শীতের সৌন্দর্যে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে গাঁদা ফুল

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল, এনে দে! নইলে, বাঁধবো না বাঁধবো না চুল- গাঁদা ফুল নিয়ে প্রেম ও প্রকৃতির কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই গানটি শোনেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন।

শীতের সকালে প্রকৃতি যখন শীতের চাদর মুড়িয়ে থাকে তখন গাছে উঁকি দেয় গাঁদা ফুল। হলুদ গাঁদা, কমলা গাঁদা সহ নানান রঙের গাঁদা ফুল। গ্রামের বিভিন্ন বাড়ির উঠানে, এমনকি শহরে বাড়ির ছাদে বা বারান্দার, অফিসের টবে দেখা যায়।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, গাঁদা বা গন্ধা (গেন্ধা) একটি সুগন্ধী ফুল যা সর্বত্র সহজে হয়ে থাকে এবং গৃহসজ্জায় ব্যবহৃত হয়। গাঁদার ইংরেজি নাম Mariegold Flower. এটি Compositae পরিবারের একটি সদস্য। বৈজ্ঞানিক নাম Tagetes erecta। গাঁদা ফুল বিভিন্ন জাত ও রঙের হয়। এ ফুল সাধারণত উজ্জ্বল হলুদ ও কমলা হলুদ রঙের হয়ে থাকে। আমাদের দেশে চাইনিজ গাঁদা, রাজ গাঁদা, আফ্রিকান ও ফরাসি জাতের গাঁদা বেশি চাষ হয়।


বিবাহ, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, শহীদ দিবস, পূজাসহ বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান ও গৃহসজ্জায় এ ফুলের ব্যাপক ব্যবহার। বর্তমানে সৌখিন উৎপাদকের গন্ডি পেরিয়ে ফুলের ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে। এ ফুল এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানিও হচ্ছে। ১৯৯০ সাল থেকে গাঁদা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

ময়মনসিংহের ১৩ উপজেলা বাণিজ্যিকভাবে গাঁদা ফুল ও ফুলের চারার চাষ করছে। জেলার গফরগাঁও উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের রৌহা গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান প্রায় তিন একর জমিতে গড়ে তুলেছে 'চির সবুজ' নামে নার্সারী। এখানে রয়েছে বিভিন্ন জাতের গাঁদা ফুলের চারা। যেমন- ইনকা, গিনি গোল্ড, ইয়েলা সুপ্রিম, গোল্ডস্মিথ, ম্যান ইন দ্য মুন, মেরিয়েটা, হারমনি, লিজন অব অনার ইত্যাদি। এছাড়াও দেশীয় সাদা গাঁদা, জাম্বো গাঁদা, হাইব্রিড ও রক্ত বা চাইনিজ গাঁদা ফুলের চারা ও ফুল পাওয়া যায় । চারা ও ফুল বিক্রি করে তিনি অনেক লাভবান হয়েছেন। পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলা থেকে ক্রেতারা ফুল ও ফুলের চারা ক্রয় করে। শীতকালে ৫/৬ লক্ষ টাকার ফুল গাছ বিক্রি করে।


নার্সারী থেকে চারা নিতে আসা রাজীব আহমেদ বলেন, গাঁদা ফুল শীতকালীন ফুল। দেখতে খুব সুন্দর গন্ধটা খুব ভালো লাগে। এজন্যই নার্সারী থেকে আমার ছাদ বাগানের সৌন্দর্যটা বাড়ানোর জন্য চারা নিতে আসা।

নার্সারী দেখতে আসা তানিয়া আক্তার বলেন, ফুলকে ভালোবাসে না এমন কেউ নেই। একসাথে অসংখ্য গাঁদা ফুল গাছ। প্রত্যেকটা গাছেই ফুল ফুটেছে। মনোমুগ্ধকর একটা পরিবেশে। সে জন্যই দেখতে আসা ও ছবি তুলা।


চির সবুজ নার্সারী মালিক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার নার্সারীতে বিভিন্ন প্রকারের ফুল-ফল, ঔষধ, কাঠ, গাছের চারা রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শীতকালীন ফুল গাঁদা হলুদ, সোনালী, কমলা, চায়না ও সাদাসহ বিভিন্ন প্রকারের গাঁদা। গাঁদার জন্য আমার বাগান অনেক পরিচিত। শীতকালে আমার বাগানের ভালো একটা মুনাফা পাই গাঁদা ফুল ও চারা বিক্রি করে। আমার বাগানে ১০-১২ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করে। এছাড়াও শীতকালের সকল ফুলের চারা পাওয়া যায় আমার নার্সারীতে।