তৃতীয়বারের মতো চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট ডিসি পার্কে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ফুল উৎসব। পার্কজুড়ে সৌরভ ছড়াচ্ছে ১৩৬ প্রজাতির দুই লাখের বেশি বাহারি ফুল।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (৪ জানুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া এই উৎসব চলবে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে পার্কটি। জনপ্রতি টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা।
এবারের উৎসবে মাল্টি কালচারাল ফেস্টিভ্যাল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গ্রামীণ মেলা ও পিঠাপুলি উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে চিত্রশিল্পীদের আঁকা প্রায় ২০০টি চিত্রকর্ম এবং ক্যারিকেচার আঁকার বিশেষ ব্যবস্থা। প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
বিজ্ঞাপন
উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান এবং চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চট্টগ্রামের বড় ঐতিহ্য হচ্ছে মেজবান। এটা বছরের পর বছর ধরে চলছে বিধায় ঐতিহ্যতে রূপ নিয়েছে। একইভাবে যদি এ ফুল উৎসব টিকিয়ে রাখা যায় আগামীতে এটাও চট্টগ্রামের ঐতিহ্যে রূপ নেবে। চট্টগ্রামের মানুষের এ উদ্যোগ যখন দেশের সবাই জানতে পারবে তখন অন্যরাও ফুল উৎসব করার জন্য এগিয়ে আসবে এবং এটার জন্য সরকার সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।
তিনি আরো বলেন, ফুল আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফুল মনের জড়তা, সংকীর্ণতা দূর করে মানুষের মনকে নির্মল আনন্দ দেয়।জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের জীবনে ফুল ব্যবহার হয়ে থাকে। আগামী প্রজন্মের মনে ফুলের মাধুর্যকে ফুটিয়ে তুলতে এ ফুল উৎসব সহায়তা করবে।
জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন। স্থানীয় সরকারের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. খোরশেদ আলম খান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. নুরুল্লাহ নুরী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ফুল পবিত্রতার প্রতীক। আমরা মানুষকে যখন আর্শীবাদ জানাই তখন বলি, তোমার জীবন ফুলের মত সুন্দর হোক। তাইতো ফুল উৎসব। আগে এ জায়গাটা মাদকের অভয়ারণ্য ছিল। দখলদার ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে ১৯৪ একর জায়গাকে উদ্ধার করে ফুলের পবিত্র ভূমিতে উন্নীত করতে পেরে আনন্দ অনুভব করছি। এ ফুল উৎসবকে শুধু মাসব্যাপি না করে সারাবছর যাতে করা যায় এ বিষয় নিয়ে আমাদের চিন্তা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৪ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ডিসি পার্কে রয়েছে তিনটি বিশাল পুকুর, ফুডকোর্ট, পর্যটকদের বসার স্থান, সেলফি কর্নার, অনুষ্ঠানস্থল, ভাসমান ফুল বাগান, শিশুদের খেলার মাঠ, স্থায়ী ফুলের বাগান ও টিউলিপ গার্ডেন। এছাড়া হাটার উন্মুক্ত স্থান, অস্থায়ী খেলার মাঠ, ভিআইপি জোন, কন্ট্রোল রুম, রেস্টুরেন্ট, সানসেট ভিউ পয়েন্ট ও পাবলিক টয়লেটের সুব্যবস্থা রয়েছে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে ফেনীর জনপদ। তারমধ্যে ১৯ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া বন্যার ভয়াবহতা ছাড়িয়ে যায় অতীতের সব ইতিহাস। ভয়াবহ এ বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৯ জন। এছাড়াও বন্যায় সড়ক যোগাযোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মোটরযান, ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রায় প্রত্যেক খাতেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে শতশত কোটি টাকা। বন্যায় জেলায় সর্বোচ্চ ক্ষতি হয়েছিল শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে।
জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসন সূত্র ইতোপূর্বে জানায়, বন্যায় নিহতদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ, ৮ জন নারী ও ৪ জন শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ জনের পরিচয় মিলেছে। বাকি ৯ জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। নিহত ২৯ জনের মধ্যে ফেনী সদরের ৮ জন, দাগনভূঞায় ৩ জন, ফুলগাজীতে ৭ জন, সোনাগাজীতে ৬ জন, ছাগলনাইয়ায় ৩ জন এবং পরশুরামের ২ জন রয়েছেন।
১৯ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এ বন্যায় গ্রাম ছাড়িয়ে ডুবেছে জেলা শহরও। পানিবন্দি ছিলেন ১০ লাখের বেশি মানুষ। বন্যার্ত মানুষদের উদ্ধার ও সহায়তায় এগিয়ে আসেন সারা দেশের হাজারো মানুষ। এছাড়াও ভয়াবহ এ বন্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ডুবে দেশব্যাপী সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট।
বন্যায় জেলার অন্তত ১৭০০ পরিবার তাদের বসতঘরসহ সর্বস্ব হারিয়েছে। বন্যার পর থেকে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে দেখা গেছে।তবে, সরকারি পুনর্বাসনে ধীরগতির কারণে অনেকে এখনো মানবেতর দিনযাপন করছেন বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, বন্যায় ফেনীতে ৮ হাজার ৯৫টি কাঁচাঘর, ২৫০টি আধাপাকা ঘর সম্পূর্ণ ধ্বসে যায়। এতে আনুমানিক ক্ষতি হয়েছে ১৬৩ কোটি ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ৫৩ হাজার ৪৩৩টি কাঁচাঘর এবং ২ হাজার ৬৩২টি আধাপাকা ঘরের আংশিক ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ ৩৭০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। সবমিলিয়ে ৬৪ হাজার ৪১৫টি ঘরবাড়িতে মোট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৫৩৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, এবারের বন্যায় প্রাণিসম্পদ খাতে এখন পর্যন্ত ৩৯৬ কোটি ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৪০৩ টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপিত হয়। জেলার ছয় উপজেলায় ৩৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ৩৮ হাজার ৭৩১টি গরু, ৩৫৯টি মহিষ, ১৫ হাজার ৫৮৮টি ছাগল ও ৭৩৬টি ভেড়া মারা গেছে। এছাড়াও ২১ লাখ ৬৭ হাজার ৫১০টি মুরগি ও এক লাখ ৮৯ হাজার ৪৭২টি হাঁস মারা গেছে। মৃত পশুপাখির মোট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৩০৮ কোটি ৩৬ লাখ ৩৯ হাজার ৮৩০ টাকা। একই সূত্রে জানা যায়, জেলায় এক হাজার ৯৯২টি গবাদিপশুর খামারের ১৩ কোটি ১৭ লাখ ৩৯ হাজার ২০০ টাকা এবং এক হাজার ৬২৩টি হাঁস-মুরগির খামারের ১০ কোটি ৯৭ লাখ ৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ৩ হাজার ৯৫০ টন পশুপাখির দানাদার খাবার বিনষ্ট হয়েছে যার বাজারমূল্য ২৩ কোটি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এ বন্যায় মৎস্য খাতে রেণু, পোনা, বড় মাছ ও পুকুরের অবকাঠামো মিলে ২৮ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ইতোমধ্যে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বন্যায় জেলার ৩০ হাজার ৩৫২ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মোট ফসলি জমির ৭৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। তারমধ্যে ১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর আমন বীজতলা, ২৬ হাজার হেক্টর আমন, ১ হাজার ৮৫৪ হেক্টর আউশ, আবাদকৃত ৫২৫ হেক্টর শরৎকালীন সবজির পুরো অংশ, ৬৯ হেক্টর ফলবাগান, ৭ হেক্টর আদা, ১৬ হেক্টর হলুদ এবং ১৬ হেক্টর আখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আকস্মিক এ বন্যার জন্য স্থানীয় মানুষ প্রতিবেশী দেশ ভারতকে দায়ী করছেন। যদিও ভারত সীমান্তবর্তী ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও পরশুরামে বন্যা ছিল প্রতি বছরের নিয়মিত ঘটনা। এর সঙ্গে লড়াই করে এসব এলাকার মানুষেরা টিকে থাকলেও, এবারের বন্যা তাদের সব ধারণা পাল্টে দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারত সরকার কোনো ধরনের সতর্কবার্তা না দিয়েই ফেনীর পাশের রাজ্য ত্রিপুরার ধলাই জেলায় গোমতী নদীর ওপরে থাকা ডুম্বুর বাঁধের গেট খুলে দিয়েছে। ফলে অস্বাভাবিক এ বন্যা দেখা দিয়েছে।
বেসরকারি সংস্থা অক্সফাম প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, বন্যায় ফেনীর ৯০ শতাংশ মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে এমন পরিস্থিতি বাংলাদেশে আগে কখনো দেখা যায়নি। এ বন্যায় লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি ডুবে গেছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতি, দুর্গত জনগোষ্ঠীকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
বন্যার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ফেনীতে আসেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একাধিক উপদেষ্টা ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা। গত বছরের ২৪ আগস্ট ফেনীতে আসেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম।
তখন তিনি বলেন, বর্তমানে আগের মতো কোন ভাই বা কোন দল নেই, যেখানে তার সড়ক অথবা বাড়ি আগে কাজ করে দিতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রয়োজন বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দুর্গতদের জন্য কাজ করতে হবে। ২৭ আগস্ট বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
২১ সেপ্টেম্বর বন্যার ক্ষতি পরিদর্শনে ফেনী আসেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। এসময় উপদেষ্টা বলেন, এখানে যেহেতু প্রতিবছর বন্যা হয় সেজন্য স্থায়ী একটি সমাধান প্রয়োজন। ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে বাঁধগুলো কিভাবে সংস্কার করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। এখন আমরা পুনর্বাসন কার্যক্রমে জোর দিচ্ছি।
তার পরেরদিন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফেনীর একাধিক এলাকা পরিদর্শনে আসেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। পরশুরামের বল্লামুখা বাঁধ পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের কাছে জানতে এসেছি তারা কী সমাধান চান। স্থানীয় জনসাধারণ বলেছে প্রতিবেশী দেশ বাঁধ কেটে দেওয়ায় তারা বন্যায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এজন্য আমাদের মানুষের কথা, দুর্ভোগ ও প্রত্যাশা বুঝতে, সেই অনুযায়ী উজানের দেশের সঙ্গে কথা বলতেই এখানে আসা।
এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ২০ হাজার বান্ডেল টিন ও নগদ ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল। বিপরীতে ৪০০ বান্ডেল টিন ও নগদ ১২ লাখ টাকা বরাদ্ধ এসেছে। যা ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বন্যায় সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ৭১৮টি ঘরের মধ্য থেকে পাইলট প্রোগ্রামের আওতায় সেনাবাহিনীর মাধ্যমে জেলায় ১১০টি পাকাঘর করে দেওয়া হচ্ছে। তারমধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ৩৫টি, ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় ২০টি করে, দাগনভূঞায় ১০টি ও সোনাগাজী উপজেলায় ৫টি ঘর করা হবে। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে ঘরগুলোর কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় মসজিদের ডিজিটাল বোর্ডে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু BD 71 Hacker’ লেখা প্রদর্শিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) মাগরিবের নামাজের পর উপজেলার ইউরেকা কমপ্লেক্স জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।
মুসল্লিরা জানান, মসজিদের ডিজিটাল বোর্ডে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু BD 71 Hacker’ লেখা দেখা যায়। বিষয়টি দেখে তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
মসজিদের ইমাম বলেন, মাগরিবের নামাজের পর প্রথমবার এ লেখাটি নজরে আসে। কেউ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে এটি করেছে। আমরা বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ঠিক করার চেষ্টা করেছি। এর আগে বোর্ডে শুধু মসজিদের নামই প্রদর্শিত হতো।
এ বিষয়ে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আরেফিন বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি এবং তাৎক্ষণিকভাবে লোক পাঠাচ্ছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখছি।
স্থানীয় বাসিন্দারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
ফেনী সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ইফতেখার মুনতাসির অধীর (২০) নামে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে তাকে ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ওয়াকিল আহমেদ শিহাব হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহজনক আসামী হিসেবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পরীক্ষা দিতে আসলে এ ঘটনা ঘটে। বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেফতার মুনতাসির ফেনী সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ডিপার্টমেন্ট ৪র্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তিনি ফেনী সদর উপজেলার কাজীরবাগ ইউনিয়নের গিল্লাবাড়িয়া আড়িধন ভূঁইয়া বাড়ির মৃত ইয়াসিনের ছেলে।
জানা গেছে, ইফতেখার মুনতাসির অধীর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। গত ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার সময় তার উপস্থিতির একটি সিসিটিভি ফুটেজের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার পরীক্ষা দিতে আসলে শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ সময় তিনি ৪ আগস্ট মহিপালে হামলার ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
ফেনী মডেল থানা উপপরিদর্শক (এসআই) মোতাহার হোসেন বলেন, আন্দোলনে ওয়াকিল আহমেদ শিহাব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় সন্দেহজনক আসামি হিসেবে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ফেনীতে অবৈধ ফুটপাত দখল ও যত্রতত্র পার্কিং বন্ধে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা ট্রাফিক বিভাগ। এতে জরিমানা, সতর্কীকরণসহ বেশকিছু গাড়ি ট্রাফিক পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। অভিযানে জেলাপ্রশাসন ও ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক ১৮টি মামলায় ৪৮হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের ট্রাংক রোডে জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর হোসাইনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জেলাপ্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলাপ্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে সর্বমোট ৪ মামলায় ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরমধ্যে সবগুলো সড়ক পরিবহন আইনের মামলায় জরিমানা করা হয়।
জেলা ট্রাফিক বিভাগ জানায়, ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃক ১৪টি মামলায় ৪০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা ট্রাফিক পরিদর্শক ( প্রশাসন) এস এম শওকত হোসেন বলেন, শহরকে যানজট মুক্ত করতে এবং অবৈধ ফুটপাত দখল ও যত্রতত্র পার্কিং বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জেলাপ্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক সড়ক পরিবহন আইনে মামলা হয়েছে এবং ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃক ১৪টি মামলায় ৪০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গাড়িগুলো ট্রাফিক পুলিশের হেফাজতে রয়েছে, মামলা ছাড়িয়ে গাড়ি নিয়ে যাবে।