সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার দশমী ছিল আজ রোববার (১৩ অক্টোবর)। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মহাষষ্ঠী থেকে শুরু করে সিঁদুর খেলায় দুর্গার বিদায় জানাচ্ছেন ভক্তরা। পুণ্যার্থীদের পূজা-অর্চনায় মুখর ছিল মণ্ডপ। ছবিগুলো বিকেলে তুলেছেন বার্তা২৪.কমের ফটোগ্রাফার নূর-এ-আলম। বার্তা২৪.কমের পাঠকদের জন্য ছবিগুলো তুলে ধরা হলো-
এবারের ‘লা নিনা’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেমন শীত বয়ে আনবে, সে বিষয়ে ক্লাইমেট প্রেডিকশন সেন্টার ১০ অক্টোবর আগের ‘লা নিনা’ বিশ্লেষণ করে একটা পূর্বাভাস দিয়েছে।
তবে এ বিষয়ে আলোচনার আগে জানা দরকার, ‘লা নিনো’ ও ‘লা লিনা’ বলতে কী বোঝায়!
সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রার উষ্ণতার পর্যায় স্প্যানিশ ভাষায় ‘এল নিনো’কে ‘বালক’ এবং শীতল পর্যায় ‘লা নিনা’ নামে পরিচিত। ‘লা-নিনা’ শব্দের অর্থ শিশুকন্যা। এটি ‘এল-নিনো’-র বিপরীত অবস্থা।
বায়ু সঞ্চলনের স্বাভাবিক অবস্থান প্রশান্ত মহাসাগরে অক্ষরেখা বরাবর বাতাস পূর্ব দিকের উচ্চচাপ বলয় থেকে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়। এই অবস্থায় সমুদ্রের পৃষ্ঠের উজ্জ্বলতা স্বাভাবিক অবস্থা অপেক্ষা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গেলে পেরু-চিলি উপকূল বরাবর যে শীতল সমুদ্রস্রোত প্রবাহিত হয়, তাকে ‘লা-নিনা’ বলা হয়।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাবল নিউজ নেটওয়ার্ক- সিএনএন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদন বলা হয়, এবার দুর্বল ‘লা নিনা’ বয়ে যাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর দিয়ে। এর প্রভাব পড়বে তাপমাত্রাসহ বরফ আচ্ছাদনের পরিমাণের ওপরও।
২০২৩ সালের নিনার উষ্ণতা ৪৮ ডিগ্রির চেয়ে কম ছিল। এটি ছিল সবচেয়ে বেশি উষ্ণতার রেকর্ড। জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার লা নিনা ও লা নিনোর ওপর প্রভাব বিস্তারের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। উষ্ণতার কারণে উত্তর-পূর্ব ও মধ্যপশ্চিমে বরফের খরা তৈরি করেছে। সে কারণে পায়ের তলায় বরফের আস্তরণ ছিল কম।
এবারের লা নিনা সম্পর্কে ক্লাইমেট প্রেডিকশন সেন্টার জানিয়েছে, এবারের নভেম্বর মাস ধরে লা নিনা প্রবাহের সম্ভাবনা শতকরা ৬০ শতাংশ। যদি তাই-ই হয়, এবারের ‘লা নিনা’ পরবর্তী বসন্ত পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
‘লা নিনো’ ও ‘লা নিনা’ শুধুমাত্র ঋতু বা এলাকার ওপর নির্ভর করে না। এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীতকালের আবহাওয়ার ওপরও নির্ভর করে। এ অঞ্চলে এটি কতটা শক্তিশালী হিসেবে প্রবাহিত হবে, তার ওপরও নির্ভর করে।
যেহেতু, ‘লা নিনা’ এবার কতটা শক্তিশালী হবে, সে বিষয়ে এখনো পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এবারের ‘লা লিনা’ আরো দুর্বল হবে।
ধারণা করা হচ্ছে, এবারের ‘লা নিনা’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাংশ আরো বেশি আর্দ্রতার ভেতর দিয়ে যাবে। বিশেষ করে উত্তরপশ্চিম প্রশান্তরীয় অঞ্চলে বেশি আর্দ্রতা বিরাজ করবে। সেইসঙ্গে মধ্যপশ্চিম এবং উত্তরপশ্চিমের প্রান্তেও একই অবস্থা বিরাজ করবে। মধ্যপশ্চিম জুড়ে শুষ্ক ও খরার প্রবণতা বজায় থাকবে।
এছাড়া এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুরো উত্তরাঞ্চল স্বাভাবিকের চেয়ে আরো বেশ উষ্ণতার ভেতর দিয়ে পার করবে। তারমানে পুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের অর্ধেক ও পূর্ব দিকে বেশি উষ্ণতা বিরাজ করবে এবারের শীতে।
এর প্রভাব
এই আবহাওয়ার কারণে পূর্বাঞ্চলের আবহাওয়া শীতের তীব্রতা দিয়ে শুরু হবে এবং শেষ হবে উষ্ণতার মধ্য দিয়ে। কিন্তু দক্ষিণে স্বাভাবিকের চেয়ে আরো বেশি শুষ্ক ও খরাপ্রবণ পরিবেশ বিরাজ করবে। এই দুই অবস্থার কারণে স্বাভাবিক আবহাওয়ার চেয়ে উষ্ণতা ও শীত দুটোই বয়ে যাবে শীতকালে।
তবে আসন্ন শীতকালে লা নিনা চলাকালে ক্যারোলিনার উত্তরাংশে বেশি আর্দ্রতা বজায় থাকবে। এটাই জানিয়েছে, ক্লাইমেট প্রেডিকশন সেন্টারের আবহাওয়ার পূর্বাভাস।
এক বয়স্ক দম্পতির নাচ ঝড় তুলেছে ইনস্টাগ্রামে। এই দম্পতি ভারতের একটি রাজ্যের এক উৎসবে স্থানীয় রীতির পোশাক পরে তালে তালে পা মিলিয়ে এমনভাবে নেচেছেন যে, তা দেখে কোটি মানুষ বিস্মিত হয়েছেন!
এমন নিখুঁত এবং তালে তালে পা মেলানো একমাত্র যারাই নিয়মিত অনুশীলন করেন, একমাত্র তাদের পক্ষেই সম্ভব এত নিখুঁত ও এত সুন্দর করে নাচতে পারা।
ইতোমধ্যে, লাখ লাখ মানুষ তাদের সেই মনকাড়া ভিডিও দেখেছেন এবং এখনো অনেকেই সে ভিডিও দেখেই চলেছেন।
ভিডিওর লিংক -দম্পতির নাচ ঝড় তুলেছে ইনস্টাগ্রামে
শনিবার (১২ অক্টোবর) ভারতের টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভি এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করে।
খবরে বলা হয়, সম্প্রতি, গুজরাটের এক বয়স্ক দম্পতি রাজ্যের একটি উৎসব নভরাত্রির অনুষ্ঠানে এমন দুর্দান্ত তালে তালে পা মিলিয়ে এবং নিখুঁতভাবে নেচেছেন যে, যারাই তাদের সেই নাচ দেখেছেন, তারাই মন্তব্য করেছেন- বয়স একটি সংখ্যামাত্র!
ওই দম্পতির নাম জানা না গেলেও বলা হয়, তাদের সেই দানদিয়া নৃত্য পরিবেশনা ছিল অতুলনীয়! সে কারণে ভিডিওটি এত ভাইরাল হয়ে যায়।
ইনস্ট্রাগ্রামের প্রভাবশালী সেলিব্রেটি তানিশ শাহ এই ভিডিটিও পোস্ট করেন। এরপর এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩৪ লাখ দর্শক ভিডিও ডান্সটি দেখেছেন। শুধু তাই-ই নয় প্রতিনিয়ত এর দর্শক সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েই চলেছে।
শারদীয় দুর্গা উৎসবে মেতেছে দেশ। তিথি অনুযায়ী আশ্বিন মাসের দেবীপক্ষ অর্থাৎ, শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী সনাতন ধর্মীরা দুর্গাপূজা উদযাপন করে। বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এটিই সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। নানা আয়োজনে সারাদেশে পূজা উদযাপন করা হয়।
আজ শুক্রবার (১১ অক্টোবর) পুজোর ৩য় দিন। দেখতে দেখতে মহাষ্টমী তিথি শেষ হয়ে সন্ধিক্ষণে সন্ধিপূজার মাধ্যমে নবমী তিথির সূচনা হয়েছে। নবমী বলতেই মনে আসে ধুনুচি নাচের কথা। সাধারণত মহানবমী তিথিতে পূজার পরে এই ধুনুচি নাচ নাচা হয়। দেবী দুর্গাকে ধুনুচি নাচ উৎসর্গ করা হয়। অনেক স্থানে দশমীতে প্রতিমা ভাসানের আগেও ধুনুচি নাচ করা হয়।
ঢাকের তালে দেবীর সামনে ধুনুচি হাতে নিয়ে সুশৃঙ্খলে করা হয় এই ধুনুচি নাচ। ধুনুচিতে নারকেলের খোসা জ্বালিয়ে তাতে ধুপ ছিটিয়ে তৈরি করা হয় ধোঁয়া। এক বা একাধিক ধুনুচি হাতে নিয়ে ঢাকের আওয়াজের আন্দোলনে নাচে মেতে ওঠে লাল-সাদা সাজে বাঙালি নারী-পুরুষ।
দুর্গাপূজা মানেই শিউলি ও কাশফুল, শরতের আকাশ, ঢাকের বাদ্য। তার সাথে উলুধ্বনি, ঘণ্টা ও শাঁখের আওয়াজ, আনন্দ উদযাপন এবং তার সাথে ধুনুচি নাচ। বাঙালির দুর্গাপূজার অতি প্রাচীন ঐতিহ্যসম্পন্ন ধুনুচি নাচ ছাড়া যেন পূজাই অসম্পন্ন। চণ্ডীপাঠ, দেবীর ব্র্রতকথা, অঞ্জলি প্রদান, আরতি, পূজা-অর্চনার মাধ্যমে দুর্গাপূজা করা হয়। তবে এসব তো পুজোর নিয়মের অংশ। পুজো মানেই আনন্দ উৎসব। তাই আনন্দ প্রকাশ করে দেবীর উদ্দেশ্যে সঙ্গীত আরাধনা, সিঁদুর খেলার পাশাপাশি ধুনুচি নাচ করারও প্রচলন রয়েছে।
এই ধুনুচি নাচের উল্লেখ পুরাণেও রয়েছে। ধারণা করা দেবী দুর্গা নিজেই ধুনুচি নাচ নেচেছিলেন। মহিষাসুরকে বধ করার আগে নিজের মধ্যে সর্বোচ্চ শক্তি সঞ্চার করার জন্য দেবী ধুনুচি নাচ করেন। দেবীর প্রতি সমগ্র একাগ্রতা নিবেদন করতে আজও ভক্তরা ধুনুচি নাচ করেন। বিভিন্ন জায়গায় একক বা দলীয়ভাবে ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়।
সময়ের সাথে ধুনুচি নাচের প্রচলন কমে আসছে। তবে এখনো দুর্গাপুজো এলেই ছোট-বড় সকলে মিলে ধুনুচি নাচ নাচা হয়। কালের গর্ভে এই ঐতিহ্য যেন হারিয়ে না যায়, সেজন্য অবশ্যই ধুনুচি নাচের চর্চা বাড়ানো উচিত। এতে পুজোর আনন্দ দ্বিগুণ হয়। ধুনুচি নাচ ছাড়া দুর্গাপূজা যেন অসম্পূর্ণ।
আশ্বিনের মাসের দেবীপক্ষে সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। শারদীয় দুর্গাপূজার ৩য় দিন আজ শুক্রবার (১১ অক্টোবর)। দুর্গোৎসবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন মহাঅষ্টমী।
বসন্তে দেবী পূজার প্রচলিত নিয়ম ভেঙ্গেছিলেন মহাপুরুষ শ্রীরাম। রাবণকে বধ করার উদ্দেশ্যে শরতে দেবীর অকালবোধন করেন তিনি। সেই থেকে শরতেই দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়।
আশ্বিনের শুক্লাষ্টমীকে বিশেষ মাহেন্দ্রক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এইদিনে ১০৮টি পদ্মফুল উৎসর্গ করা হয় দেবীর পায়ে। জ্বালানো হয় ১০৮টি ঘিয়ের প্রদীপ। অষ্টমী আর নবমী তিথির শুভ সন্ধিক্ষণ অবধি দেবীর পুজো চলতে থাকে। এই ক্ষণকে বলে সন্ধিক্ষণ। কেননা, অষ্টমী তিথির অন্তিম এবং নবমী তিথির প্রারম্ভের সম্মলনের সন্ধিঘটে এই বিশেষ ক্ষণের। তাই এই সন্ধিক্ষণে বিশেষ সন্ধিপূজা হয়। চণ্ডীপাঠ, শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাদ্যি, উলুধ্বনি, ঘণ্টা- সব মিলিয়ে চারদিক মুখোরিত হয় দুর্গা আরাধনায়।
সনাতন ধর্মালম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী আজকের দিনেই দেবীদুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। অষ্টমী তিথিকে সকল দেবতাগণ অসুর বধে সাহায্য স্বরূপ দেবীকে নানাবিধ অস্ত্র উপহার দেন। দেবীর দশ হাত দেবতাদের বিশেষ শক্তিসম্পন্ন অস্ত্রে পরিপূর্ণ হয় ওঠে। অসুর বিনাশী দেবী দুর্গার মাহাত্ম্যকে স্মরণ করে আজ মহোৎসব পালন করে ভক্তরা।
এছাড়াও আরও কিছু কারণে অষ্টমী পুজোর দিন অন্যান্য দিনের চেয়ে বিশেষত্ব পায়। আজকে দিনে কুমারীপূজা করা হয়। অনূর্ধ্ব ১৬ বছর বয়সী কোনো বালিকা বা কিশোরীকে দেবী জ্ঞানে পূজা করার এই রীতিই মূলত কুমারী পূজা। প্রতিটি নারীই দেবীর অংশ, তাদের দেবীজ্ঞানে শ্রদ্ধাভক্তি প্রদান করা উচিত- সেই বার্তা প্রচার করা এবং শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয় কুমারী পুজার মাধ্যমে।