আধুনিক উৎপাদন ও কৃষির নামে সার-কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, খাদ্য কেবল খাদ্য নয়, সাধুরা খাদ্যকে শরীর সেবা করা বলে থাকেন। আমরা যদি সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে চাই তাহলে আমাদের পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। কিন্তু খাবারের যে আধুনিক উৎপাদন শুরু হয়েছে-আধুনিক উৎপাদন ও কৃষির নামে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে এমনকি আদি বীজ নষ্ট করা হচ্ছে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে মিরপুর ১৩-তে অবস্থিত বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ প্রাঙ্গণে আদিবাসী খাদ্য ও শস্য মেলা-২০২৪ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে উন্নয়ন সংগঠন নাগরিক উদ্যোগ এবং বঞ্চিত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য গড়ে উঠা মহা প্রজ্ঞা এডুকেশন ট্রাস্ট।
খাদ্য নিরাপত্তা ও পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে উপদেষ্টা বলেন, পাহাড় ও দেশের অন্য জায়গায় যেসব ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা রয়েছে তাদের টিকিয়ে রাখতে দেশের নাগরিকদের কাজ করতে হবে। তামাক চাষ এবং রাবার বাগান পাহাড়ি অঞ্চলের জমি নষ্ট করছে উল্লেখ করে এসবের পরিবর্তে স্থানীয় ফসল ও খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বরোপ করেন।
তিনি বলেন, আমরা কাপ্তাই হ্রদে মাছের অভয়ারণ্য গড়ে তোলার উদ্যোগ নিচ্ছি যাতে হারিয়ে যাওয়া দেশীয় মাছ ফিরিয়ে আনা যায়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় হারিয়ে যাওয়া মাছ ফিরিয়ে আনা, মাছের অভয়ারণ্য সৃষ্টির মাধ্যমে মাছ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকের এ মেলা প্রতিকী অর্থে পাহাড়ি এলাকায় যে ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা রয়েছে তারা যে খাদ্য উৎপাদন করে থাকেন তা রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।
এসময় গণমাধ্যমকে পাহাড়ি সংস্কৃতি ও তাদের খাদ্য সম্পর্কে দেশবাসীর নিকট সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানান।
খাদ্য চাহিদা পূরণ ও নিরাপদ খাদ্য সরবরাহকে সরকার চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “মেইন স্ট্রিম খাদ্যে এখনও কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ হয়নি, তবে আমরা চেষ্টা করছি। মাছ ও ডিমের উৎপাদনের ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে। তবে ফিডের উপাদানগুলো নিরাপদ করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। এতে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন।
উল্লেখ্য, দেশের শহুরে নাগরিক জনগোষ্ঠীকে আদিবাসীদের বৈচিত্র্যময় সমৃদ্ধ জুম কৃষির বিভিন্ন শস্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এই মেলার আয়োজন। আদিবাসী উদ্যোক্তরা যেন বেশি বেশি ভোক্তাদের আকৃষ্ট করতে পারেন সেই তাগিদ থেকেই আদিবাসী খাদ্য ও শস্য মেলা-২০২৪ আয়োজন করা হয়েছে।