রাজধানীর মিরপুর পল্লবীতে মঞ্জুরুল ইসলাম বাবু ওরফে ব্লেড বাবু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রুজুকৃত মামলার এজাহারনামীয় প্রধান দুই আসামি রাজন (৩৫) এবং রনি (২৬) কে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির ডিবি-মিরপুর বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- রাজন ওরফে পিচ্চি রাজন (৩৫) ও রনি (৩০)। পিতা নুর ইসলাম। তারা আপন দুই ভাই।
গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেখানো মতে স্বপ্ননগর নতুন রোডের একটি চায়ের দোকানের পাশ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩০) জানুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মিজানুর রহমান এ তথ্য জানান।
ডিসি মিজানুর রহমান জানান, গত ২০ জানুয়ারি বিকেলে পল্লবীর বঙ্গবন্ধু কলেজের সামনে আধিপত্য বিস্তার এবং চুরি ও ছিনতাইয়ের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সন্ত্রাসী রাজন গ্রুপের সদস্যদের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত ও মারধরে মঞ্জুরুল ইসলাম বাবু ওরফে ব্লেড বাবু গুরুতর আহত হয়। পরবর্তীতে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে পরে তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার মিম বাদী হয়ে ২১ জানুয়ারি পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ হত্যাকারীদের গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করে। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়। হত্যায় জড়িত মো. মুরাদ (২৭), ইরফান হোসেন তুফান (১৯), রাব্বি ওরফে কুত্তা রাব্বি (১৮) ও সাজ্জাদসহ মোট ছয় জনকে পল্লবীসহ বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিসি মিজানুর রহমান বলেন, নিহত বাবুকে সরাসরি ছুড়িকাঘাতে জড়িত রনি ও রাজনকে গ্রেফতারে কাজ চলছিলো। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা দুজনেই বাবু হত্যাকান্ডে দায়েরকৃত মামলায় ৩ ও ৪ নম্বর আসামি। হত্যায় জড়িত বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহৃত আছে।
মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা টিপু হত্যা জড়িত সুমন শিকদার ওরফে মুসাকে ওমান থেকে গ্রেফতার কার হয়েছিলো। বাবু হত্যায়ও তার নাম শোনা যাচ্ছে। মুসার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুসা এই হত্যাকাণ্ডের ১ নম্বর আসামি। আমাদের তদন্তে যদি কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে কোন ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।
বাবু হত্যায় জড়িত অন্যতম দুই আমামি গ্রেফতারে নেতৃত্ব দিয়েছেন ডিবি মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) সোনাহর আলী।
এডিসি সোনাহর বলেন, হত্যায় জড়িত দুই ভাই ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলো। তারা গ্রেফতার এড়াতে পদ্মার বিভিন্ন চরে আত্মগোপনে ছিল। পরবর্তীতে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী এলাকায় দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে থাকে। সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে ঢাকায় আনা হয়। গ্রেফতারকৃত রাজন ও রনির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।