প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ড. খলিলুর
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকার বিষয়াবলী সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ড. খলিলুর রহমানকে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকার বিষয়াবলী সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ড. খলিলুর রহমানকে।
তিনি হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন উপদেষ্টার মর্যাদা, বেতন-ভাতাদি ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য হবেন।
এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
ড. খলিলুর রহমান ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পররাষ্ট্র) কাডারে যোগদান করেন। তিনি ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশের প্রথম নিয়মিত বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান এবং একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিতে এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ১৯৭৮-৭৯ সালে তিনি আমেরিকান এক্সপ্রেস ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকে নির্বাহী পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮০-৮৩ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন ও আইন ও কূটনীতিতে এমএ এবং অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৮৩-৮৫ সময়কালে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগে এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৫ সালে তাকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে বদলি করা হয়। সেখানে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অর্থনৈতিক ও আর্থিক কমিটিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলির (এলডিসি) মুখপাত্র হিসেবে এই কমিটি ও জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদে দায়িত্ব পালন করেন।
ড. রহমান ১৯৯১ সালে জেনেভায় জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনে (আঙ্কটাড) বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে জাতিসংঘ সচিবালয়ে যোগ দেন। জাতিসংঘে পরবর্তী ২৫ বছরে তিনি নিউইয়র্ক ও জেনেভায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন, যার মধ্যে ছিল জাতিসংঘ মহাসচিবের নির্বাহী কার্যালয়ে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও উন্নয়ন বিষয়ক প্রধান; জাতিসংঘ মহাসচিবের উচ্চ পর্যায়ের প্রযুক্তি গ্রুপের নির্বাহী সচিব; আঙ্কটাড-এর প্রযুক্তি বিভাগ, ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতি বিশ্লেষণ গ্রুপের প্রধান; জাতিসংঘ সদর দফতরে আঙ্কটাড ব্যুরো প্রধান; জাতিসংঘ সচিবালয়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলির কর্মসূচির প্রধান; আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অশুল্ক বাধা সংক্রান্ত জাতিসংঘের আন্তঃসংস্থা গ্রুপের চেয়ার; এবং বিশ্ব বাণিজ্যের নতুন ও গতিশীল খাতসমূহের কর্মসূচির প্রধান সমন্বয়কারী।
ড. রহমান জাতিসংঘের বিভিন্ন ফ্লাগশিপ প্রকাশনার প্রধান রচয়িতা এবং অবদানকারী ছিলেন। এছাড়া তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব এবং আঙ্কটাড মহাসচিবের বাণিজ্য, অর্থনীতি ও উন্নয়ন সম্পর্কিত অনেক বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। ২০০১ সালে ব্রাসেলস স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সম্মেলনে কর্মসূচি পরিকল্পনার খসড়া তৈরিতে তিনি নেতৃত্ব দেন, যা এলডিসি দেশের রফতানির জন্য শুল্ক ও কোটা মুক্ত সুবিধা প্রদানের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
২০০১ সালে ড. খলিলুর রহমান তৃতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লতিফুর রহমানের একান্ত সচিব হিসেবে কাজ করেন। ড. রহমান রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।