তারেক রহমানের পক্ষে দেয়া আংটি পরিয়ে শহীদ রাকিবের কন্যাকে বরণ

  • উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিবের স্ত্রী সাদিয়া আক্তারে কোলজুড়ে এসেছে নতুন অতিথি, তার নাম রাখা হয়েছে সাবরিনা বিনতে সিদ্দিকী। শহীদ কন্যার পৃথিবীতে আগমণের আনন্দ উদযাপন করতে গ্রাম ও হাট বাজারে মিষ্টি বিতরণ করেছেন ছাত্রদল ও যুবদল নেতা-কর্মীরা।

সেই সাথে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সোনার আংটি উপহার দিয়ে শহীদ কন্যা সাবরিনাকে বরণ করেছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন পাপ্পুর ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে ঈশ্বরগঞ্জের তারুন্দিয়া ইউনিয়নের পুনাইল গ্রামে শহীদ রাকিবের শ্বশুড় বাড়ি গিয়ে তার স্ত্রী ও কন্যা সন্তানের সার্বিক খোঁজ খবর নেন। পরে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেয়া উপহারের সোনার আংটি পরিয়ে দেন শহীদ রাকিবের কন্যা সাবরিনার হাতে। পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হাতেও তারেক রহমানের পক্ষ থেকে উপহার হিসাবে নতুন কাপড় তুলে দেন।

এর আগে শহীদ রাকিবের কন্যা সাবরিনার পৃথিবীতে আগমণের আনন্দ উদযাপন মঙ্গলবার বিকালে ঈশ্বরগঞ্জের তারুন্দিয়া ইউনিয়নের ভারতী বাজার ও পুনাইল গ্রামে যুবদল নেতা পাপ্পু ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিষ্টি বিতরণ করেন।

বিজ্ঞাপন

গত ১৯ জানুয়ারি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে নিহত রাকিবের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার। হাসপাতাল থেকে ছারপত্র নেয়ার পর সাদিয়া তার মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জের পুনাইল গ্রামে অবস্থান করছেন।

জাহাঙ্গীর হোসেন পাপ্পু বলেন, ‘গত বছরের ২০ জুলাই কলতাপাড়া বাজারে কারফিউ ভঙ্গ করে আমরা ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। রাকিব তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে আমাদের সাথে কলতাপাড়া বাজারে আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। গত ১৯ জানুয়ারি রাকিবের স্ত্রী কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। মিষ্টি বিতরণের পাশাপাশি আমরা আমাদের নেতা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সোনার আংটি দিয়ে শহীদ রাকিবের কন্যাকে বরণ করেছি,।

উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আবিদ হাসান রাহাত বলেন, রাকিব তার মেয়ের মুখ দেখার আগেই দেশের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন। মেয়েও কোনদিন বাবার মুখ দেখতে পারবে না। আমরা মিষ্টি বিতরণ করে রাকিবের পরিবারের সাথে আনন্দটা ভাগাভাগি করার চেষ্টা করেছি। রাকিবের স্ত্রী সন্তান নিয়ে তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাদের দায়িত্ব যেন সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হয় এটাই আমাদের দাবি।

শহীদ নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিবের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘আজকে পাপ্পু ভাই সোনার আংটিসহ নানা উপহার নিয়ে মেয়েকে দেখতে এসেছেন এতে আমি আনন্দিত। কিন্ত স্বামীর অবর্তমানে এই মেয়েকে কিভাবে লালন-পালন করে বড় করবো সেটাই দুশ্চিন্তার বিষয়। আমি আমার স্বামীর হত্যার বিচার ও মেয়ের সুন্দর ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য সবার কাছে দাবি জানাচ্ছি’।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাজ্জাদুল হাসান বলেন, ‘আমরা উপহার নিয়ে শহীদ রাকিবের স্ত্রী ও সন্তানকে দেখে এসেছি। আমরা তাদের সার্বিক খোঁজ খবর রাখছি। শহীদ রাকিবের স্ত্রী ও সন্তান যেন সরকারের পক্ষ থেকে সকল সুযোগ-সুবিধা পায়, আমরা সেই বিষয়ে উদ্যোগ নেবো’।

প্রসঙ্গত, নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিব ময়মনসিংহের গৌরীপুরের রামগেপালপুর ইউনিয়নের দামগাও গ্রামের আব্দুল হালিম শেখের ছেলে। গত বছরের ১২ জানুয়ারি রাকিব বিয়ে করেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের পুনাইল গ্রামের সাহাব উদ্দিনের মেয়ে সাদিয়া আক্তারকে। গত ২০ জুলাই অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জন্য ওষুধ আনতে গিয়ে গৌরীপুরের কলতাপাড়া বাজারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হন রাকিব। সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। পরে মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিজ বাড়ি দামগাও গ্রামে এনে দাফন করা হয়।