নির্যাতিত লাখো মানুষের কাছে ক্ষমা চাইলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সন

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সন

সরকার ও গীর্জাশিবিরে হেনস্তা আর নির্যাতনের শিকার হওয়া লাখো মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সন। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।

সংবাদ মাধ্যম সিএনএন জানায়, মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টের গ্যালারিতে বসেছিলেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। যারা গত ৭০ বছর ধরে নির্যাতিত, নিপীড়িত হয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেছেন। এসব মানুষ সরকারি এবং চার্চের আশ্রয়শিবিরে মানবিক সহায়তা চাইতে গিয়ে হেনস্তা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের সরকার এই অভিযোগ নিয়ে একটি কমিশন গঠন করেছিল। কমিশনের রিপোর্টে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন অত্যাচার বা হেনস্থার শিকার হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

মূলত যারা এই অভিযোগ করেছিলেন, তাদের অধিকাংশই নিউজিল্যান্ডের জনজাতি গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। এই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হলে মঙ্গলবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে সবার সামনে ক্ষমা চান। প্রধানমন্ত্রী লুক্সন বলেন, এটা ভয়ঙ্কর ছিল এবং হৃদয়বিদারক ছিল। এটা ভুল ছিল। এমন ঘটনা যাতে আর কখনোই না ঘটে, সে দিকে নজর দেওয়া হবে। যে ঘটনা ঘটেছে, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে।

নির্যাতিতদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী লুক্সন বলেন, কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষীদের চিহ্নিত করা হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর কখনও না ঘটে, তার ব্যবস্থা করা হবে।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, নির্যাতিতদের অভিযোগ অনুযায়ী ১৯৫০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে তদন্ত করেছে কমিশন। বলা হয়েছে, অন্তত ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ অত্যাচার ও হেনস্থার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে প্রচুর শিশু রয়েছে। তাদের ওপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার হয়েছে। অনেক শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

বহু শিশুকে সম্পূর্ণ অকারণে তাদের মায়েদের থেকে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে জোর করে। শিশুদের অন্য লোকের কাছে দত্তক হিসেবে পাঠানো হয়েছে। শিশু এবং নারীদের ওপর যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়েছে।

সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয়, সরকারি ও গির্জার আওতাধীন প্রতিষ্ঠানে এসব ঘটনা ঘটায় অনেকে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারেননি।

কমিশনের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মূলত বর্ণবাদের কারণে এসব অত্যাচার চালানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন মাওরি জাতিগোষ্ঠীর মানুষ।