সিলেটে নাগরিক অধিকার ও বিচার নেটওয়ার্ক এর যাত্রা শুরু
সিলেটে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হল সিটিজেন রাইটস অ্যান্ড জাস্টিস নেটওয়ার্ক (সিআরজেএন) এর। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সিলেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ (কেমুসাস) সম্মেলন কক্ষে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে মূল বক্তব্য রেখেছেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পিএইচডি গবেষক এবং ডায়াসপোরা ফর জাস্টিস-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি খন্দকার আবদুর রকিব। সেমিনারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল “রাষ্ট্রীয় সহিংসতা এবং এনফোর্সড ডিসপিয়ারেন্স: দ্য লিগ্যাল স্ট্রাগল”।
এ সময় আবদুর রকিব বাংলাদেশে উদ্বেগজনক রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম এবং বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ডের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাস্তবায়িত 'গুম' শব্দটি বাংলাদেশের জনগণের কাছে বিজাতীয় ছিল, কিন্তু স্বৈরাচারী শাসন বিরোধী দলকে দমন করার হাতিয়ার হিসেবে এটিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ সক্রিয়ভাবে এই অপরাধে অংশগ্রহণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, এই কর্মকাণ্ডগুলো পরিকল্পিত ছিল, কাদের অপহরণ করা হবে বা বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ডের শিকার হবেন তা আগে থেকেই নির্ধারণ করা হতো।
এছাড়া সেমিনারে তিনি সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম এবং রংপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে রাষ্ট্রের নেতৃত্বে সংগঠিত হওয়া নৃশংসতার তদন্ত করতে গিয়ে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।
সিআরজেএন-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা আজহার উদ্দিন খানের পরিচালনায় সেমিনারে ফারহাত শফি চৌধুরী, অ্যাডভোকেট রফিকুল হাসান লোদী, রেজাউল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান এবং অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ সহ অন্যান্য সহ-প্রতিষ্ঠাতারাও বক্তৃতাও দেন। এছাড়া জুলাই বিপ্লবের অগ্রদূত নাঈম হোসেনও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, সিটিজেন রাইটস অ্যান্ড জাস্টিস নেটওয়ার্ক (সিআরজেএন) গণতন্ত্রের প্রচার, মানবাধিকার রক্ষা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি নাগরিক উদ্যোগ। সিআরজেএন-এর সূচনা শুধুমাত্র সিলেটে নয়, সারা দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে বক্তারা আশা করেন।
এর প্রাথমিক উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. রাষ্ট্রীয় সহিংসতা, বলপূর্বক গুম এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা চিহ্নিত করা এবং মোকাবিলা করা।
২. জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং নাগরিকদের তাদের অধিকার সম্পর্কে জ্ঞান দিয়ে ক্ষমতায়ন করা।
৩. গবেষণা পরিচালনা, ডকুমেন্টেশন, এবং আইনি সহায়তা প্রদান।
৪. মানবিক ও উদারনৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটি সমাজ গঠন করা।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সিআরজেএন তার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সেমিনার, কর্মশালা এবং গবেষণা উদ্যোগের আয়োজন করার পরিকল্পনা করেছে। নেটওয়ার্কটি আইনি সহায়তা প্রদান এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে নিপীড়িতদের কণ্ঠস্বরকে প্রসারিত করতেও চায়।