কিশোরগঞ্জেও চড়া চালের বাজার, বিপাকে ভোক্তারা
কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন বাজারে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সবরকম চালের দাম। অথচ এ জেলাতেই বিপুল পরিমাণ ধান উৎপাদন হয়েছে। তবুও বাজারে কমছেনা চালের দাম।
হঠাৎ এভাবে লাফিয়ে চালের দাম বৃদ্ধির ফলে বিপাকে রয়েছে ভোক্তারা। বাজারের হিসাব মিলাতেই যেন হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষের।
বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে নতুন চালের দাম। পুরাতন চাল কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও নতুন চালের বাজার এখন চড়া বলছেন ভোক্তারা।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বাজার ঘুরে দেখা যায়, বি-আর-২৯,৬৫,৭০, ৪৯,২২,৭১,২৪ জাতের চাল কেজি প্রতি বেড়েছে ৪-৫ টাকা। স্বর্ণ ৫ মোটা চাল এক সপ্তাহ আগে ৫৭ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। নতুন চালের ২৫ কেজির বস্তা সপ্তাহ আগে ১২৫০ টাকা ছিল, এখন ১৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জের বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে রাতাবোর চালের দাম। যা একমাস আগে ছিল ৭০ টাকা, আর এখন ৯০-৯২ টাকা।
রিকশাওয়ালা জাকির মিয়া বলেন, এভাবে চালের দাম বাড়তে থাকলে পরিবার নিয়ে চলা আমাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে যাবে ৷ সংসারের হিসাব মিলানো এখন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সরকারের নিয়মিত বাজার তদারকি প্রয়োজন।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানর চাকুরিজীবী আব্দুল হালিম বার্তা ২৪. কম'কে বলেন, চালের বাজার অস্থির এখন। আমাদের বেতন তো বাড়েনা। পরিবার নিয়ে চলা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ শহরের চাল ব্যাবসায়ী দুলাল মিয়া বলেন, গত একসপ্তাহে প্রতিটি চালের বস্তা প্রতি ৫০-৮০ টাকা বেড়েছে। আমরা চাহিদামতো চাল পাচ্ছিনা। মিল থেকে দাম দিয়েই চাল কিনতে হচ্ছে।
আরেক ব্যবসায়ী শাহীন বলেন, বছরের শেষ সময়ে চালের বাজার গরম থাকে। নতুন বছরের শুরুতেই বাজার কমে আসবে। নতুন চালের চাহিদা বেশি কিন্তু যোগান কম এজন্য দাম বেশি।
ইসা রাইস মিলের মালিক আবু ইসা বলেন, ধরেন আমাদের ধানের প্রয়োজন ১২শ' মণ ৷ আমরা পাচ্ছি ৭শ' মণ। এভাবে প্রয়োজন মতো ধান সংগ্রহ করতে পারছিনা কৃষক থেকে। কৃষকরা ধান আটকিয়ে রাখার কারণে এমন হচ্ছে।
কৃষক জসিম উদ্দিন, আব্দুল মালেক, জমির মিয়া বার্তা ২৪. কম'কে বলেন, এখন ধান উৎপাদনের খরচ বেড়েছে। ডিজেল, সার, শ্রমিক খরচ মিলিয়ে পোষানো কঠিন হয়ে গেছে। বাজার ভালো থাকলে ধান বিক্রি করবো।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জে এবার ১ লাখ ৬৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন হয়েছে ১২ লাখ ৫৩ হাজার ৬২৫ মেট্রিক টন। এ থেকে চাল পাওয়া গেছে ৮ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন।