বর্তমান প্রজন্মের বলিউড অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় কিয়ারা আদভানি। একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন মুম্বাই শোবিজে। এ বছর কিয়ারার একে একে ৪টি সিনেমা মুক্তি পাবে। তাই ২০২৫, এই বছরটা হতে যাচ্ছে কিয়ারাময়, তা বলাই বাহুল্য। বলিউড থেকে দক্ষিণ, বিগ বাজেটের বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমাগুলোতেই নায়িকা হিসেবে দেখা যাবে কিয়ারাকে।
২০২৫ সালের অন্যতম প্রতীক্ষিত একটি চলচ্চিত্র ‘গেম চেঞ্জার’। এটি একটি তেলেগু রাজনৈতিক থ্রিলার সিনেমা, যা পরিচালনা করেছেন এস শঙ্কর এবং ২০২৫ সালের ১০ জানুয়ারি এটি মুক্তি পেতে চলেছে। এতে রাম চরণের বিপরীতে কিয়ারাকে দেখা যাবে। এরই মধ্যে সিনেমার টিজার এবং গানগুলোও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কিয়ারার আসন্ন সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে কন্নড় অ্যাকশন ফিল্ম ‘টক্সিক’। যেখানে তার সঙ্গে অভিনয় করছেন কেজিএফ খ্যাত অভিনেতা যশ। জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা গীতু মোহানদাস এই সিনেমাটি পরিচালনা করছেন।
বিজ্ঞাপন
এই চলচ্চিত্রটি গোয়ার মাদক চক্রের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। এতে কিয়ারাকে প্রথমবারের মতো যশের সঙ্গে জুটি বাঁধতে দেখা যাবে, যা অভিনেত্রীর ক্যারিয়ারে একটি নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে। দক্ষিণের দুই বিগ বাজেটের সিনেমা ছাড়াও কিয়ারাকে দেখা যাবে যশরাজ ফিল্মসের স্পাই ইউনিভার্সের সিনেমায়। হৃতিক রোশনের ‘ওয়ার ২’তে নাম লিখিয়েছেন অভিনেত্রী। যশ রাজ ফিল্মসের ‘ওয়ার’ ছিল একটি বড় হিট সিনেমা।
এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন হৃত্বিক রোশান ও টাইগার শ্রফ। এটি স্পাই ইউনিভার্সের একটি অংশ ছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এবার আবারও নির্মিত হতে যাচ্ছে এর সিক্যুয়েল ‘ওয়ার ২’। এবার হৃতিকের সঙ্গে থাকছেন জুনিয়র এনটিআর। সঙ্গী হবেন কিয়ারা আদভানিও। সিনেমাটি মুক্তি পাবে ২০২৫ সালের ১৪ আগস্ট। এরপর বলিউডের আরেক বিগ বাজেটের ফ্র্যাঞ্চাইজি ফিল্মে দেখা যাবে কিয়ারাকে। রণবীর সিংয়ের বিপরীতে ‘ডন ৩’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন কিয়ারা।
বিজ্ঞাপন
নির্মাতা ফারহান আখতার সিনেমাটিতে কিয়ারার অন্তর্ভূক্তির তথ্য নিশ্চিত করেন। এই চলচ্চিত্রটিতে শাহরুখ খান এবং অমিতাভ বচ্চনের পর ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রধান চরিত্রে রণবীর সিং অভিনয় করতে চলেছেন। এটি ২০২৫ সালের সবচেয়ে আলোচিত মুক্তি হতে চলেছে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০ দিনের মতো অসুস্থ থেকে অবশেষে জীবন যুদ্ধে পরাজিত হলেন ঢালিউডের অন্যতম সফল অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান। শুক্রবার দিনগত রাত ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
দক্ষ অভিনয়, গ্ল্যামার, ফ্যাশন সেন্স আর নৃত্যে পারদর্শীতার জন্য তিনি হয়ে উঠেছিলেন আশির দশকের লেডি সুপারস্টার। তার নামে অসংখ্য সিনেমা সুপারহিট বাম্পারহিট হয়েছে। সেই ছবির তালিকা নিজের ফেসবুকে মাঝে মধ্যেই পোস্ট করতেন এই নায়িকা। বয়স সত্তর পেরোলেও চির যৌবনা এই তারকা মৃত্যুর ক’দিন আগ পর্যন্ত কাজ করে গেছেন। কোন অনুষ্ঠানে গেলে স্বভাবসুলভ কারিশমা দিয়ে হয়ে উঠতেন মধ্যমণি। গল্প আড্ডা হাসি আর মিষ্টি ব্যবহারে ভরিয়ে রাখতেন সবার মন। তাইতো এই নায়িকার বিদায়ে ফেসবুক যেন হয়ে উঠেছে অঞ্জনাময়। অনেক শিল্পীই তো চলে যান, কিন্তু অঞ্জনাকে ঘিরে ফেসবুকে যতো পোস্ট না সচারচর দেখা যায় না। শোবিজের তারকারা এই শিল্পীকে ঘিরে জানিয়েছেন শোকবার্তা। সেখান থেকে কিছু পোস্ট তুলে ধরা হলো-
কিংবদন্তি অভিনেতা সোহেল রানার হাত ধরে ঢালিউডে মাত্র ১৬ বছর বয়সে নায়িকা হয়ে আবির্ভাব হয়েছিলো অঞ্জনার। সেই সোহেল রানা আজ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘না ফেরার দেশে চলে গেল অঞ্জনা। চলচ্চিত্র জগতের একটা আলো নিভে গেল। আল্লাহ তোমাকে বেহেস্ত নসিব করুন গেল।’
ঢালিউডের বর্তমান মেগাস্টার শাকিব খান লিখেছেন, ‘অঞ্জনা ম্যাডামের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
ঢালিউড কুইন শাবনূর লিখেছেন, ‘আমার অগ্রজ সহকর্মী, জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা ও নৃত্যশিল্পী শ্রদ্ধেয় অঞ্জনা রহমান আর আমাদের মাঝে নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিঊন)। আমাদের সকলের প্রিয় অঞ্জনা আপার এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করা গুণী এই শিল্পীর অকাল মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তার রূহের মাগফেরাত কামনা করছি।’
প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা মিশা সওদাগর লিখেছেন, ‘কিংবদন্তি বাংলাদেশি চিত্রনায়িকা অঞ্জনা আপা আর নেই। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন..’
অঞ্জনার মৃত্যুর খবর শুনে জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পূজা চেরী লিখেছেন, ‘ভেতরটা ধঁক করে উঠলো, ভালো থাকবেন আপনি যেখানেই থাকুন।’
জনপ্রিয় উপস্থাপক ও নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাস লিখেছেন, ‘‘ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইসে, লাল লাল নীল নীল বাত্তি দেইখা নয়ন জুড়াইসে’ আশা ফুরানোর আগেই আপনার জীবন ফুরিয়ে গেলো, নয়ন জুড়ানোর আগেই আপনার নয়ন বন্ধ হয়ে গেলো! আপনি চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। আমার বাবা দিলীপ বিশ^াসের পরিচালিত ‘জিঞ্জির’, ‘আনারকলি’ এবং ‘অংশীদার’- এই তিন তিনটি সুপারহিট চলচ্চিত্রের নায়িকা হয়ে আপনি ছিলেন আমার বাবা মা তথা আমাদের পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এরপর আমার কর্মজীবনে কতশত অনুষ্ঠানে আপনার সাথে দেখা হওয়া, একসাথে কাজ করার সৌভাগ্য হওয়া, সবই স্মৃতি হয়ে গেলো! কোন মৃত্যুই কাম্য নয়, কিন্তু প্রবীণ হয়েও এত উচ্ছ্বল, চঞ্চল, আনন্দদায়ক নবীন প্রাণের অকালপ্রয়াণ মেনে নেয়া ভীষণ কষ্টকর! এরকমই প্রানোচ্ছ্বল কাটুক আপনার পরপার জীবন, আমার প্রিয় অঞ্জনা আন্টি।’’
চিত্রনির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক লিখেছেন, ‘না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্র শিল্পী অঞ্জনা রহমান। শোক ও শ্রদ্ধা আপনার জন্য।’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী শাহনূর লিখেছেন, ‘প্রিয় অঞ্জনা দিদিকে সকাল ১১টায় শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তার মরদেহ বিএফডিসিতে নিয়ে যাওয়া হয়। বাদ জহুর বিএফডিসি প্রাঙ্গনে ১ম জানাজা এবং দ্বিতীয় জানার জন্য তেজগাঁও চ্যানেল আই-এ নিয়ে যাওয়া হবে, সর্বশেষ বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে। আমার ভীষণ কষ্ট লাগছে, বিদায় মুহূর্তে দিদিকে একটা বারের জন্য দেখতে পেলাম না। আমি এখন আমেরিকাতে আছি। আপনারা সবাই দিদির জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করেন। আমিন।’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক লিখেছেন, ‘আমাদের সকলের প্রিয় মানুষ, প্রিয় অভিনেত্রী, অঞ্জনা আপু ইন্তেকাল করেছেন। আপনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন আপু। মিস করবো আপনাকে।’
জিঙ্গেল কিং’খ্যাত রিপন খান লিখেছেন, ‘অঞ্জনা আপা আর নেই! আমাকে তিনি আর কখনো হিরো বলে ডাকবেন না! না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্র শিল্পী সবার প্রিয় অঞ্জনা রহমান।’
অভিনেতা সাজু খাদেম লিখেছেন, ‘বৈচিত্রময় জীবন ছেড়ে চলে গেলেন চিত্র নায়িকা অঞ্জনা।’
এ প্রজন্মের চিত্রনায়িকা তানহা তাসনিয়া লিখেছেন, ‘আমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না আপু তোমার হাসিমুখটা আর কোনদিন দেখতে পারবো না! আজকে দেশে এসে ভাবছিলাম তোমাকে দেখতে যাবো, কিন্তু তার আগেই তুমি চলে গেলে! লিভিং লেজেন্ডদের মধ্যে একমাত্র তুমিই সেরা ছিলে, সবার সাথে তোমার সম্পর্ক ভালো ছিলো, কোনো ইগো নেই তোমার! আল্লাহর কাছে দোয়া করি তুমি যেখানেই থাকো ভালো থাকো।’
নব্বই দশকের সাড়া জাগানো চিত্রনায়িকা একা লিখেছেন, ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান। মেনে নিতে খুবই কষ্ট হচ্ছে, আল্লাহ যেন আপাকে জান্নাতবাসী করেন, আমীন।’
চিত্রনায়িকা বিপাশা কবির লিখেছেন, ‘আহারে আপু কত স্মৃতি, মেনে নিতে পারতেছি না তুমি আর নাই। এতো দূরে আমি পারলাম না তোমাকে দেখতে যেতে.. শেষ দেখাও আর হলো না। আপনারা সবাই আপুর আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া করবেন।’
চিত্রনায়ক আমান রেজা লিখেছেন, ‘আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন।’
চিত্রনির্মাতা বুলবুল বিশ্বাস লিখেছেন, ‘দূর থেকে দেখা মানুষটা এত দ্রুত এত দূরে চলে যাবে জানলে আর একটু কাছ থেকে দেখতাম, জানতাম। জানাতাম, আপনি কতখানি এই ইন্ডাস্ট্রির জন্য ছিলেন। বিদায় চিত্রনায়িকা অঞ্জনা।’
সঙ্গীতশিল্পী স্বপ্নিল সজীব শেষের দিকে অঞ্জনা রহমানের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ট ছিলেন। তার সঙ্গে কাজও করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘কত স্মৃতি তোমার সাথে, কিভাবে ভুলবো? না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র শিল্পী অঞ্জনা সুলতানা। ওপারে ভালো থেকো, আনন্দে থেকো।’
চিত্রনায়ক সাঞ্জু জন লিখেছেন, ‘ওপারে ভালো থেকো অঞ্জনা আপা।’
চিত্রনায়িকা শিরিন শিলা লিখেছেন, ‘আহা এতো সুন্দর হাস্যজ্জ্বল, প্রাণবন্ত মানুষটি নাকি চিরবিদায় জানিয়ে চলে গেলো! অঞ্জনা আপুর কাছে থেকে শিখেছি কিভাবে হাসি মুখে মানুষের সাথে কথা বলতে হয়। কিভাবে মানুষকে সম্মান দিতে হয়! আমার পরিবারের প্রতিটি অনুষ্ঠানে তুমি চলে এসেছো আমার বাসায়। কিছুদিন আগের এই স্মৃতি গুলো দেখে কষ্ট পাচ্ছি। আর দেখা হবে না! ভালো থেকো আপু, আল্লাহ তোমাকে ভালো রাখুক। তোমাকে আমরা কোনোদিন ভুলবো না।’
ফ্যাশন ডিজাইনার পিয়াল রহমান কয়েক বছর আগে অঞ্জনাকে একটি ফটোশুটে একেবারে নতুন রূপে হাজির করে বেশ সাড়া ফেলেছিলেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমার দেখা বাচ্চা একটা মেয়ে, অঞ্জনা আপা ভালো থেকো। এতো মানুষের ভালোবাসা নিয়ে তুমি চলে গেলে, এটাই বা কয়জন পারে।’
জনপ্রিয় মডেল সৈয়দ রুমা লিখেছেন, ‘না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র শিল্পী অঞ্জনা রহমান।’
সঙ্গীতশিল্পী আলিফ আলাউদ্দিনের বাবা কিংবদন্তি সঙ্গীতকার আলাউদ্দিন আলী অঞ্জনার অনেক ছবির সঙ্গীত করেছেন। সেই সুবাদে তাদের ছিলো পারিবারিক সম্পর্ক। তিনি লিখেছেন, ‘আহা অঞ্জনা আন্টি, গত বছর যখন দেখা হলো কত আদর করলেন।’
সাংবাদিক সৈকত সালাহউদ্দিন লিখেছেন, ‘অঞ্জনা আপাও বিদায় নিলেন। আমাদের সোনালী দিন বা যাকে বলি বাংলাদেশের সিনেমার গৌরবের ইতিহাস সে সময়ের আরো একজন আর রইলেন না আমাদের মাঝে। আপাকে দেখতে হাসিখুশী লাগতো। সেজেগুজে পরিপাটি থাকতেন। তা নিয়ে আবার একশ্রেণীর মানুষ হাসিঠাট্টা করতেন। আমরা সিনিয়র সিটিজেনদের এভাবে আসলে বিষন্ন করে ফেলি। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিও সিনিয়র শিল্পীদের নীরবে মেরে ফেলে। আসলে টাকা নয় কাজের ক্ষুধায় তাদের মনটা আসলে মরে যায়। তারা আমাদের সাথে মিশে আনন্দে থাকতে চান। তখন আমরা তাদের সহজ মনে করে ফেলি। তার প্রফাইল ঘুরে আবারও লজ্জা পেলাম। কার কবে জন্মদিন কার কবে মৃত্যুদিন কিছুই ভুলেন নাই। আমরা ভুলে যাই। এই ছবিতে আমাদের দিকপাল অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা ভাইও আছেন। আপা বলতেন আমার ওস্তাদ। কারণ সোহেল রানার ‘দস্যু বনহুর’ সিনেমায় পর্দায় মুখ দেখান অঞ্জনা। আপা বিদায়। একদিন আবার সবাই আমরা এক হবো। ভালো থাকুন। আমিন।’
অভিনেত্রী মনিরা মিঠু লিখেছেন, ‘বেঁচে থাকা অঞ্জনাদের প্রতিদিন মৃত্যু হয়। মরার পর খবর হয়, শেষ প্রাপ্তি হয়।’
এছাড়া অঞ্জনার আত্মার শান্তি কামনা করেছেন চিত্রনায়িকা কেয়া, মিষ্টি জান্নাত, আইরিন সুলতানাসহ শোবিজের বিভিন্ন পেশার মানুষ।
২০ দিনের মতো অসুস্থ থেকে অবশেষে জীবন যুদ্ধে পরাজিত হলেন ঢালিউডের অন্যতম সফল অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান। শুক্রবার দিনগত রাত ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
দক্ষ অভিনয়, গ্ল্যামার, ফ্যাশন সেন্স আর নৃত্যে পারদর্শীতার জন্য তিনি হয়ে উঠেছিলেন আশির দশকের লেডি সুপারস্টার। তার নামে অসংখ্য সিনেমা সুপারহিট বাম্পারহিট হয়েছে। সেই ছবির তালিকা নিজের ফেসবুকে মাঝে মধ্যেই পোস্ট করতেন এই নায়িকা। বয়স সত্তর পেরোলেও চির যৌবনা এই তারকা মৃত্যুর ক’দিন আগ পর্যন্ত কাজ করে গেছেন। কোন অনুষ্ঠানে গেলে স্বভাবসুলভ কারিশমা দিয়ে হয়ে উঠতেন মধ্যমণি। গল্প আড্ডা হাসি আর মিষ্টি ব্যবহারে ভরিয়ে রাখতেন সবার মন।
এই নায়িকার বিদায়ে ঢালিউড কুইন শাবনূর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘আমার অগ্রজ সহকর্মী, জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা ও নৃত্যশিল্পী শ্রদ্ধেয় অঞ্জনা রহমান আর আমাদের মাঝে নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিঊন)। এইতো মাত্র দুই সপ্তাহ আগে আমার জন্মদিনে, আমাদের দু’জনের একসাথে তোলা কিছু ছবি দিয়ে উইশ করে তিনি তার ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘শুভ জন্মদিন, আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত, শীর্ষ স্থানীয় এক মহাতারকা। ৮০ দশকের পর সিনেপ্রেমী দর্শকদের মাঝে যখন একঘেয়ামীতা ভর করেছিলো তখন যে কয়েকজন লাস্যময়ী সুন্দরী জননন্দিত নায়িকার আবির্ভাব ঘটেছিলো তাদের মধ্যে শাবনূর শিশির স্নাত অনন্য একজন। অনেক ভালোবাসা ও নিরন্তর শুভ কামনা সব সময় তোমার জন্য।’
আমাদের সকলের প্রিয় অঞ্জনা আপার এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করা গুণী এই শিল্পীর অকাল মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তার রূহের মাগফেরাত কামনা করছি।’’
২০ দিনের মতো অসুস্থ থেকে অবশেষে জীবন যুদ্ধে পরাজিত হলেন ঢালিউডের অন্যতম সফল অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমান। শুক্রবার দিনগত রাত ১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
দক্ষ অভিনয়, গ্ল্যামার, ফ্যাশন সেন্স আর নৃত্যে পারদর্শীতার জন্য তিনি হয়ে উঠেছিলেন আশির দশকের লেডি সুপারস্টার। তার নামে অসংখ্য সিনেমা সুপারহিট বাম্পারহিট হয়েছে। সেই ছবির তালিকা নিজের ফেসবুকে মাঝে মধ্যেই পোস্ট করতেন এই নায়িকা। বয়স সত্তর পেরোলেও চির যৌবনা এই তারকা মৃত্যুর ক’দিন আগ পর্যন্ত কাজ করে গেছেন। কোন অনুষ্ঠানে গেলে স্বভাবসুলভ কারিশমা দিয়ে হয়ে উঠতেন মধ্যমণি। গল্প আড্ডা হাসি আর মিষ্টি ব্যবহারে ভরিয়ে রাখতেন সবার মন।
অঞ্জনা জন্মগ্রহণ করেছিলেন ঢাকায় একটি সংস্কৃতিমনা পরিবারে। ১৯৬৫ সালের ২৭ জুন জন্ম হয় অভিনেত্রীর। ছোটবেলা থেকে নৃত্যের প্রতি দারুণ আগ্রহ ছিল।
তাই বাবা-মা তাকে ভারতে নৃত্য শেখার জন্য পাঠান। সেখানে তিনি ওস্তাদ বাবুরাজ হীরালালের অধীনে নাচের তালিম নেন এবং কত্থক নৃত্য শিখেন। নৃত্যে তিনবার জাতীয় পুরস্কারও লাভ করেন এবং একবার এশিয়া মহাদেশীয় নৃত্য প্রতিযোগিতায় প্রথম হন তিনি। ১৯৭৬ সালে বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ সিনেমা দিয়ে অঞ্জনার অভিনয় জীবন শুরু হয়।
তবে তার অভিনীত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা শামসুদ্দিন টগর পরিচালিত ‘দস্যু বনহুর’ (১৯৭৬)। এরপর থেকে সাফল্যের সঙ্গে তিনি বিভিন্ন সিনেমায় অভিনয় করেন। তার অভিনীত বাংলা সিনেমাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ‘অশিক্ষিত’, ‘জিঞ্জীর’, ‘আশার প্রদিপ’, ‘আশার আলো’, ‘আনারকলি’, ‘সুখে থাকো’, ‘সানাই’, ‘বৌ কথা কও’, ‘অভিযান’, ‘রাম রহিম জন’, ‘রূপালি সৈকতে’, ‘মোহনা’, ‘পরিণীতা’ ইত্যাদি।
সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে অঞ্জনা তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। শুধু বাংলাদেশই নয়, ৯টি দেশের ১৩টি ভাষার সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। যে রেকর্ড ঢালিউডের আর কোন তারকার নেই। এমনকি ভারত পাকিস্তানের কোন তারকারও এই রেকর্ড আছে কি না সন্দেহ!
দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, তুরস্ক, থাইল্যান্ড ও শ্রীলংকা। অঞ্জনা দাবি করেছিলেন, তিনিই দেশের একমাত্র চিত্রনায়িকা যিনি ৯টি দেশের এতোগুলো ভাষায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
ক্যারিয়ারে নিজের সময়কালের শীর্ষ জনপ্রিয় সব অভিনেতার সঙ্গেই অভিনয় করেছেন অঞ্জনা। তাদের মধ্যে আছেন- রাজ্জাক, আলমগীর, জসিম, বুলবুল আহমেদ, জাফর ইকবাল, ওয়াসিম, উজ্জ্বল, ফারুক, ইলিয়াস জাভেদ , ইলিয়াস কাঞ্চন, সোহেল চৌধুরী, রুবেল, সুব্রত বড়ুয়া, মান্না প্রমুখ। এছাড়া মিঠুন চক্রবর্তী (ভারত), ফয়সাল (পাকিস্তান), নাদীম (পাকিস্তান) জাভেদ শেখ (পাকিস্তান), ইসমাইল শাহ (পাকিস্তান), শীবশ্রেষ্ঠ (নেপাল) ও ভূবন কেসি (নেপাল) অভিনেতাদের সঙ্গে অভিনয় করেছেন অঞ্জনা।
১৯৮১ সালে ‘গাংচিল’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন অঞ্জনা। এরপর ১৯৮৬ সালে ‘পরিণীতা’ সিনেমায় ললিতা চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করে একই পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি ‘পরিণীতা’, ‘মোহনা’ ও ‘রাম রহিম জন’ সিনেমার জন্য তিনবার বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন।
অভিনয়ের পাশাপাশি অঞ্জনা চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও করেছেন। তার প্রযোজিত চলচ্চিত্রগুলো হলো- ‘নেপালী মেয়ে’, ‘হিম্মতওয়ালী’, ‘দেশ বিদেশ’, ‘বাপের বেটস’, ‘রঙিন প্রাণ সজনী’, ‘শ্বশুরবাড়ি’, ‘লাল সর্দার’, ‘রাজা রানী বাদশা’, ‘ডান্ডা মেরে ঠান্ডা’, ‘বন্ধু যখন শত্রু’।
সংগীত, শিল্পকলা ও প্রকৃতির মিশেলে ৩ দিন ব্যাপী ‘বার্নিং ক্র্যাব ফেস্টিভ্যাল’ আয়োজন করতে যাচ্ছে কক্সবাজার মারমেইড বিচ রিসোর্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘বার্নিং ম্যান’ উৎসবের আদলে আগামী ২৯ থেকে ৩১ জানুয়ারি সমুদ্রতীরে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
এই উৎসবে কিউরেটর হিসেবে যুক্ত হয়েছেন শিল্পী ও লাইটিং ডিজাইনার জিরো এনদো। এছাড়া এখানে বিভিন্ন দেশের শিল্পী, উদ্যোক্ত এবং সৃজনশীল ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করবেন।
মারমেইড ইকো ট্যুরিজম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল হক চৌধুরী এই উৎসব সম্পর্কে বলেন, ‘টেক এ ব্রেক’–এ উৎসবের মূল ধারণা। আয়োজনের তিন দিনে অতিথিদের রোমাঞ্চকর সব অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। থাকবে দেশ সেরা রাঁধুনিদের তৈরি করা সুস্বাদু খাবার ও পানীয়র আয়োজন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা ব্ল্যাক রক সিটির মরুভূমিতে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বের সুপরিচিতি শিল্প ও সংস্কৃতির উৎসব ‘বার্নিং ম্যান’। সৃজনশীলতা, মুক্ত পরিবেশ, স্বাধীনতা হচ্ছে এই উৎসবের মূলমন্ত্র। যুক্তরাষ্ট্রের এই খ্যাতনামা উৎসবের আদলেই কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হবে ‘বার্নিং ক্র্যাব ফেস্টিভ্যাল’।