নির্বাচনের কথা শুনলেই অনেক উপদেষ্টার মুখ কালো হয়ে যায়: মেজর হাফিজ

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

আগামী নির্বাচনের কথা বললেই অনেক উপদেষ্টার মুখটা কালো হয়ে যায় মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা যখন নির্বাচনের কথা বলি তখন যেনো তারা অসন্তুষ্ট হয়ে যায়। আজকে জনগণকে এতো কেন ভয়? জনগণ ভোট দিবে এটা আপনাদের আতঙ্কের কারন কেন হয়েছে? এইসব এলিটজম ছাড়েন। আমরা চাই জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এই রাষ্ট্র পরিচালিত হবে। সংস্কারের নামে আর অধিক সময় নিবেন না। হাসিনা পলায়ন করেছে, এখন যে সংস্কার বাকি আছে সেগুলো জনগণ করবে। এখন শুধু অপরাধীদের শাস্তি বিধান করুন। আহত নিহতদের পরিবারের প্রতি লক্ষ্য রাখুন। 

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল কর্তৃক '৭১ এর মুক্তিযুদ্ধই জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অহংকার' শীর্ষক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

কিংস পার্টির ভবিষ্যৎ ভালো হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি এই দেশে একটি কিংস পার্টি গঠন হতে যাচ্ছে। কিংস পার্টির ভবিষ্যৎ আগেও ভালো ছিলো না, ভবিষ্যতেও ভালো হবে না। জুলাই আগস্টে যে ছাত্র নেতারা আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন তাদের সেই সংগ্রামের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। তাদেরকে আবারও অভিনন্দন জানাই। কিন্তু আগামী দিনে আপনারা কোনো কিংস পার্টি করার চেষ্টা করবেন না।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকে গণঅভ্যূত্থানকে স্বাধীনতার উপরে স্থান দেয়ার একটি প্রচেষ্টা করছে একটি মহল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সাথে স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে কোনও কিছুরই তুলনা করতে পারিনা আমরা। সবার উপরে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, চিরকাল এইভাবেই থাকবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধকে কাউকে কলঙ্কিত করতে দিবো না। মুক্তিযুদ্ধ বিভক্ত হবে এটাও আমরা আশা করি না।

বিজ্ঞাপন

বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, কিছুদিন আগে একটি বক্তব্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এদেশে দেশপ্রেমিক শুধুমাত্র সামরিক বাহিনী এবং জামায়াতে ইসলামী। এই বক্তব্যে আমরা আহত হয়েছি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গড়ে ওঠা একটি বাহিনী। জনগণের বাহিনী হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশকে স্বাধীন করেছে। এই বাহিনী গড়ে তুলেছে মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে তৎকালীন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ইপিআর এর সৈনিক-অফিসাররা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কারো সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নাই তারা দেশপ্রেমিক না দেশপ্রেমিক না। তাদের একাত্তরের ভূমিকা, বর্তমান ভূমিকা প্রত্যেকটি ভূমিকা সাক্ষ্য দেয় তারা সবসময় জনগণের পাশে ছিলো এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তবে জামায়াতে ইসলামীর বক্তব্যে আমি অবাক হয়েছি। আমরা ভেবেছিলাম এখন একটা সুযোগ এসেছে, এই সুযোগে তারা একাত্তরের ভূমিকা নিয়ে জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। সেটি না করে তারা একাত্তরে তাদের ভূমিকাকে জাস্টিফাই করছে এবং দেশপ্রেমিক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

নির্বাচন নিয়ে মেজর হাফিজ বলেন, আগামী নির্বাচনের কথা বললেই অনেক উপদেষ্টার মুখটা কালো হয়ে যায়। আমরা যখন নির্বাচনের কথা বলি তখন যেনো তারা অসন্তুষ্ট হয়ে যায়। আজকে জনগণকে এতো কেন ভয়? জনগণ ভোট দিবে এটা আপনাদের আতঙ্কের কারন কেন হয়েছে? এইসব এলিটজম ছাড়েন। আমরা চাই জনগণের মতামতের ভিত্তিতে এই রাষ্ট্র পরিচালিত হবে। সংস্কারের নামে আর অধিক সময় নিবেন না। হাসিনা পলায়ন করেছে, এখন যে সংস্কার বাকি আছে সেগুলো জনগণ করবে। এখন শুধু অপরাধীদের শাস্তি বিধান করুন। আহত নিহতদের পরিবারের প্রতি লক্ষ্য রাখুন। 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আব্দুস সালাম প্রমুখ।