উল্লাসে রিপাবলিকান শিবির, হতাশায় ডেমোক্রেটরা
হাতি-গাধার লড়াই ২০২৪মার্কিন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে চলছে ভোটগণনা। এর মধ্যেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, কমলার চেয়ে ট্রাম্পের এগিয়ে থাকার খবর উঠে এসেছে। এছাড়াও ফল প্রভাবক হিসেবে বিবেচিত হওয়া ৭টি রাজ্যের মধ্যে দুই রাজ্যের প্রকাশিত ফলেই রিপাবলিকানদের জয়ধ্বনি। এতে ট্রাম্পপন্থীদের মধ্যে চলছে উল্লাসের প্রস্তুতি। অন্যদিকে ডেমোক্রেটরা পড়েছেন হতাশায়।
দ্য গার্ডিয়ানের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্প ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা ২৪৭টি। অপরদিকে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ২১৪টি ভোট। উল্লেখ্য, হোয়াইট হাউজের নেতৃত্বের জন্য প্রয়োজন ২৭০ ইলেক্টোরাল ভোট। সেক্ষেত্রে ট্রাম্পের আর প্রয়োজন ২৩টি আর হ্যারিসের প্রয়োজন ৫৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট।
গার্ডিয়ানের হিসেব বলছে, প্রাপ্ত ভোটের হার বেড়েছে কমলার। আপাতত ৪৭ শতাংশ। ট্রাম্পের কমে দাঁড়িয়েছে ৫১ শতাংশ।
এদিকে বিবিসির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুইং স্টেট জর্জিয়া ও নর্থ ক্যারোলিনায় জয় পেয়েছেন ট্রাম্প। এই দুই রাজ্যেটিতে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ৩২টি।
এছাড়াও ট্রাম্প বাকি সুইং স্টেট পেনসিলভানিয়া, অ্যারিজোনা এবং উইসকনসিনে এগিয়ে রয়েছেন। অন্যদিকে কমলা শুধু মিশিগানে এগিয়ে। আর নেভেদায় এখনো দোদুল্যমান। তবে এমন পরিস্থিতিতে এই রাজ্যেগুলো কার পক্ষে যায় তা এখনই বলা যাবে না। এজন্য অপেক্ষা করতে হবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। কেননা ভোটের মাঠে যেকোন কিছু হতে পারে।
বিবিসি জানায়, জয়ী হওয়ার পর খুব শীগগিরই ডোনাল্ড ট্রাম্প ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচের ওয়াচ পার্টিতে আসবেন এবং তিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তৃতা দেবেন। ইতোমধ্যেই সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। এই পার্টিতে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক, ট্রাম্পের রাজনৈতিক সঙ্গী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র এবং তুলসি গ্যাবার্ড উপস্থিত থাকবেন।
এর মধ্যেই সমর্থকরা বাইরে জড়ো হতে শুরু করেছে বলেও জানায় গণমাধ্যমটি।
এদিকে বিবিসি আরেক প্রতিবেদনে জানায়, প্রায় ৩০ মিনিট আগে হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির কেন্দ্রে অবস্থিত মাঠটি কমলা হ্যারিসের শত শত সমর্থকরা উদযাপনের জন্য প্রস্তুত ছিল। কিন্তু নর্থ ক্যারোলিনা ও জর্জিয়ার ফল আসার পরই তারা স্থানটি ত্যাগ করতে শুরু করে। তাদের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা অস্বীকার জানান। কারণ তারা মনে করছেন হ্যারিসের জয়ের সম্ভাবনা কমে গেছে।
ট্রাম্পের মতো হ্যারিসেরও নিজ ডেরা নিউইয়র্কে বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু হ্যারিসের প্রচারণায় অংশ নেয়া এক সিনিয়র সদস্য জানান, হ্যারিস আজ রাতে এখানে আসবনে না।
তিনি বলেন, দোদুল্যমান রাজ্যেগুলোর মধ্যে দুটি রাজ্যের ফল আসার পরই সমর্থকরা হতাশায় পড়ে যায়। তারা স্থানটি ছেড়ে চলে যেতে থাকে। এটি এখন প্রায় খালি। এখানে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিলো হ্যারিসের। কিন্তু তিনি আর আসবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
কমলা হ্যারিস-ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়াও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গ্রিন পার্টির জিল স্টেইন, লিবারটারিয়ান পার্টির চেইস অলিভার, স্বতন্ত্র প্রার্থী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র (নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলেও এখনো বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যের ব্যালটে তার নাম রয়েছে) ও করনেল ওয়েস্ট (স্বতন্ত্র) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উল্লেখ্য, ৫ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হলেও ২৭ অক্টোবর থেকে আমেরিকায় শুরু হয়েছে আগাম ভোটপর্ব। ইতোমধ্যে দেশটির প্রায় ৮ কোটি বেশি ভোটদাতা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন। আমেরিকায় ভোট দেওয়ার যোগ্য নাগরিকের সংখ্যা ২৩ কোটির বেশি। এ বারের নির্বাচনে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। সর্বশেষ ২০২০ সালের নির্বাচনে ভোট পড়ার হার ছিল ৬৬ শতাংশ, যা ছিল গত এক শতকের মধ্যে সর্বোচ্চ। সে বার আগাম ভোট পড়েছিল প্রায় ১০ কোটি।