কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিন, দুপুরে নৌযান শ্রমিকদের বৈঠক
চাঁদপুরে একটি জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় নৌযান শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিন চলছে। যা প্রায় চলছে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা অতিক্রম করেছে। নৌ পরিবহন অধিদপ্তর থেকে বৈঠকের আহ্বান জানানো হলেও এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি শ্রমিক সংগঠন।
তাদের দাবি, বৈঠক নয়; দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে ফিরবেন না। তবে বৈঠকের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহ আলম।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকদের কাজে নামানো সম্ভব নয়। বর্তমানে মালবাহী, তৈল-গ্যাসবাহী, কয়লাবাহী ও বালুবাহীসহ সব ধরনের পণ্যবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।
সরকারের পক্ষ থেকে বৈঠকের আহ্বান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রোববার মিটিংয়ে বসার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং কর্মবিরতি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে দুপুর ২টায় বসবো। নতুন সিদ্ধান্ত হলে জানাব।
সংগঠনটির সচিব মো. আতিকুল ইসলাম টিটু বলেন, চাঁদপুরের হরিনা ঘাটের কাছে মাঝেরচর এলাকায় জাহাজে সাত খুনের রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের বিচারসহ আরও কিছু দাবিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার রাত ১২টা থেকে সারা দেশে নৌ-শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলছে।
এদিকে কর্মবিরতির ফলে আজকেও বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙর জাহাজ থেকে পণ্য খালাস।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রামের সদরঘাট ও মাঝিরঘাটে সবকিছু গুছানো অবস্থায় থাকলেও জেটি এলাকায় কেউ নেই। সারাদেশে ১০ হাজার ছোট-বড় পণ্যবাহী নৌযান ও লক্ষাধিক শ্রমিক রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেলাল নামে একজন শ্রমিক বলেন, আমাদের সমিতি থেকে বৃহস্পতিবার থেকে কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলেছে। আমরা সমিতির কথা অনুযায়ী সবকিছু গুছিয়ে কাজ চলে আসছি। যখন কাজ শুরু হওয়ার ডাক দিবে তখন সবাই কাজ করবে।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি এবং এবিসি শিপিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মো. আরিফ বলেন, পণ্য খালাসে কোনো বিলম্ব যদি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে হয়, সেটা ভিন্ন বিষয়। তবে মানুষের সৃষ্টি যে কোনো সমস্যার কারণে যদি দেরি হয়, তাহলে বাড়তি ব্যয় আমদানিকারককে বহন করতে হবে। এক্ষেত্রে আমদানি করা পণ্যের দামে প্রভাব পড়তে পারে। এরমধ্যে খাদ্যপণ্যে প্রভাবটা বেশি পড়তে পারে। তাই এ বিষয়ে উভয়পক্ষকে আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন।
কর্মবিরতির কারণে দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফুডস্টাফ ইর্ম্পোটারস এন্ড সাপ্লায়ার্স এসোসিয়েশসের সহ-সভাপতি মো. আনোয়ার হোসাইন সুজন বলেন, যখন কোনো পণ্য জাহাজে অতিরিক্ত সময় থাকবে বা খালাসে অতিরিক্ত সময় লাগবে তার জরিমানা বা বাড়তি ব্যয় আমাদের বহন করতে হয়। সরকারও এক্ষেত্রে আমাদের দায়ী করে থাকে। গতকাল শুক্রবার হিসেবে পণ্য খালাসে তেমন প্রভাব না পড়লেও আজকে প্রভাব পড়ছে।