ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে এমন কোনো প্রমাণ আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) কাছে নেই বলে জানিয়েছেন আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে চলমান জলবায়ু সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন। ইরানের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা ইরনার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন কপ-২৯ এর ফাঁকে আইএইএ প্রধান গ্রসি স্পষ্ট করে বলেন, তেহরান সফরের সময় ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘কথিত নিরাপত্তা ইস্যুগুলো’ সমাধানের বিষয়ে তিনি আশাবাদী।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইএইএ প্রধান বলেন, এই যে ফাঁক, এই যে আত্মবিশ্বাসের অভাব, এটা এমন একটি ভবিষ্যতের ইঙ্গিত, যেখানে (ইরানের) পারমাণবিক স্থাপনাগুলো (হামলার) লক্ষ্যবস্তু হয়ে দাঁড়াতে পারে। এটা আমরা হতে দিতে পারি না। আমাদের এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা নিয়ে উদ্বিগ্ন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইএইএ-এর কাছে এমন কোনো প্রমাণ নেই যা এই দাবিকে সমর্থন করে।
এর আগে, মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেন, তার ইরান ইরান সফরের উদ্দেশ্য দেশটির পরমাণু কর্মসূচি ইস্যুতে বাকি থাকা বিষয়গুলো নিয়ে কূটনৈতিক সমাধান খোঁজা।
ভবিষ্যতে যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা (জেসিপিওএ) নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রাফায়েল গ্রসি বলেন, এটি কোনো গোপন বিষয় নয়। নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এ বিষয়ে সমাধান খুঁজছে।
ঘোষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, গ্রসি ইরানের প্রেসিডেন্ট, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধানের সঙ্গে দেখা করবেন।
দুই সপ্তাহ আগে ভিয়েনায় আইএইএ প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ইরানের আইন ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপমন্ত্রী কাজেম গরিমাবাদি ঘোষণা করেন, গ্রসির এই সফর ইরান ও সংস্থাটির মধ্যে চলমান যোগাযোগের ধারাবাহিকতা এবং ২০২৩ সালের ৪ মার্চ দুই পক্ষের যৌথ বিবৃতির আলোকে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত বাকি বিষয়গুলো পেশাদার দৃষ্টিকোণ থেকে ও পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই সমাধানের লক্ষ্যে নেওয়া পদক্ষেপের অংশ।
যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি মিলে ২০১৫ সালের যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনার আওতায় একটি পরমাণু চুক্তি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হওয়ার পরই ধীরে ধীরে নিজের প্রতিশ্রুতিগুলো থেকে সরে আসে ইরান।
এর আগে, পশ্চিমা দেশগুলো জাতিসংঘের সনদের সপ্তম অধ্যায়ের ভিত্তিতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে হুমকি হিসেবে উপস্থাপন করে এবং এর সমাধান সামরিক পদক্ষেপ ও নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে করার চেষ্টা করে।