প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে মিলল নৌকায় সীল মারা ২০০ ব্যালট পেপার
নেত্রকোনার মদনে স্থানীয় সরকার (ইউপি) নির্বাচনের ৩ বছর পর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে পরিত্যক্ত জায়গায় পড়ে থাকা শপিং ব্যাগের ভেতরে মিলেছে নৌকা প্রতীকে সীল মারা ২০০ ব্যালট পেপার।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়ননের বাড়রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পেছনে পড়ে থাকা একটি শপিং ব্যাগ থেকে এসব ব্যালট পেপার উদ্ধার করে স্থানীয় থানা পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মদন উপজেলায় ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাফায়েত উল্লাহ রয়েল নির্বাচিত হন। নির্বাচনের দিন বাড়রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাফায়েত উল্লাহ রয়েলের লোকজন নৌকা প্রতীকে জোর পূর্বক ভোট দেয়। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন আহতও হয়। ফল প্রকাশের ৩ বছর পর চেয়ারম্যান পদের সাফায়েত উল্লাহ রয়েলের নৌকা প্রতীকের সীল মারা ২০০ ব্যালট ও ইউপি সদস্য পদে বাচ্চু মিয়ার ৬৫টি সীল মারা ব্যালট পেপার দেখতে পায় স্থানীয়রা।
স্থানীয় সুতিয়ারপাড় গ্রামের বাসিন্দা হিরন মিয়া স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বাড়রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে একটি শপিং ব্যাগ দেখতে পাই। ব্যাগটি হাতে নিয়ে দেখতে পাই সীল মারা ব্যালট পেপার। পরে বিষয়টি প্রশাসনকে জানাই।
স্থানীয় লোকজন জানান, গত নির্বাচনে এই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোরপূর্বক নৌকায় ভোট দেয়। যার প্রমাণ আজ মিলেছে।
ওই নির্বাচনে ইউপি সদস্য পদে (পরাজিত প্রার্থী) বাচ্চু মিয়া জানান, ৩ বছর আগেও বিদ্যালয়ের পেছন থেকে আমার ফুটবল প্রতীকের ব্যালট পেপার উদ্ধার করে অফিসে নিয়ে গেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, ৩ বছর পূর্বের ঘটনা আমার মনে নেই। আমার কেন্দ্রে এমন কোনো অভিযোগ ছিল না।
মদন উপজেলার সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা হামিদ ইকবাল জানান, যথারীতি নিয়ম অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনের নিকট ব্যালট পেপার হিসাব করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আপনারা প্রিজাইডিংয়ের বক্তব্য নিতে পারেন।
মদন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বেলায়ত হোসেন বলেন, আমি শুনেছি একটি বিদ্যালয়ের পেছন থেকে ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়েছে। তা পুলিশের কাছেই আছে।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাইম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, আমরা ঘটনাস্থল থেকে সীল মারা ব্যালট উদ্ধার করে নির্বাচন অফিসে প্রেরণ করেছি।
এ বিষয়ে মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ইমদাদুল হক তালুকদার জানান, ব্যালট পেপার উদ্ধার করে নির্বাচন অফিসে জমা দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।