যেভাবে আহত হয়েছেন অপূর্ব-ফারিণরা, জানালেন পরিচালক
পরিচালক কাজল আরেফিন বানাচ্ছেন ওয়েব ফিল্ম ‘হাউ সুইট’। গত মাস থেকে এই ওয়েব ফিল্মের শুটিং চলছে। ১৪তম দিনে এসে দুর্ঘটনা ঘটে। এতে এই ওয়েব ফিল্মের তিন প্রধান অভিনয়শিল্পী জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, তাসনিয়া ফারিণ ও সাইদুর রহমান পাভেল আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার দুপুরে পরিচালক এক ফেসবুক পোস্টে জানান, তার এই ওয়েব ফিল্মের তিনজন গুরুত্বপূর্ণ অভিনয়শিল্পী দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। এরপর তাদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, দেওয়া হয়েছে প্রাথমিক চিকিৎসা।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় পরিচালক জানান, ঢাকার পাশেই জিন্দা পার্কে শুটিংয়ের সময় গত শুক্রবার দুপুর ১২টায় দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর ফারিণ ও পাভেলকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া শেষে সন্ধ্যায় ফারিণকে হাসপাতাল ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হলেও পাভেলকে থাকতে হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যার পর তার এমআরআই করানোর কথা। এরপর প্রতিবেদন দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দুর্ঘটনা সম্পর্কে পরিচালক কাজল আরেফিন বলেন, ‘আমরা ঢাকার পাশে জিন্দা পার্কে শুটিং করছিলাম। একটি দৃশ্য ছিল এমন, বাজারের মধ্যে স্কুটিতে করে আসবেন অপূর্ব ভাই, ফারিণ ও পাভেল। একটা নির্দিষ্ট মার্ক দেওয়া ছিল, যেখানে এসে স্কুটি থামবে। কথা ছিল, ফারিণ স্কুটি চালাবে, অপূর্ব ভাই ও পাভেল পেছনে বসা থাকবেন। কিন্তু ফারিণ স্কুটি চালাতে না পারায় দায়িত্ব পড়ে পাভেলের ওপর। সে নিয়মিত স্কুটি চালায়ও। তাই দৃশ্য অনুযায়ী পাভেল চালাবে, পেছনে বসা ছিলেন ফারিণ ও অপূর্ব ভাই। মাটির রাস্তাটায় বালু বালু ছিল। স্কুটি একটা জায়গায় এসে ব্রেক করার কথা। পাভেল ব্রেকও করেছিল। নামার সময় পা পিছলে পড়ে যায়। অপূর্ব ভাই ভারসাম্য বজায় রেখে দাঁড়িয়ে গেলেও পাভেল আর ফারিণ পারেনি। দুজনের আঘাত পরিমাণে বেশি হলেও অপূর্ব ভাই শুধু কবজিতে আঘাত পান।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পরিচালক কাজল আরেফিন আরও বলেন, ‘অপূর্ব ভাই স্কুটি থেকে নেমে দাঁড়িয়ে যেতে পেরেছিলেন। কবজিতে ব্যথা পেয়েছেন। ফারিণ এমনভাবে পড়েছে, মাথায় এমনভাবে আঘাত লেগেছে, যেকোনো কিছুই ঘটতে পারত। ভাগ্য ভালো, মাটির রাস্তা হওয়ার কারণে মাথা ফাটেনি। অন্যথায় বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। তবে ফারিণের হাত-পা প্রচুর ছিলে গেছে। ব্যথাও পেয়েছে। স্কুটির হ্যান্ডেল পাভেলের বুকে লাগার কারণে ওর পাঁজরে একটা ক্র্যাক হয়েছে। যেটার কারণে পাভেলকে হাসপাতালে আজ পর্যন্ত ভর্তি থাকতে হয়েছে। আজ এমআরআই করানো হবে। এরপর আজ রাতে জানা যাবে, তাকে হাসপাতালে আরও রাখা লাগবে কি না। ফারিণকে অবশ্য গতকাল সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
এক স্কুটিতে তিনজন বসল কীভাবে, এমন প্রশ্নে কাজল আরেফিন বলেন, ‘স্কুটিতে তিনজন কিন্তু বসা যায়। আমাদের দৃশ্যের প্রয়োজনে তিনজনকে দেখানো লাগতও। সেভাবেই আয়োজন করা হয়েছে।’
কথায় কথায় পরিচালক বললেন, ‘আমাদের শুটিং বাকি আর তিন দিন। আমরা ১৩ দিন শুটিং করলাম, ১৪ দিনের মাথায় এ দুর্ঘটনা ঘটল। এখন ওই বাজারের শুটিং পুরোটা আবার করতে হবে। অনেক বড় একটা সেট বানানো হয়েছিল। বাজারের এই সেট বেশ ব্যয়বহুল। এই সেটে প্রথম দিন শুটিং করতে পারিনি বলে ভাড়া দিয়ে এক দিন রেখে দিয়েছিলাম। গতকাল ভেবেছি, শুটিং করে শেষ করতে পারব। এই সেটের মধ্যে বাজারের দোকানদার, অতিথি শিল্পী-সবকিছু মিলিয়ে ৮৬ জন মানুষকে পর্দায় দেখা যাবে। আবার সবাইকে নিয়ে আয়োজনটা করতে হবে। দুর্ঘটনার কারণে আমাদের এখন পুরোটা নতুনভাবে আয়োজন করতে হবে। কারণ, এই দৃশ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’