নরসিংদীর দেলোয়ারা হত্যা রহস্য ৮ মাসেও উৎঘাটনে ব্যর্থ পুলিশ

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, নরসিংদী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

দীর্ঘ আট মাস পার হলেও নরসিংদীর পলাশে চাঞ্চল্যকর দেলোয়ারা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।

গত ২৬ মার্চ রাতে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের চরনগরদী গ্রামে নিজ বসত ঘরের শয়নকক্ষে নৃশংসভাবে খুন হয় দেলোয়ারা বেগম (৬০)। তার স্বামীর নাম মৃত আব্দুল মালেক দেওয়ান ওরফে দেওয়ান আলী। প্রথমে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পলাশ থানায় মামলা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালে দেলোয়ারা বেগমের মেয়ে নার্গিস বেগম বাদী হয়ে নরসিংদী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন মামলা নং- ২১৭/২০২৪ দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয় এলাকার শাহজালাল মিয়া, জনি মিয়া, আব্দুল সাত্তার ওরফে সায়েব, ছাদেক মিয়া, আজাদ মেম্বার, মামুন, জাকির, রানা, মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে রিজু, মানসুরা বেগম, শিল্পী বেগম ও মুক্তা বেগমসহ মোট ১২ জনকে। এদের মধ্যে শাহাজালাল ও মুক্তা বেগম আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিনে মুক্ত আছেন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া গত ১৯ জুলাই নরসিংদী জেলখানা ভাঙচুরের ঘটনায় মঞ্জুরুল ইসলাম রিজু অন্যান্য আসামিদের সাথে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সরকার তাদেরকে আত্মসমর্পণ করার সুযোগ দিলে রিজু আত্মসমর্পণ করে এবং হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করে। ওই মামলায় কোনো অগ্রগতি না থাকায় পরবর্তীতে নিহত দেলোয়ারা বেগমের ছোট ছেলে কিরণ মিয়া বাদী হয়ে গত ৩০ মার্চ পলাশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

পলাশ থানার দায়েরকৃত এজাহার থেকে জানা যায়, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে উল্লেখিত আসামিগণ কৌশলে দেলোয়ারা বেগমের বাড়িতে গিয়ে তার শয়নকক্ষে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা গলা কেটে হত্যা করে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়। কারণ আসামি সাত্তার ওরফে সায়েব দেলোয়ারার প্রতিবেশি। দেলোয়ারা বেগমের সাথে তাদের দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর যাবৎ জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল। সাত্তার তার স্ত্রী ঝিনুক, মেয়ে মুক্তা বেগম, মেয়ের জামাই শাহাজালাল ও অন্যান্যরা প্রায় সময় দেলোয়ারা বেগমকে সম্পত্তির জন্য মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। দেলোয়ারা বেগমের ৩ ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে কিরণ মিয়া বিগত ১৭ বছর যাবত দুবাই প্রবাসী এবং বড় ছেলে হিরণ মিয়া দীর্ঘ ১৯ বছর যাবত ইতালি প্রবাসী। বোন নার্গিস ও ছোট ভাই নাদিম নরসিংদীর মাধবদীতে বসবাস করত। বাড়িতে শুধুমাত্র দেলোয়ারা বেগম এবং কিরণের স্ত্রী জেনী আক্তার বসবাস করতেন।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার কিছুদিন পূর্বে নিহত দেলোয়ারার পুত্রবধু জেনী আক্তারের মেয়ে নিহা আক্তারের পরীক্ষা থাকার কারণে গত ২০ মার্চ তার বাবার বাড়ি নরসিংদীর হাজীপুর গ্রামে চলে যায়। যার কারণে দেলোয়ারা বেগম একাই বাড়িতে ছিলেন। সেই সুযোগে হত্যাকারীরা দেলোয়ারা বেগমকে নৃশংসভাবে খুন করে। মায়ের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে কিরণ এবং হিরণ ইতালি এবং দুবাই হতে দেশে ফিরে আসেন।

দেলোয়ারা বেগম হত্যা মামলাটির ব্যাপারে পলাশ থানা পুলিশ কোনো রহস্য উদঘাটন করতে না পাড়ায় পরবর্তীতে নরসিংদী পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নরসিংদীকে তদন্তের জন্য দেয়া হয়েছে।