সোনারগাঁও টেক্সটাইল থেকে ছাঁটাই করা শ্রমিক-কর্মচারীদের সকল বকেয়া বেতন অবিলম্বে পরিশোধ করার দাবিতে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় বরিশালের অশ্বিনী কুমার হলচত্বরে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভে সভাপতিত্ব করেন সোনারগাঁও টেক্সটাইল থেকে ছাঁটাইকৃত শ্রমিক লতিফা বেগম। সোনারগাঁও টেক্সটাইলের ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন তাহমিনা বেগম, মামুন খান প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সমন্বয়ক ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক ইমাম হোসেন খোকন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক শহিদুল হাওলাদার, সোনারগাঁও টেক্সটাইল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি বেল্লাল গাজী প্রমুখ।
বক্তারা জানান, ২০২০ সাল থেকে সোনারগাঁও টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মেয়াদে অর্ধশতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী ছাঁটাই করা হয়। অনেক শ্রমিক ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে সোনারগাঁও টেক্সটাইলে চাকরি করছিলেন, কিন্তু তাদের বকেয়া পাওনা বা হিসাব তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। শ্রম আইন অনুযায়ী, এই শ্রমিকদের গ্র্যাচুইটি, অর্জিত ছুটি এবং অন্যান্য পাওনা পরিশোধ করার কথা।
বিজ্ঞাপন
এই বিষয়ে ইতোমধ্যে শ্রম আদালতে মামলা করা হয়েছে। সোনারগাঁও টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষ, শ্রম আদালতের নির্দেশ অনুসারে, ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের জন্য সিদ্ধান্ত দিলেও সম্প্রতি বিচারক পরিবর্তন হওয়ার পর তারা টাকা পরিশোধ না করার ঘোষণা দিয়েছেন।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে সোনারগাঁও টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষকে তাদের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করার জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। তারা দাবি করেন, ছলচাতুরীর পথ পরিহার করে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা উচিত।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নিজামপুর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ২৫ হাজার ৫০০ পিস ইয়াবা জব্দ করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড নিজামপুর স্টেশন।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে কোস্ট গার্ড সদর দফতরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি এ তথ্য জানান।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার (২৬নভেম্বর) রাত ৩টার দিকে বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড দক্ষিণ জোন অধীনস্থ বিসিজি স্টেশন নিজামপুর এর সদস্যরা মহিপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে একটি অভিযান পরিচালনা করে। এসময় ব্যাগ হাতে দারিয়ে থাকা একজন ব্যক্তির গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে তাকে কাছে আসতে বলা হয়। কিন্তু কাছে না এসে ব্যাগ ফেলে পার্শ্ববর্তী ঘন বসতির মধ্যে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ফেলে যাওয়া ব্যাগের মধ্যে ২৫ হাজার ৫ শত পিচ ইয়াবা পাওয়া যায়।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি বলেন, জব্দকৃত ইয়াবার পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহিপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, জব্দকৃত ইয়াবা থানার মালখানায় সংরক্ষিত রয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার লালদিঘী এলাকায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভরতদের হামলায় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। তার মাথায় কোপানো হয়।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালত ভবনের প্রবেশমুখে রঙ্গম কনভেনশন হলের সামনে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় আলিফকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিবেদিতা ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন আহত ৭ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন শ্রীবাস দাশ, শারকু দাশ, ছোটন, সুজিত ঘোষ, উৎপল ও এনামুল হক।
এর আগে শুনানির পর জামিন না মঞ্জুর হলে মঙ্গলবার বেলা ১২টা ২০ মিনিটে চিন্ময়কে পুলিশের প্রিজনভ্যান তোলা হয়। তখন তার সমর্থকরা প্রিজন ভ্যানটির ঘেরাও করে আটকে রাখেন। আদালত চত্বর থেকে বের হওয়ার সড়কটিতে পুরাতন পিকআপ ভ্যান দিয়ে পথ রোধ করা হয়। পুলিশ তাদের অনুরোধ করে ও বুঝিয়ে সরিয়ে দিতে চাইলেও তারা পথ অবরোধ করে রাখেন। পুলিশের প্রিজন ভ্যানটির চাকা পাংচার করে দেওয়া হয়। এরপর বেলা ২টা ৫০ মিনিটে সাউন্ড গ্রেনেড ফাটিয়ে এবং লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। পরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে পুলিশের একটি পিকআপে করে কারাগারের নিয়ে যাওয়া হয়। ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়া ইসকন সমর্থকেরা আদালত এলাকার ত্যাগ করার সময় মোটরসাইকেল, গাড়ি ও আদালত মসজিদ মার্কেটের নিচতলায় চেম্বারকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে। তাদের ইট পাটকেলের আঘাতে কয়েক জন আহত হয়েছেন। লালদীঘি চত্বরের নাসির উদ্দিন নামে একজন পিঠা ব্যবসায়ীর মাথা ফেটে যায়। এ সময় সাইফুল ইসলাম আলিফকে কোপানো হয়। ইসকন সমর্থকদের রামদা, লাঠিসোঁটা হাতে দেখা গেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, সনাতনী ধর্মাবলম্বীরা নগরের নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন। অপরদিকে, ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর' স্লোগান দিয়ে তরুণ-যুবকদের একটি দল মিছিল নিয়ে নিউ মার্কেট মোড়ে অবস্থান নিয়েছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেছেন, আগের রিজিমে পুলিশ ও এনএসআই দ্বারা ভেরিফিকেশনে চাকরি প্রার্থীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা যাচাইয়ের অর্থহীন প্রক্রিয়া চলছিল। চাকরিতে এত ভেরিফিকেশনের দরকার নেই। ব্যক্তি হিসেবে চাকরি প্রার্থী কেমন সেটি বিবেচনাই মুখ্য বিষয়। সরকারি কর্মচারী ব্যক্তি হিসেবে তার কাজ ঠিকমত করছেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে রাজশাহীতে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটি প্রতিবেদন দিতে চাই যা বাস্তবতা বিবর্জিত নয়। জনগণ কী চাচ্ছে তা শোনার জন্য আমরা এসেছি। আমরা সরকারের কাছে একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরতে চাই। এখন যে প্রশাসন আছে সেখান থেকে কীভাবে আরও ভালো সেবা দেওয়া যায় সেটিই আপনাদের কাছ থেকে শোনা আমাদের উদ্দেশ্য।
তিনি নিজ নিজ জায়গা থেকে অর্পিত দায়িত্বটা আরও ভালোভাবে পালন করার এবং মানুষের কীসে ভালো হবে তা চিন্তা করার অনুরোধ জানান। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এক দুই বছরের মধ্যেই দেশের চেহারায় একটা পরিবর্তন আসবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কমিশনের সদস্য এবং ছাত্র সমন্বয়ক মেহেদী হাসান বলেন, সাম্য, ইনসাফ ও মানবিকতা ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার। ছাত্র আন্দোলন হয়েছিল কারণ আগের সরকারের নিকট থেকে মানুষ এগুলো পায়নি। তিনি আগস্টের পরিবর্তনের দর্শন গ্রহণ এবং জনপ্রশাসনে নিযুক্ত কর্মচারীদের মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় জনপ্রশাসনে নিযুক্ত কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করা, আবেদন বা চিঠিপত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে মীমাংসা হওয়া, পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, ডেপুটেশন বন্ধ করা, পাবলিক সার্ভিস কমিশন এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সকল ক্যাডারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, দক্ষতা ও সততার ভিত্তিতে পদোন্নতি, সেবাগ্রহীতার রেটিং প্রদান, শিশুদের জন্য মাঠ উন্মুক্ত করা, কোচিং ও প্রাইভেট বন্ধ করা, দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের মত নানা সুপারিশ উঠে আসে অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে।
এ সময় কমিশনের সদস্য এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমানের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রফেসর ডা. সৈয়দা শাহীনা সোবহান, ছাত্র প্রতিনিধি ও কমিশনের সদস্য মেহেদী হাসান, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আলমগীর রহমান, আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, রাজশাহীর পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামানসহ আট জেলার জেলা প্রশাসক ও বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে এক কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলা-পাল্টা হামলা করেছে রাজধানীর তিন কলেজ। এর ফলে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের অবকাঠামোগত ক্ষতির পাশাপাশি হারিয়ে গেছে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট-মার্কশীটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
কলেজের শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি হামলায় প্রায় ৪০ জনের মতো আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলসহ রাজধানীর বিভিন্ন মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের প্রায় ৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন অধ্যক্ষ ওবায়দুল্লাহ নয়ন।
জানা যায়, সহপাঠীর ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে এমন দাবিতে ন্যাশনাল মেডিকেলের সামনে আন্দোলন করার সময়ে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের কিছু শিক্ষার্থী ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এই হামলায় বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন।
তবে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ২৪ নভেম্বর ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীসহ রাজধানীর আরও বেশ কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা মিলে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা চালায়।
এই হামলার পর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হামলায় ন্যাশনাল হাসপাতালের প্রসাশনিক কার্যালয়, বহিঃবিভাগ, জরুরি বিভাগ, জরুরি বিভাগ, ডেন্টাল বিভাগ, প্যাথলজি বিভাগে ভাঙচুর করা হাসপাতালের অভ্যন্তরে দেশে-বিদেশি শিক্ষার্থী, সাধারণ রোগী ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের ওপর হামলা করা হয়। হাসপাতালের আর্থিক সেবায় নিয়োজিত পূবালী ব্যাংকের শাখাতেও ব্যপক ভাঙচুর করা হয়।
এছাড়া ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের প্রায় দশ কোটি টাকার ক্ষতি দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ন্যাশনাল হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ব্রি. জে. (অব.) ডা. ইফফাত আরা বলেন, একজন চিকিৎসকের কাছে তার রোগীর সেবা প্রার্থনার সমান। ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। আমরা তার সেবায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু এত কিছুর পরও চিকিৎসকদের কপালে জুটেছে মিথ্যা অপবাদ। শিক্ষার্থী ও রোগীর আত্মীয়দের চাহিদা মত তদন্ত কমিটি গঠন করেও ছাত্র প্রতিনিধিদের অসযোগিতার কারণে তদন্ত করতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে হামলার ফলে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজও। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির তিন তলা ভবনের প্রতিটি রুমে ভাঙচুর করা হয়েছে। নষ্ট করা হয়েছে কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ সকল আসবাবপত্র। ক্যাম্পাসের আনাচে কানাচে পড়ে আছে প্রতিষ্ঠানটির হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ সনদসহ নানা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
দ্বিতীয় তলায় কলেজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কক্ষ রেকর্ড রুমে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট, মার্কশীট ও রেজিস্ট্রেশনের হাজার হাজার কাগজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কর্মীরা নষ্ট হওয়া কাগজপত্রগুলো গোছানোর চেষ্টা করছেন।
রেকর্ড রুমে কাজ করা অফিস সহকারী মো. এমদাদ বলেন, হামলাকারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিটা করেছে শিক্ষার্থীদের। তাদের জীবনের অর্জনের সার্টিফিকেট ও মার্কশীটগুলো নষ্ট করে দিয়েছে। আমি রাস্তা থেকেও অনেক মার্কশীট খুঁজে এনেছি। কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে সব কাগজ আমাদের রেকর্ড রুমে সংরক্ষরণ করা ছিলো। কিন্তু তারা সব শেষ করে দিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের হামলায় পুরান ঢাকার এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ ড.কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, ঘটনার দিন আমাদের ক্লাস বন্ধ ছিলো। আমাদের কলেজের শিক্ষার্থীরা ছিলো না। তবে আমাদের কলেজ পরীক্ষার কেন্দ্র হওয়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা চলছিলো। এই সময়ে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা আমাদের শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীদের মারধর করেছে। হামলার কারণে আমাদের অবকাঠামো ক্ষতির পাশাপাশি যে ক্ষতিটা হয়েছে তা হলো শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের অর্জন সার্টিফিকে ও মার্কশীট নষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের কলেজের সম্পদের দলিলসহ বহু কাজগ তছনছ হয়ে গেছে। এগুলো সংগ্রহ করতে আমাদের অনেক পরিশ্রম ও হয়রান হতে হবে। আমার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিলাম। পরে আবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হোলাম। আবার ঢাবিতে আসলাম। এই সকল নথি, শিক্ষার্থীদের কাগজ কি ভাবে পাবো বুঝতে পারছি না।
তবে রাস্তার পার্শ্ববর্তী এক ভবনের কিছু জানালার গ্লাস ভাঙ্গা ছাড়া তেমন ক্ষতি হয়নি আরেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবি নজরুল সরকারি কলেজের। ভবনের ‘এ’ নম্বর ভবনের পেছনের দিকের কিছু গ্লাস ইট পাটকেলে ক্ষতি হয়। এই কলেজেও ঘটনার সময়ে শিক্ষার্থীরা ছিলো না। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা চলায় কিছু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
হামলায় ক্ষতি ও শিক্ষার্থীদের আহতের বিষয়ে জানতে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যপক মোহাম্মদ হাবিবুর রহামনের সঙ্গে যোগযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে কথা বলতে রাজি হন নি।
এদিকে, পুরান ঢাকার তিন প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় মামলা হয়েছে। মামলা ৮ হাজার শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জসীম উদ্দীন বলেন, দুই কলেজ ও ন্যাশনাল হাসপাতালে হামলার ঘটনায় ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। সে দিনের ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত ও আমাদের একটি এপিসি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার নেই।