জাবিতে ছাত্রী নিহত: ৪ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত, একদিনের শোক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অভ্যন্তরে শহীদ মিনার সংলগ্ন নতুন কলাভবনের সম্মুখ সড়কে রিকশার ধাক্কায় মার্কেটিং বিভাগের ৫৩ ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থী আফসানা রাচি নিহত হওয়ার ঘটনায় ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ ৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিনের শোক দিবস ঘোষণা করে সকল ক্লাস পরীক্ষা স্থগিতের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷
বুধবার (২০ নভেম্বর) রাত সোয়া ১২ টার দিকে ৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস পালনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আজিজুর রহমান৷
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আজিজুর রহমান জানান, শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে সাময়িক বরখাস্তরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (এস্টেট) আবদুর রহমান বাবুল, নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাসেল মিয়া, সহকারী সুপারভাইজার আ: সালাম ও ডিউটি গার্ড মনসুর রহমান প্রামাণিক৷
একই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস পালন বিষয়ক বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আফসানা করিম রাচির মৃত্যুর ঘটনায় আগামীকাল (২০ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। শোক দিবসে সকল ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত থাকবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল রুটের বাস-গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে৷
এর আগে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাত ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, সড়ক উন্নয়ন ও সার্বিক নিরাপত্তাসহ আট দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার নেতা-কর্মীরা। বটতলা থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ-মিছিলটি নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়৷ এসময় তারা রাচি নিহতের ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তা-কর্মকচারীদের তাৎক্ষনিক বরখাস্তসহ ৮ দফা দাবি জানায়৷ পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট দায়ী ব্যক্তিদের সাময়িক বরখাস্ত করলে এবং শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়া থেকে শিক্ষার্থীরা সরে আসেন৷
শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবিগুলো হলো- ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের যথাযথ বিচার করতে হবে, পর্যাপ্ত ল্যাম্পপোস্ট, ফুটপাথ ও স্পিডব্রেকার স্থাপন করতে হবে এবং যানবাহনে স্পিডমিটার বাস্তবায়ন করতে হবে, নিহতের পরিবারকে যথাযথ আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, মেডিক্যাল সেন্টারে জরুরি সেবার মানোন্নয়ন করতে হবে, রেজিস্ট্রেশনবিহীন সকল যানবাহন ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং রেজিস্ট্রেশন প্রদানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে, রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণপূর্বক রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করতে হবে, অদক্ষ নিরাপত্তাকর্মীদের প্রত্যাহার করতে হবে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল করতে হবে৷