রাজশাহীতে ২০২৪ সালে নির্যাতনের শিকার ৮১১ নারী ও কন্যাশিশু

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহীতে ২০২৪ সালে নির্যাতনের শিকার ৮১১ নারী ও কন্যাশিশু

রাজশাহীতে ২০২৪ সালে নির্যাতনের শিকার ৮১১ নারী ও কন্যাশিশু

২০২৪ সালে রাজশাহী জেলায় অন্তত ৮১১ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (এএসকে)। সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নির্যাতনের শিকার হওয়া ২৮ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৭ জন ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন। ধর্ষণের পর ৫ জন নারী ও কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে এবং ৬ জন নারী ও শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজশাহী নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় এএসকের প্রকল্প ‘অগ্নি’ (নারী ও কন্যাশিশুদের জন্য সমতাভিত্তিক ও নিরাপদ স্থান তৈরিতে সচেতনতা, পদক্ষেপ এবং পক্ষপাতিত্ব) এর অধীনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৮ জন নারী ও কন্যাশিশু যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। ১৮ জন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং কটূক্তি ও উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে। ২৯৯ জন গৃহবধূর মধ্যে ১০ জন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন এবং ১৮ জন তাদের স্বামী বা স্বামীর পরিবারের হাতে নিহত হয়েছেন। ২৫৫ জন গৃহবধূ পণ নিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং ২ জন আত্মহত্যা করেছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাজশাহী জেলায় ২০২৪ সালে ১৪৯ জন শিশুকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে এবং এর মধ্যে ২২ জনকে হত্যা করা হয়েছে। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এক স্কুলছাত্রী এসিড হামলার শিকার হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পরিবর্তন প্রকল্পের পরিচালক রাশেদ ইবনে ওবায়েদ রিপন বলেন, দায়মুক্তির সংস্কৃতি এবং সরকারি উদ্যোগের অভাবে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের রাজশাহী জেলার অগ্নি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক হাসিবুল হাসান পল্লব জানান, এই প্রতিবেদনটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর এবং অগ্নি প্রকল্পের আওতায় ১৮০টি কমিউনিটি সামাজিক সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। ব্র্যাকের সহযোগিতায় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে এএসকে তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পটি রাজশাহী ও গাজীপুর জেলায় বাস্তবায়ন করছে।

হাসিবুল হাসান পল্লব জানান, ২০২৪ সালে এএসকের পক্ষ থেকে ৮৭ জন ভুক্তভোগীকে আইনি পরামর্শ এবং ৬৬ জন নারী ও শিশুকে আইনি সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- সিনিয়র সাংবাদিক ও আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বাবু এবং এএসকের ডেটা ম্যানেজমেন্ট পরামর্শক সাব্বির ইসলাম।