ফরিদপুরের সদর উপজেলার গেরদার কাফুরা রেল ক্রসিং এ ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত ও ৩ জন আহতের ঘটনায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা শেখ জিন্নাতের (৫৯) খোঁজ নেয়নি কেউ। দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাসটিকে বাঁচাতে রাস্তার পাশে থেকে সিগন্যাল দিচ্ছিলেন তিনি। সিগন্যাল লক্ষ্য না করে সড়কে উঠে পরে মাইক্রোবাসটি।
এসময় মাইক্রোবাসটি রেলের ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে মুচড়ে যায়। গাড়ির সামনের গ্লাসটি ভেঙ্গে ছুটে গিয়ে জিন্নাতের বুকে আঘাত করে। এতে জিন্নাতের বুকের ৬টি হাড় ভেঙ্গে যায়। গ্লাসের ভাঙ্গা টুকরার আঘাতে পেট ফুটো হয়ে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
গুরুতর আহত জিন্নাতের শারারিক অবস্থার অবনতি হলে বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকা মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জিন্নাতের বড় ছেলে শামীম শেখ জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মহাখালী বক্ষব্যাধী হাসপাতালে গিয়ে পৌছান তারা। তবে কর্তৃপক্ষ ভর্তি নিচ্ছে না। সেখান থেকে আমাদের আবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমারা বাবাকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে রওনা হয়েছে। বাবাকে ভর্তি করতে অপেক্ষা আর চেষ্টা করছি।
শামীম আরও জানান, গতকালকের দুর্ঘটনায় আমার বাবার বুকের ৬টি হাড় ভেঙ্গে গেছে। ডাক্তার জানিয়েছে ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। আমার বাবা বাচঁবে কিনা মরবে জানিনা। কিন্তু চিকিৎসায় তো করাতে পারছি না। আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করি। বাবা ওই রেলক্রসিংএ চায়ের দোকান করতো। আমারা খুবই গরীব মানুষ। দূর্ভাগ্যের কারণে আমার বাবা মরতে বসেছে। আত্মীয় স্বজনের সহয়তায় মাত্র ১২ হাজার টাকা নিয়ে ঢাকা এসেছি। জানিনা আমাদের কিভাবে কি হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ কোন খোঁজ খবর নেয়নি।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, স্থানীয় একজন আহত রয়েছেন আমি শুনেছি। তবে যারা নারায়নগঞ্জের হতাহত তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। স্থানীয় আহত ব্যক্তির পরিবারের সাথে এখনো যোগাযোগ হয়নি।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে ফরিদপুরের গেরদা ইউনিয়নে মুন্সীবাজার কাফুরায় রেলক্রসিং রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস এর ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ৫ যাত্রী নিহত হন। নিহতরা সকলে নারায়নগঞ্জের বাসিন্দা। ফরিদপুরে বিয়ের পাত্রী দেখতে এসে তারা দুর্ঘটনায় পড়েন। এই ঘটনায় আরো ৩ জন আহত হন। তার মধ্যে গুরুতর আহত শেখ জিন্নাত। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।