মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে হাসাড়া-ফিলিং স্টেশনের তেলের ট্যাংকের ভেতর থেকে জুনায়েত (১২) নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কয়েক ঘন্টার চেষ্টায় হাসাড়া এলাকার ফিলিং স্টেশনের ট্যাংকি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেন। নিহত জুনায়েদ উপজেলার নয়াপাড়া এলাকার নুর হোসেনের ছেলে।
সুত্রে জানায়, শ্রীনগর উপজেলার হাঁসাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সাব্বির আহমেদ নাসিমের মালিকানাধীন ফিলিং স্টেশনটি প্রায় ১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।
এটি পুনরায় চালু করার জন্য কয়েকদিন ধরে ট্যাংক পরিস্কারের কাজ চলছিল। রোববার রাতে পাম্পের লোকজন পরিস্কার কাজ করার সময় ট্যাংকির ভেতরে একটি মরদেহ দেখতে পায়। পরে তারা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। ফায়ার সার্ভিস এসে মরদেহ উদ্ধার করলে, লাশটি শনাক্ত করাহয় লাশটি জুনায়েতের।
খবর পেয়ে ছুটে আসেন লাশটির পরিবারের লোকজন। তবে কিভাবে জুনায়েতের মরদেহ তেলের ট্যাংকিতে গেলো সে বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এদিকে উদ্ধার কাজ করার সময় রাত ১০টার দিকে ট্যাংকিতে জমে থাকা গ্যাসের বিস্ফোরণে রাসেল (২২) নামের এক দমকলকর্মীসহ ৫ জন অসুস্থ হয়ে যায়।
তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর আবুল কাল আজাদ বলেন, তেলের ট্যাংকিতে শিশু মরদেহের খবর পেয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করি। তবে ট্যাংকিতে প্রচুর গ্যাস জমে থাকায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হয়। রাত ১০টার দিকে বিস্ফোরণে আমাদের কয়েকজন আহত হয়। পরে আবারো চেষ্টায় রাত সাড়ে ১১ টার দিকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ নিহতের স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান, ওই পাম্পে আলমপুর এলাকার রাহাত (১২) নামে আরো এক শিশু কাজ করতো। রাহাতের সঙ্গে জুনায়েতের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। জুনায়েত প্রায় পাম্পে গিয়ে রাহাতের সঙ্গে খেলা করতো। জুনায়েত পাম্পে কাজও করতে চেয়েছিল। তবে জুনায়েতের পরিবার কাজ করতে নিষেধ করে। ঘটনার পর থেকে শিশু রাহাতকে সোমবার সকাল পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউয়ুম উদ্দীন চৌধুরী সোমবার সকালে বলেন, ওই তেলের ট্যাংকিতে তিনটি মুখ ছিল খোলা ২০ ফুট গভীর ছিল। সেখানে তেল ছিল। সেখানেই জুনায়েতের মরদেহ পাওয়া গেছে। জুনায়েতের পরিচিত রাহাতকে এখনো পাওয়া যায়নি। জুনায়েতের শরীরে ছোট, কাটা ছোলার যখম আছে। সে কিভাবে ট্যাংকিতে গেলো সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। জুনায়েত এর পরিবার থানায় কোন অভিযোগ, সাধারণ ডায়রিও করেনি। লাশ উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।