সাংবাদিকদের তথ্য দিতে পরিবেশ কর্মকর্তার গড়িমসি
তথ্য অধিকার আইনের ফরমে আবেদন ছাড়া ইটভাটা সম্পর্কিত কোন তথ্য সাংবাদিকদেরকে দিতে অনিহা প্রকাশ করেন মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ ইউসুফ আলী। আবার তথ্য অধিকার ফরমে আবেদন করেও সম্পূর্ণ তথ্য পাচ্ছে না জেলার সংবাদকর্মীরা। এতে করে বৈধ আর অবৈধ ইটভাটা নিয়ে প্রতিবেদন করাতে বেগ পেতে হচ্ছে স্থানীয় সংবাদ কর্মীদেরকে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে আলাপ হলে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ইটভাটা সম্পর্কিত কোন তথ্য না দিয়ে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে তথ্য নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মানিকগঞ্জ জেলায় চলতি মৌসুমে মোট ১৩০টি অথবা আরও বেশি কিছু ইটভাটা রয়েছে। যার মধ্যে বৈধ ইটভাটার তালিকায় রয়েছে ১১৫টি। আর অবৈধ ইটভাটার তালিকায় রয়েছে ১৫টি ইটভাটা। তবে বৈধ আর অবৈধ ইটভাটার পৃথক কোন তালিকা না থাকায় স্পষ্ট করে কোন প্রতিবেদনও করা যাচ্ছে না।
সরেজমিনে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গত বছর বা তার আগের সময়ে প্রশাসন কর্তৃক অভিযানে উচ্ছেদকৃত ভাটাগুলোও চলছে দেদারসে। এসব ভাটার অনুমোদন হয়েছে কিনা তাও জানার কোন উপায় মিলছে না। তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেও সুস্পষ্টভাবে কোন তথ্য না পাওয়ায় প্রতিবেদনে তৈরিতে বেগ পেতে হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলার স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী জাহিদুল হক চন্দন বলেন, জেলায় চলতি মৌসুমে বৈধ আর অবৈধ ইটভাটা নিয়ে তথ্যের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করা হলে তথ্য অধিকারে আবেদন করতে বলেন কর্মকর্তারা। পরে আবেদন করে আংশিক তথ্য পাওয়া যায়। বৈধ আর অবৈধ ইটভাটা সম্পর্কে স্পষ্ট কোন তথ্য দেয়নি পরিবেশ অধিদপ্তর। যে কারণে ইটভাটা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরিতে সংশয় হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভাটা মালিক বলেন, একটি ইটভাটা তৈরিতে কোটি টাকার উপরে খরচ হয়। বিভিন্ন দপ্তরে টাকা দিয়েও ঠিক মতো কাগজপত্র পাওয়া যায় না। আবার অনেকেই খুঁটির জোরে পুরোপুরি অবৈধ ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছে দেদারসে। অবৈধ ভাটাগুলো কিভাবে চলে তা বুঝে আসে না। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ম্যানেজ ছাড়া অবৈধ ভাটাগুলো চালানো কোনভাবেই সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মানিকগঞ্জ জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক মোঃ আকরাম হোসেন বলেন, সাংবাদিকরেদকে তথ্য দিতে গড়িমসি করার কোন সুযোগ নেই। সাংবাদিকদেরকে সঠিক তথ্য প্রদাণ করলে তারা সঠিক নিউজ প্রচার ও প্রকাশ করতে পারবে। কাজেই সব কর্মকর্তার উচিত হবে সাংবাদিকদেরকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করা।
এদিকে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, বৈধ আর অবৈধ ইটভাটার তালিকা আমাদের নিকটেও নেই। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে যেসব ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলে আমরা সেই সমস্ত ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে যথাযথ আইন ব্যবস্থা নেই। তবে সাংবাদিকদেরকে অবশ্যই সব তথ্য দেওয়া উচিত। বিষয়টি নিয়ে তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের সঙ্গে আলাপ করবেন বলেও জানান।