গাইবান্ধা পৌরসভার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও পাঁচদফা দাবিতে ব্যাটারি চালিত সকল ধরনের যানবাহন বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করছে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ, গাইবান্ধা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে বেকায়দায় পড়েছেন পরিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে গাইবান্ধা পৌরসভা এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করছে গাইবান্ধা রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ। এসময় তারা গাইবান্ধা পৌরসভায় ইজিবাইক, রিকশা, মিশুক চলাচলে পৌরসভার ‘অবাস্তব ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত’ অবিলম্বে বাতিলসহ পাঁচদফা দাবি তুলে ধরে বুধবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা কর্মবিরতির লিফলেট বিতরণ করেন। এসময় পৌরসভার ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে বা অটোচালক শ্রমিকদের দাবি না মানা হলে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিযারিও দেওয়া হয়।
এর আগে, গাইবান্ধা শহরকে যানজট মুক্ত করতে গাইবান্ধা পৌরসভা এলাকায় সপ্তাহে তিনদিন ব্যাটারি চালিত সবুজ গাড়ি এবং সপ্তাহে তিনদিন হলুদ গাড়ি চলাচলের সিদ্ধান্ত দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এর পরেই চালকরা পৌরসভার এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক দাবি বলে পাঁচদফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো, গাইবান্ধা পৌরসভায় ইজিবাইক, রিকশা, মিশুক চলাচলে পৌরসভার অবাস্তব ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল, ব্যাটারি চালিত যানবাহনের নিবন্ধন, লাইসেন্স ও রুট পারমিট বি আর টি এ কর্তৃক প্রদান করা ও প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা, গাইবান্ধা শহরের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে বাইপাস সড়ক নির্মাণ কর। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ইজিবাইক স্ট্যান্ড নির্মাণ কর এবং পৌর ফি বার্ষিক ১০০০ টাকা নির্ধারণ করা, গাইবান্ধা পৌরসভার টোকেন ও প্লেট বাণিজ্য, জুলুম হয়রানি বন্ধ কর। পৌরসভায় চলাচলকারী চালকদের স্বল্পমূল্যে রেশন চালু করা এবং প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কে ইজিবাইকসহ স্বল্পগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেন/সার্ভিস রোড নির্মাণ করা।
বুধবার সকাল ১১ টার দিকে গাইবান্ধা শহর ঘুরে দেখা যায়, জরুরি কাজে বের হওয়া সাধারণ মানুষ হেঁটেই চলেছেন গন্তব্যে পৌঁছাতে। বাড়তি ব্যাগ বহনে অনেককেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থী এবং অনার্স দ্বিতীয়ত বর্ষের পরিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পড়তে হয়েছে। কোনো যানবাহনে না পেয়ে তারা হেঁটেই পরিক্ষা কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন। যে সব আটো বা রিকশা আন্দোলনকারীদের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে রিকশা-ভ্যান বের করেছেন তাদের গাড়ির চাকার হাওয়া বের করা দেওয়া হচ্ছে। উপজেলার রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা শহরে যাওয়ার জন্য বের হয়েছি। এসে দেখি কোনো যানবাহন নাই। এজন্য জরুরি কাজ সারতে হেঁটেই রওনা করেছি।
গাইবান্ধা অটো-মালিক চালক সমন্বয় সমিতির সহ সভাপতি তিতু বলেন, আমরা প্রতিদিনই অটো চালাতে চাই। তিনদিন বন্ধ তিনদিন চালু আমরা পৌরসভার এই সিদ্ধান্ত মানিনা। গাইবান্ধা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা আলম মিয়া বলেন, আমাদের এই সকল দাবি মানা না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দেব। এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পৌরসভার প্রশাসক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, আন্দোলন করছে তাদের সংগঠনের একটি অংশ। পৌরসভার নির্দিষ্ট আইন আছে। সেই আইনের গতিতেই পৌরসভা চলবে।