দাম বাড়লেও সরবরাহ সংকটে অস্থিরতা কাটেনি তেলের বাজারে
আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে দেশে ভোজ্যতেলের বাজারে গত কয়েক মাস ধরে অস্থিরতা চলছে। মিল মালিকদের সঙ্গে সরকারের একাধিক বৈঠকের পরেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। মিল মালিকদের দাবিতে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সরকার নতুন করে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করলেও সরবরাহ সংকট কাটেনি এখনও।
সরকার নির্ধারিত নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন ১৭৫ টাকায় বিক্রি হবে, যা আগে ছিল ১৬৭ টাকা। খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৫৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে। বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৮৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগে ছিল ৮১৮ টাকা। দাম বৃদ্ধির পর থেকে পুরনো মূল্যের তেলই বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) অলিগলিতে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ টাকায় এবং নগরীর বড় বাজারগুলোতে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত দুই লিটার ৩৪০ টাকা, তিন লিটার ৫১০ টাকা এবং পাঁচ লিটার ৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখনও ডিলারদের কাছ থেকে নতুন সরবরাহ পাননি তারা। চট্টগ্রাম নগরীর কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী মো. হোসাইন জানান, দাম বৃদ্ধির পর থেকে কোনো ডিলার অর্ডার নিচ্ছে না। পুরনো তেলই বিক্রি করছি। একই কথা জানিয়েছেন ওই এলাকার ব্যবসায়ী মো. ইয়াকুব।
আতুরার ডিপো এলাকার খুচরা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মহসিন বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধির পর ডিলার লোকজন আর তেল দিতে আসতেছে না। আগে যারা দোকানে এসে অর্ডার নিয়ে যেত। আপাতত আগের তেলগুলো বিক্রি করছি। সরবরাহ যথাযত না থাকায় বাজারে বোতলজাত তেল কমে যাচ্ছে। বেশিরভাগ দোকানে তেল নেই।
এদিকে, ডিলার এবং ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, সরবরাহ পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। দেশের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সরবরাহ বাড়ছে এবং পাইকারি দামে কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে কয়েকদিন সময় লাগবে।
টি.কে. গ্রুপের পরিচালক তারিক আহমেদ বলেন, মিল থেকে তেল পরিশোধন এবং ডিলারদের মাধ্যমে বাজারে পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগে। তবে সরবরাহে এখন আর কোনো বাধা নেই। অচিরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
সরকারের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের পরেও সরবরাহ সংকট কাটাতে সময় লাগছে। এই অস্থিরতা দ্রুত সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতারা।