পরীমণির জামিনদার শেখ সাদী, উঠেছে নতুন গুঞ্জন!
পরীমণির ফেসবুকের বিশাল অনুসারী সংখ্যা জানেন, এই নায়িকার আশেপাশের মানুষ কিছুদিন পর পর বদলে যায়। কারণ, যখন তিনি যে মানুষদের নিজের জীবনে স্বাগত জানান তাদের ব্যাপারে জানাতে কাপর্ণ্য করেন না। ফেসবুকে তাদের সঙ্গে নিয়মিত পোস্ট করতে থাকেন, একসঙ্গে ঘোরাঘুরি, আড্ডাবাজি চলতে থাকে।
অতি সম্প্রতি পরীর জীবনে তেমনি একজন মানুষ হলেন তরুণ উঠতি সঙ্গীতশিল্পী শেখ সাদী। এই গায়ক সংশ্লিষ্ট একাধিক পোস্ট সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। স্বাভাবিকভাবেই আগে অনেকের মতো শেখ সাদীকে নিয়েও নতুন গুঞ্জন উঠেছে শোবিজ পাড়ায়।
পরীমণির ফেসবুক পেজে দেখা যায়, চার দিন আগে শেখ সাদীর একটি ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। তাতে পরীমণি লিখেছেন, ‘...পৃথিবীকে জানতে দিয়ো, তুমি এই পৃথিবীর আলো...।’ এ ছাড়া ১৩ জানুয়ারি পরীমণির ফেসবুক পেজে শেখ সাদীর আরও একটি ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। একই দিন শেখ সাদীর আরও একটি ভিডিও পরীমণির ফেসবুক পেজে প্রকাশ পায়। একটি ভিডিওতে পরীর ছেলে রাজ্যর সঙ্গে শেখ সাদীকে খুনসুটি করতে দেখা যায়।
উৎসুক সাংবাদিকরা এ নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্নও করে বসেন শেখ সাদীকে। পরীর সঙ্গে তার কী সম্পর্ক? সেটা নিয়ে সহজ করে না বলে এক ধরনের ধুম্রজাল সৃষ্টি করেন তার উত্তরে। তিনি সরাসরি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেন। এতে করে পরীর সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে। অনেকেই ভাবছেন, পরীর সঙ্গে যদি সহজ কোন সম্পর্ক থাকতো তাহলে তিনি সেটা কিছুতেই এড়িয়ে যেতেন না। হয়তো এমন কোন সম্পর্ক রয়েছে যা তিনি এখনই প্রকাশ করতে চান না। অথবা এই প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে তিনিও এক ধরনের রহস্য রাখতে চেয়েছেন। কারণ তিনি হয়তো নিজেই চাচ্ছেন এটা নিয়ে কথা হোহ, আলোচনা-সমালোচনা হোক। বর্তমান সময়টাই তো এই পলিসিতে চলছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সরগরম থাকা মানের ক্যারিয়ারের পালে হাওয়া!
যাই হোক, পরীর সঙ্গে শেখ সাদীর সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন এবার আরও জোরালো হলো। কারণ, গতকাল তিনিই ছিলেন পরীর জামিনদার।
গতকাল ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ১০টা ২৭ মিনিট। চিত্রনায়িকা পরীমনি এজলাসের ঠিক পেছনের বেঞ্চে বসা ছিলেন। তখন পরীমনির আইনজীবীরা জামিননামা লেখায় ব্যস্ত। পাঁচ মিনিটের মধ্যে জামিননামার প্রয়োজনীয় তথ্য লেখার পর জামিনদারের স্বাক্ষরের জন্য কাগজটি তরুণ গায়ক শেখ সাদীর হাতে যায়। তখন পরীমনি ঠিক তার ডান পাশেই বসা ছিলেন। এ সময় শেখ সাদী জামিননামায় নিজের নাম ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা লেখেন।
পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আদালতের জামিন আদেশের পর পরীমনির জামিননামা লেখা হয়। আমি জামিনদার হয়েছি। আরেকজন জামিনদার হয়েছেন শেখ সাদী। জামিননামাটি আদালতে জমাও দিয়েছি।’
পরীমনির জামিনদার হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেখ সাদী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পরীমণি আমার সহকর্মী। যখন গণমাধ্যমে পরীমণির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির খবর শুনি, তখন বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। তখন পরীমনির সঙ্গে কথা হয়। তিনি আমাকে জানিয়েছিলেন, আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন। এ জন্য আমিও আজ আদালতে আসি। জামিন হওয়ার পর তার আইনজীবী একজন জামিনদার হন। আমিও আরেকজন জামিনদার হলাম।’
শেখ সাদী আরও জানান, একই অঙ্গনে দীর্ঘদিন কাজ করার কারণে পরীমনির সঙ্গে বেশ আগেই পরিচয় হয়েছিল। তখন থেকে পেশাগত বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে নিয়মিত কথাবার্তা হয়। পরীমণির অনেক ইতিবাচক গুণ রয়েছে। বিপদ-আপদে মানুষের পাশে থাকেন। আমি তার মঙ্গল কামনা করি সব সময়।
শেখ সাদীর জামিনদার হওয়া প্রসঙ্গে চিত্রনায়িকা পরীমণি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হঠাৎ করে আমি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম বলে গতকাল আদালতে যেতে পারিনি। যখন শুনলাম, আমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। খবরটি যখন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, তখন আমার শুভাকাঙ্ক্ষী ও শুভানুধ্যায়ীরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এমন পরিস্থিতিতে আমার বন্ধুবান্ধবেরা আমাকে সাহস জুগিয়েছে। শেখ সাদীও আমার সহকর্মী। তার সঙ্গেও গতকাল কথা হয়। আজ আদালতে শুনানির সময় সে ছিল। জামিন পাওয়ার পর আইনজীবী জামিনদারের পাশাপাশি স্থানীয় একজন জামিনদারের প্রয়োজন হয়। শেখ সাদী তখন জামিননামায় স্বাক্ষর করে।’
তিন বছর আগে ‘গুণিন’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় চিত্রনায়িকা পরীমণির সঙ্গে নায়ক শরিফুল রাজের পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে প্রণয়। এরপর এই দম্পতির একটি ছেলেসন্তান হয়। পরে তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। প্রায় দেড় বছর আগে তাদের বিচ্ছেদ হয়। পরীমণি তার সন্তান ও কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন। অন্যদিকে রাজও তার মতো করে ছবির কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
প্রসঙ্গত, ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের দায়ের করা মারধর ও হত্যাচেষ্টার মামলায় ঢাকার সিজেএম আদালত গতকাল পরীমণির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। এদিকে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদের বিরুদ্ধে পরীমণির দায়ের করা ধর্ষণচেষ্টা মামলাটি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৯-এ বিচারাধীন। এই মামলায় পরীমণির সাক্ষ্য গ্রহণ চলমান।