তোপের মুখে পঞ্চগড়ে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত
পঞ্চগড় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পদের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ তুলে পরীক্ষা বর্জন করেছে পরীক্ষার্থীরা। একইসাথে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনসহ পরীক্ষা কেন্দ্রে থাকা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভকারী পরীক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার পর থেকে পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজে প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখার এ ঘটনাটি ঘটে। পরে তোপের মুখে পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে পঞ্চগড়ের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুজ্জামান।
এদিকে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ নতুন করে স্বচ্ছভাবে পরীক্ষার দাবি করে সাড়ে তিন ঘন্টা বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সহ কর্মচারিদের অবরুদ্ধ করে রাখলে সংশ্লিষ্টদের আশ্বাসে সরে যায় বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পরীক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গেলে জানা যায়, পরীক্ষায় কোন আসন বিন্যাসের ব্যবস্থা ছিল না। পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস, পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশসহ বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পান পরীক্ষার্থীরা। এসময় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে পরীক্ষা বর্জন করে কলেজের একটি কক্ষের কয়েকটি জানালা ভাঙচুর করেন। পরে মিছিল নিয়ে তারা অধ্যক্ষর কক্ষের সামনে এসে হাজির হন। পরে তারা সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
এসময় প্রায় তিন ঘন্টা অতিবাহিত হলেও বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা কেন্দ্র পঞ্চগড় এম আর সরকারি কলেজে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এদিকে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ নতুন করে স্বচ্ছভাবে পরীক্ষার দাবি পরীক্ষার্থীদের। এদিকে যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পরীক্ষা কেন্দ্রে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গণঅভ্যুত্থানের আগে যে অনিয়ম ছিল তা এখনো চলছে। যখনি বিষয়টি আমাদের নজরে আসে আমরা প্রতিবাদে নেমে যাই। আমরা একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর পরীক্ষার চাই। নিয়োগ পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট পুরাতন কমিটি বাতিলসহ বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে।
তবে পরীক্ষার বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে আগে থেকে কোন কিছু জানানো হয়নি। সেই সাথে কলেজের কোন শিক্ষককে পরীক্ষায় দ্বায়িত্ব দেয়া হয়নি। উদ্ভুত পরিস্থিতির দায় আদালত সংশ্লিষ্টদের নিতে হবে বলে জানালেন কলেজের অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম।
তবে পরীক্ষার বিষয়ে আগে থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয় দাবী নিয়োগ কমিটির। এছাড়া পরীক্ষায় কোন অনিয়ম হলে এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পঞ্চগড় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান।
জানা গেছে, শুক্রবার ও শনিবার (২০, ২১ ডিসেম্বর) দুই দিনব্যাপী দুই শিফটে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছিলো পঞ্চগড় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী পদের নিয়োগ পরীক্ষা। গত ১৯ নভেম্বর প্রকাশীত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১২টি পদের ভিত্তিতে ৩০ জনকে নিয়োগের কথা ছিল।