সাভারে আশুলিয়ায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। আহত ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আশুলিয়া থানা থেকে ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের নরসিংহপুর এলাকার সোনামিয়া মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, গাইবান্ধা জেলার মো. শাহজাহান মিয়া (২৭), আসাদুল ইসলাম (২৪) ও মো. ফারুকুল ইসলাম (২৫), রংপুরের মেহেদী হাসান (২১), গোপালগঞ্জের নাজমুল ইসলাম (৩২), দিনাজপুরের মো. ওমর ফারুক (২৩), জয়পুরহাটের মো. মনসুর কবিরাজ (৩৮), লালমনিরহাটের ফারুক উদ্দিন (২১), দিনাজপুরের সাজ্জাদ হোসেন (১৯) ও নাসিরুল ইসলাম (২২), কুড়িগ্রামের মাইদুল ইসলাম (৪৪), শরীয়তপুরের আমিনুল ইসলাম (৩৭) ও কিশোরগঞ্জের মো. হানিফ ভূইয়া (২৬)।
আহত মো. রবিউল ইসলাম। তিনি আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, পূর্বের চেক ডিজঅনার মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি রাকিব ভূঁইয়াকে গ্রেফতারের জন্য যান আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল। পরে তারা রাকিব ভূঁইয়াকে গ্রেফতারের পর হাতকড়া পরিয়ে থানায় আনার চেষ্টা করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ৬০-৬৫ জন ব্যক্তি পুলিশকে বাধা দেয়। তারা রাকিবকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ বাধা দিলে পুলিশর উপর হামলা চালান। একপর্যায়ে লোহার রড দিয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রবিউল ইসলামে মাথার পেছনে দিকে, ডান পায়ে আঘাত করেন। এসময় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পরলে মারধরকারীরা রাকিবকে হাতকড়া পরা অবস্থায় পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে আশুলিয়া থান থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে রাকিবসহ হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে আহত পুলিশ সদস্য রবিউলকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।
রাকিব ভূঁইয়ার দুলাভাই আবুল কালাম বলেন, রাকিব ভূঁইয়ার দুলাভাই আবুল কালাম বলেন, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে আশুলিয়া থানার কয়েকজন পুলিশ রাকিব ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করতে আসে। এসআই রবিউল ব্যাডমিন্টন খেলা অবস্থায় রাকিবকে হ্যান্ডকাফ পরায়। হ্যান্ডকাপ পরানোয় রাকিবসহ সেখানে উপস্থিত কয়েকজনের সঙ্গে পুলিশের তথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। রাকিবকে তারা নিতে পারেনি।
তিনি বলেন, এরপর থানা থেকে আরও পুলিশ এসে রাকিবদের বাসার পাশে আমার বাসায় অভিযান চালায়। ওই বাসায় ভাড়াটিয়ারা থাকে। পুলিশ ঘুমন্ত অবস্থায় পোশাক কারখানার নিরীহ ১৫ জন শ্রমিককে ধরে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম ভিডিও দেখে যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার করা হোক। কিন্তু তারা অনুরোধ শুনেনি।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর বলেন, আসামিরা সরকারি কাজে বাধা দিয়েছে। এছাড়া পুলিশের সঙ্গে তাদের ধস্তাধ্বস্তিতে একজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। আহত মো. রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে আজ শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০-৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। ওই মামলায় গতকাল রাতে আটক ১৩ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।