‘অবহেলিত এলাকার যোগাযোগ উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাউজুল কবির খান বলেছেন, উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে থাকা এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘সড়কে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা বলেছি, যেসব জায়গায় অবস্থা খারাপ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই, সেসব জায়গায় বিশেষ অগ্রাধিকার দিন। আমাদের লক্ষ্য উন্নয়নকে সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। সড়ক নির্মাণ ব্যয়বহুল। তাই যেখানে যোগাযোগের অভাব স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করছে, সেসব এলাকাকে আগে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। অবহেলিত অঞ্চলে উন্নয়ন কার্যক্রম জোরদার করাই সরকারের অঙ্গীকার।’

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকালে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া গুপ্তছড়া ফেরিঘাট পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী ও বিআইডব্লিউটিএর প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাউজুল কবির খান বলেছেন, সন্দ্বীপ একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। মানুষ চট্টগ্রাম থেকে ওখানে যাওয়া একটা শাস্তির মত। মানুষকে যদি শাস্তি দেয় তাহলে বলে- তুমি সন্দ্বীপ যাও। মহিলাদের কোমর পানিতে নেমে মাথার ওপর সব জিনিস নিয়ে যেতে হয়। এটি ছাড়াও ঘাটের নানা অপব্যবস্থাপনা; ভ্যান ভাড়া, রিকশা ভাড়া এটা-ওটা। সন্দীপের মানুষকে এক প্রকার জিম্মি করে রাখা হয়েছে। মানুষ তো বাড়িতে যাওয়া অপরাধ না। আমার বাড়ি সন্দ্বীপ আপনারা জানেন। তবে সেটি এখানে মূল বিষয় না। সন্দীপ যাওয়ার মত যেসব কারণ আছে আমার কোনটাই নেই। আমার বাবা-মা মারা গেছে। আর মামা-খালা অন্যান্যদের মধ্যে কেউ আছেন, তারা ওখানে থাকেন না। এটি ঠিক সন্দীপের ইস্যু না, এটি হচ্ছে উন্নয়নের ইস্যু। উন্নয়ন যা কিছু হয়েছে ঢাকায়, দেশের বড় বড় শহরগুলোতে হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ উন্নয়নের কোন সুফল পায়নি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ হচ্ছে, যেসব জায়গায় উন্নয়ন ছোঁয়া পৌঁছেনি সেসব জায়গায় পৌঁছাতে হবে। এজন্য সন্দীপের বিষয়টা আমরা একটা টেস্ট কেস হিসেবে দেখেছি। এরপর হয়তো আমরা অন্যান্য বিচ্ছিন্ন জেলায় সড়ক যোগাযোগের ব্যবস্থা করব। কিন্তু একটা জিনিস মনে রাখতে হবে সড়ক নির্মাণ খুব ব্যয়বহুল। এইজন্য সেখানে যদি অর্থনৈতিক কোন কর্মকান্ড না হয় তাহলে সড়কের বিনিয়োগ ঠিক হবে।

উন্নয়নকে মানুষের দোরগোড়াই পৌঁছে দিতে চাই উল্লেখ করে সড়ক উপদেষ্টা বলেন, ভোলাতে আমরা একটি ব্রিজের ব্যাপারে চিন্তা করছি কেন কারণ ওখানে গ্যাস পাওয়া গেছে। এজন্য সেখানে মানুষের যাতায়াতের প্রয়োজন বাড়ছে এখানে শিল্প হবে। এখন আপনি চিতই পিঠা খেতে সন্দীপ যাবেন সেটার জন্য তো সরকার ১০-১৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করবে না। করলে অন্যায় হবে। সরকারের অর্থ সীমিত। এটি শুধু সন্দীপের মানুষের জন্য না সরকারের যেখানে প্রয়োজন আছে সেখানে উন্নয়ন হবে। উন্নয়নকে মানুয়ের দোরগোড়াই পৌঁছে দিতে চাই। সেজন্য যেসব জায়গায় উন্নয়ন পৌঁছে নিয়ে, মানুষ অবহেলিত। এজন্য সড়কে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা বলেছি, যেসব জায়গায় অবস্থা খারাপ, যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই সেসব জায়গায় আপনারা অগ্রাধিকার দেন। সেজন্য এ সরকারের একটি কথা যে সব জায়গায় উন্নয়ন পৌঁছেনি, সে সব জায়গায় পৌঁছে দেয়া।

এসময় বিগ্রেডিয়ার শামস বলেন, আমরা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এপ্রোচ রোডের যে কাজ সেটি করছি। আমরা টার্গেট নিয়েছি আগামী মার্চের ১০ তারিখের মধ্যে সেটি অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হবে। বাকি যে কাজ সেটা আমরা মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে করব।

বিআইডব্লিউটিএ’ প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) রকিবুল ইসলাম তালুকদার বলেন, আমরা সম্মিলিতভাবে এটি বাস্তবায়ন করছি। আমাদের একই পরিকল্পনা। আগামী মার্চের ১০ তারিখের মধ্যে এই নৌরুটটি সামগ্রিকভাবে চালু করবো ইনশাল্লাহ।

জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, এই কাজটিতে কেউ যদি জায়গা জমি নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে আমাদের সঙ্গে অথবা লোকাল ইউএনও সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। অবশ্যই ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করব। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে প্রকল্প নেয়া হয়েছে সেটি আগামী ১০ মাস উদ্বোধন হবে ইনশাল্লাহ।