াশার কারণে বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠা-নামায় বিঘ্ন ঘটছে। রানওয়ে কুয়াশায় ঢাকা পড়ায় বেসরকারি বিমান সংস্থার দুটি ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ে অবতরণ করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দর কতৃপক্ষ। এতে ওই দুই ফ্লাইটের ঢাকাগামী শতাধিক যাত্রী আটকা পড়েছেন বলেও জানা গেছে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত বিমানবন্দরের রানওয়েতে কোনো বিমান অবতরণ করেনি।
বিজ্ঞাপন
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক এ কে এম বাহাউদ্দিন জাকারিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে সকাল ৮টায় নভোএয়ারের একটি ফ্লাইট এখনো অবতরণ করতে পারেনি ও এয়ার অ্যাস্টার একটি ফ্লাইট সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণের কথা থাকলেও দৃষ্টিসীমা কম থাকায় সময়মত নামার সম্ভাবনা নেই। তবে ফ্লাইট বাতিলের কোনো সম্ভাবনা নেই।
বিজ্ঞাপন
রানওয়েতে উড়োজাহাজ চলাচলের জন্য কমপক্ষে দুই হাজার মিটার ভিজিবিলিটি (দৃষ্টিসীমা) থাকতে হয়। বর্তমানে ৭০০ মিটার দৃষ্টিসীমা বিরাজ করছে। বেলা ১০টার পর আকাশ পরিষ্কার হলে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শীতের এ সময় বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রায় এমনটি ঘটে।
প্রতিদিন সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে গড়ে ১৫ থেকে ১৬টি ফ্লাইট পরিচালিত হয়। এর মধ্যে দুপুর ১২টার আগে ৩টি ফ্লাইট চলাচল করে। গতকাল (শনিবার) কুয়াশার কারণে দুটি ফ্লাইটে অবতরণে দেরি হয়েছিল।
ঢাকা আরিচা মহাসড়কে ধামরাইয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ইট বোঝাই পিকআপের পিছনে ট্রাকের ধাক্কায় পিকআপ ভ্যানের চালক ও হেলপার নিহত হয়েছেন।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ১টার দিকে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা আরিচা মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতরা হলেন, জামালপুর শিলিকুরিয়া গ্রামের আনিসের ছেলে পিকআপ চালক কাঞ্চন এবং একই গাড়ির হেল্পার নেত্রকোনা বারহাট্টা গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে আশরাফুল।
সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশ জানায়, রাতে ইট বোঝাই পিকআপটি ঢুলিভিটা এলাকায় নষ্ট হয়ে গেলে চালক ও সহযোগী সেটি মেরামত করছিল। এসময় একটি ট্রাক পিছন থেকে ধাক্কা দিলে পিকআপের চালক ও সহযোগী চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে পুলিশ ও ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে এবং রাস্তা পরিষ্কার করে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। এ ঘটনায় ঘাতক ট্রাকটি আটক করা গেলেও তার চালক পলাতক রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
রাজবাড়ীতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গঠিত বিশেষ টাস্কফোর্সের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করেছেন। এ সময় সদর উপজেলার ভান্ডারিয়া বাজারের তিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান। এর আগে শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়।
জানা গেছে, ‘‘বিশেষ টাস্কফোর্স’’ কমিটির সংশ্লিষ্ট সদস্যদের অংশগ্রহণে সদর উপজেলার ভান্ডারিয়া বাজার ও আলাদীপুর বাজার এলাকায় বিভিন্ন পণ্যের পাইকারী ও খুচরা বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ সময় মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রির উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করার অপরাধে ভান্ডারিয়া বাজারের মেসার্স আল-মদিনা ফার্মেসীকে ৬ হাজার টাকা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য পণ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণ করার অপরাধে কালাম মিষ্টি ঘরকে ১ হাজার টাকা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করার অপরাধে মোশারফ স্টোরকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর বাজার পরিস্থিতি ও সরবরাহ চেইন তদারক ও পর্যালোচনার জন্য গঠিত রাজবাড়ী জেলা ‘‘বিশেষ টাস্কফোর্স’’ কমিটির অংশগ্রহণে রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ের বাজার তদারকি চলমান থাকবে।
মেহেরপুরের গাংনীর কাথুলী ইউপি মেম্বর ও বিএনপি নেতা আজমাইন হোসেন টুটুলকে (৪২) গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী।
রোববার (১৭ নভেম্বর) ভোর রাতে আ্জমাইন হোসেন টুটুলের নিজ বাড়ি ধলা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি একটি ওয়ান শুটার গান, দুই রাউন্ড বন্দুকের কার্তুজ, বিপুল পরিমাণ সরকারি কৃষি পণ্য ও কম্বল।
আজমাইন হোসেন টুটুলকে গাংনী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
যৌথবাহিনীর নেতৃত্বদানকারী ২৭ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারী ক্যাপ্টেন রওশন জানান, আজমাইন হোসেন টুটুলের কাছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও সরকারি মালামাল রয়েছে মর্মে সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। এসময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ওয়ান শুটারগান, দুই রাউন্ড বন্দুকের কার্তুজ, ত্রানের কম্বল, সরকারি কৃষি প্রণোদনার বীজ, সার ও কয়েকটি সেলাই মেশিন।
আজমাইন হোসেন টুটুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন ও সরকাররি সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের সাপেক্ষে গাংনী থানায় হস্তান্তর করা হয়।
বাঁধ ভাঙ্গার শঙ্কায় উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মানুষ। সাগর ও নদী বেষ্টিত এই দ্বীপে বাঁধের অবস্থা দিন দিন অবনতির দিকে চলে যাচ্ছে, যা এলাকার মানুষের জীবনের ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। বিশেষ করে চরনজির, চরকাশেম, চরহেয়ার-এ এখনো বেড়িবাঁধ নির্মাণ হয়নি, যা আরও ভয়াবহ দুর্যোগের মুখে পড়তে পারে।
বছরের পর বছর চলে গেলেও রাঙ্গাবালীতে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কার্যক্রম এগোয়নি, যার ফলে এখানকার জনগণের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৭ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে মোট ১৮৭ দশমিক ৯৯ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে, এসব বাঁধের অধিকাংশ এখন নাজুক অবস্থায় রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে, বাঁধগুলোর উচ্চতা বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল, যা এখনও করা হয়নি।
অথচ, পুরনো বাঁধগুলো যেখানে থাকছে, সেগুলোর বেশিরভাগ জায়গায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাঁধাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কিছু এলাকায় বাঁধের উচ্চতা কম, কিছু বাঁধ ভেঙে গেছে, আবার কিছু জায়গায় বাঁধের অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। ফলে যখনই দুর্যোগ আসে, বাঁধ উপচে পানি ঢুকে পড়ে, যার কারণে কৃষক ও মৎস্যজীবীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।
চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা নেছার হাওলাদার বলেন, বাঁধ ভেঙে আমাদের বসতবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। আমাদের এখানে বাঁধের উচ্চতা কম হওয়ায় যখনই নদীর পানি বাড়ে, তখন তা আমাদের বাড়ির কাছে চলে আসে। টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হলে আমাদের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।
ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চরইমারশন গ্রামের হেলাল খান বলেন, বাঁধ ভেঙে আমাদের পুকুর ও মাছের ঘের ভেসে যায়, ফসল নষ্ট হয়। প্রতিবার বন্যা বা ঝড় আসলে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন বলেন, রাঙ্গাবালী উপজেলার অধিকাংশ বেড়িবাঁধ বর্তমানে খুবই দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু বাঁধের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠের উঁচু হওয়ার কারণে পুরনো অবস্থা থেকে বেশ পিছিয়ে রয়েছে। তবে, এসব বাঁধের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং ভবিষ্যতে বাঁধগুলোর উঁচু করার কাজও শুরু হবে। বর্তমানে বিভিন্ন দুর্যোগের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে বিশ্বের উন্নয়ন সংস্থার সহায়তায় এই উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার অবস্থান বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে। এটি পটুয়াখালী সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রাঙ্গাবালী ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত, যার মধ্যে চরভূয়া, চালিতাবুনিয়া, ছোটবাইশদিয়া, বড়বাইশদিয়া, এবং কাচিয়া ইউনিয়ন অন্তর্ভুক্ত। এখানকার প্রধান অর্থনৈতিক কার্যকলাপ হচ্ছে মৎস্য সংগ্রহ, কৃষি এবং বাণিজ্য। তবে, সাগর ও নদী বেষ্টিত এই অঞ্চলটি বার বার প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে আসছে, যার ফলে এখানকার জনগণের জীবনযাত্রা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।