অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হবেন না: তারেক রহমান

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখছেন তারেক রহমান

ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখছেন তারেক রহমান

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, প্রতিটি নেতাকর্মীর মধ্যে বিজয়ের আত্মবিশ্বাস থাকা ভালো, তবে অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হবেন না। জনগণ পছন্দ করেন না এমন কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। জনগণের বিশ্বাস ভালোবাসা অর্জন করুন।

বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এই কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, একটি প্রবাদ আছে অতীত নিয়ে পড়ে থাকলে তোমার এক চোখ অন্ধ।

তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করে দিতে স্বৈরাচারের দোসরদের ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। 

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ ৩ মাস পূর্ণ হতে যাচ্ছে। একটি সরকারের সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা মূল্যায়নের জন্য তিন মাস যথেষ্ট সময় নয়, কিন্তু মনে রাখা দরকার বাজারে দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে প্রতিদিন জনগণকে হার মানতে হয়। তিন মাস সময় তাদের (জনগণ) কাছে মনে হতে পারে তিন বছরের সমান। বিশেষ করে কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর ও স্বল্প আয়ের মানুষের প্রতিদিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করতে কঠোর হাতে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি। দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনতে ব্যর্থ হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে জনগণের আদালত এবং রাষ্ট্রীয় আদালত তথা বিচার বিভাগ শক্তিশালী। স্বাধীন থাকলে ফ্যাসিবাদ কখনোই জনগণের স্বাধীনতা, ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে সক্ষম হবে না। জনগণের আদালত কিন্তু মব জাস্টিজ নয়, এর অর্থ কোনো ব্যক্তি কিংবা রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাবান কিংবা ক্ষমতাহীন করার চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের হাতে ন্যস্ত থাকা। রাষ্ট্রে রাজনীতিক বন্দোবস্ত এমন হওয়া প্রয়োজন যেখানে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ, যে পর্যায়ের প্রতিনিধি হোক না কেন, নাগরিকদের প্রত্যক্ষ ছাড়া কোনোভাবেই একজন ব্যক্তি বা রাজনৈতিক কর্মী জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে সক্ষম হবে না। এমনকি রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে নিশিরাতের আয়োজন কিংবা ডামি প্রার্থী হিসেবে জনপ্রতিনিধি হবার পথ স্বাভাবিকভাবে রুদ্ধ হয়ে যাবে। 

তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক কর্মী জনপ্রতিনিধি হতে চাইলে, জনগণের বিশ্বাস এবং ভালোবাসা অর্জন করে ভোটের জন্য জনগণের কাছে যেতে হবে। প্রার্থীকে জনগণের আদালতে দ্বারস্থ হতে হবে। বিজয়ের জন্য জনগণের আদালতের রায় পেতে হবে। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, রাষ্ট্রে জনগণের আদালত ও রাষ্ট্রীয় আদালত এই দুটি কার্যক্রম শক্তিশালী করা গেলে রাষ্ট্রীয় ও রাজনীতির উল্লেখযোগ্য সংষ্কার নিশ্চিত করা যাবে। জনগণের ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করা গেলে কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিকে নিষিদ্ধ কিংবা প্রষিদ্ধ করার মতো অপ্রিয় কাজের দ্বায় রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে না। জনগণ নিজেরাই ভোটের অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতি, লুটেরা, টাকা পাচারকারী কিংবা রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে থাকা মাফিয়া চক্রকে প্রত্যাখান করবে। যেকোনো ফৌজদারি অপরাধের বিচার হতে হবে রাষ্ট্রীয় আদালতে কিন্তু কোনো ব্যক্তি বা দলের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারণেরভার রাজনীতির মাঠে অর্থাৎ জনগণের আদালতে করার সংস্কৃতি চালু করা গেলে নিঃসন্দেহেএকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সংস্কার হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সংস্কার কার্যক্রমের পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু করেছে। জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন তথা জনগণের লুণ্ঠিত ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের যাত্রাপথের এটি একটি শুরু মাত্র। সংস্কার কার্যক্রম এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের ধারাবাহিকতা যথা নিয়মে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হবে। 

আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপত্বিতে প্রধান অতিথি ছিলেন- দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুর মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মেজর অব: হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ ঢাকা মহানগর বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।