অবরুদ্ধ জীবন কাটিয়ে ২৬ কিশোর-কিশোরীর ঘরে ফেরা
ভালো কাজের প্রলোভনে ভারতে পাচারের শিকার ২৬ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরীকে ট্রাভেল পারমিটে বেনাপোলে হস্তান্তর করেছে ভারতীয় পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ পাচার হওয়া বাংলাদেশিদের বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
ফেরত আসা বাংলাদেশিদের বাড়ি যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা, নড়াইল, টাংগাইল, মাগুরা, কুড়িগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায়। আইনি সহায়তা দিতে তাদের জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, মহিলা আইনজীবী সমিতি ও রাইটস নামে ৩টি এনজিও তাদের গ্রহণ করেছে। দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথে তারা ভারতে গিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক হয়েছিল।
জানা যায়, পাচার প্রতিরোধে কাজ করছে দেশি, বিদেশি বিভিন্ন সংগঠন। তার পরেও থেমে নেই পাচার কার্যক্রম। কখনো ভালো কাজ, কখনো প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে নারী-শিশুদের ভারতে পাচার করে আসছে একটি চক্র। পরে সেখানে নিয়ে বিক্রি করে ইচ্ছের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে।
এমন পাচারের শিকার ২৬ বাংলাদেশিকে উদ্ধারের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফেরত দেয় ভারতীয় পুলিশ। এরা বিভিন্ন সময় পুলিশের হাতে আটকের পর ভারতের পশ্চিম বঙ্গের একটি হোমের আশ্রয়ে ছিল। এদের বয়স ১০ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। আটকের পর আইনি জটিলতায় কেউ কেউ দুই বছর থেকে আট বছর পর্যন্ত ভারতের হোমে থাকতে হয়েছিল। পরে ভারত-বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া বিশেষ ট্রাভেল পারমিটে এরা দেশে ফেরার সুযোগ পায়।
ফেরত আশা কিশোর-কিশোরীরা জানান, কাউকে প্রেমের প্রলোভনে ভারতে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছিল। অনেকের কাজের কথা বলেও প্রতারণা করে চক্রটি। ভারতে বিক্রির পর তাদেরকে দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে বাধ্য করে পাচারকারীরা।
এনজিও সমন্বয়কারী বাংলাদেশ সলিডারিটি সেন্টারের নূরজাহান রীনা জানান, ২৬ জন বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় পুলিশ। পাচারের পর এদের মধ্যে অনেককে ভারতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। এনজিও সদস্যরা আইনি সহায়তা দিবে কিশোর-কিশোরীদের।
বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রাশেদুজ্জামান জানান, ২৬ বাংলাদেশিকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে এনজিও সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে গত তিনদিনে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে পাচারের শিকার ৪১ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।