‘বিয়ান হাতে বসি আছি আইজ মোক কাইয়ো না কেনে’

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2024-10-16 18:30:35

বিয়ান হাতে বসি আছি এ্যালা বেলা গড়েয়া দুপুর হইল আইজ আর মোক কাইয়ো না কেনে। প্যাটের খোরাক জোগার জইনতে ভোর ছয়টা হাতে ডালি কোদাল নিয়া বসি থাকি। যার কামলা নাগে কিনি নিবে তারে পাছোত য্যায়া কয়টা টাকার মুখ দেখমো, তাকে দিয়া চাইল-তকাই নিমো। হায়রে! আইজ মোর কপাল বেলা একটা বাজোচে কাইয়ো আর না কেনে। একদিন কাম না হইলে, ছইল-পইল ধরি গতি না থাকে। কাক কমো আর দুঃখের কতা, দেখার কাইয়ো নাই। এভাবেই রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় দিনমজুর বুলু মিয়া বার্তা২৪.কমের প্রতিবেদকের কাছে প্রকাশ করেন কাজ না পেয়ে তার দুঃখের কথা।

রংপুর নগরীর শাপলা চত্ত্বরে ফুটপাতের ধারে ভোর ৬টা থেকে ডালি কোদাল নিয়ে সারিবেঁধে বসে থাকেন অসংখ্য দিনমজুর। এই দৃশ্য যেন প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে পথচারীদের।

ডালি কোদাল নিয়ে গালে হাত দিয়ে বসে থাকা দিনমজুর বুলু মিয়ার সঙ্গে আলাপকালে জানান, তিনি রংপুর নগরীর ভুয়ারঘাট এলাকার বাসিন্দা। ৩ ছেলে-মেয়ে নিয়ে অভাবের সংসার তার। দৈনিক মাটি কাটা ও মাটি উবানোর কাজ করে উপার্জন করেন তিনি। যুগের পর যুগ ধরে এই শ্রমিকের কেনাবেচার মাধ্যমে কাজ পান তিনি। অভাবের সংসারে একমাত্র ভরসা দিনমজুরের জোগালি কাজের হাজিরায়।

দুঃখ প্রকাশ করে রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় দিনমজুর বুলু মিয়া বলেন, বিয়ান হাতে বসি থাকি কামের জইনতে। কাইয়ো হাজিরাত বইনলে কিনি নেয়, কায়ো নেয় না। আইজ বেলা গরে গেইলো কাইয়ো না কেনে। আর বসি থাকি কি করি বাড়ি ফিরি যাওচি। কাম বুজিয়া একদিনে ৪০০-৫০০ ট্যাকাত বিক্রি। যে জিনিসের দাম এই ট্যাকা দিয়া টানাটানি করি কোনমতে সংসার চলে। তারেমধ্যে আবার প্রতিদিন বেচা না হই। খানেআলা ৫ জন, ছইল-পইলের নেকাপড়া, সবমিলিয়া কষ্টের শ্যাষ নাই। কাক কমো এই দুঃকের কতা। এইতন করি হামার দিন পার হয়।

দৈনিক একই স্থান থেকে কেনাবেচা হয় শ্রমিকদের। কাজ বুঝে দরদাম করে শ্রমিক কেনা হলে তবেই পেটের খোরাক জোগান তারা। প্রায় সময় শ্রম বিক্রি করতে পারেন না অনেকেই। আর একদিন শ্রম বিক্রি না করলে অভাবের সঙ্গে দিনাতিপাত করতে হয় এই দিন মজুরদের।

Related News