আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার সহায়তাভোগী বিভিন্ন দরিদ্র দেশে এইচআইভি, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়ার মতো রোগের জীবনরক্ষাকারী ওষুধ এমনকি নবজাতকদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বার্তাসংস্থা রয়টার্স একটি স্মারকলিপি (মেমো) পর্যালোচনা করে একথা জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ইউএসএইড এ কাজ করা ঠিকাদার ও অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলো তাৎক্ষণিকভাবে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ সম্বলিত স্মারকলিপি পাওয়া শুরু করে। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে ইউএসএইড এর সব প্রকল্পের কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেয়।
গত সোমবার ট্রাম্প প্রশাসন এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে, ইউএসএইড এর প্রায় ৬০ জন জ্যোষ্ঠ কর্মকর্তাকে বেতনসমেত ছুটিতে পাঠিয়েছে।
ইউএসএইড এর সঙ্গে কাজ করা শীর্ষ পর্যায়ের মার্কিন পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান কেমোনিক্সও এমন একটি স্মারকলিপি পেয়েছে। কেমোনিক্স ইউএসএইড এর সঙ্গে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন রোগের ওষুধ সরবরাহে কাজ করে।
ইউএসএইড এর এক বর্তমান ও এক সাবেক কর্মকর্তা জানায়, স্মারকে এই প্রতিষ্ঠানটির এইচআইভি/এইডস, ম্যালেরিয়া এবং যক্ষ্মার পাশাপাশি গর্ভনিরোধক, প্রসূতি ও শিশুস্বাস্থ্য সরঞ্জাম সরবরাহের কাজ বন্ধেরও নির্দেশ আছে।
চলতি মাসে ইউএসএইড এর বিশ্ব স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান পদ থেকে সরে দাঁড়ানো অতুল গাওয়ান্দে বলেন, “এটি বিপর্যয়কর। ওষুধ সহায়তা সরবরাহের মাধ্যমে এইচআইভি আক্রান্ত ২ কোটি মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছিল। তাও বন্ধ হয়ে গেল।”
গাওয়ান্দে আরও জানান, একই ধরনের নোটিশ অন্য অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলোও পেয়েছে। যার মানে, ওষুধের মজুত থাকার পরও এই প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ক্লিনিকে তা সরবরাহ করতে পারবে না। আর ক্লিনিকগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে চললে সেগুলো চালুও থাকতে পারবে না।”
অতুল গাওয়ান্দে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত হওয়ার মানে রোগীরা অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকবে। আর বিশেষ করে এইডস/এইচআইভির ক্ষেত্রে অন্যদের মধ্যে তা ছড়ানোর আশঙ্কা বেড়ে যাবে। তাছাড়া রোগগুলোর ওষুধ-প্রতিরোধী নতুন ধরনের প্রাদুর্ভাবও হতে পারে।” এইসব প্রতিষ্ঠানগুলো, প্রায় ২৩টি দেশে ৬৫ লাখ এতিম ও এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের নিয়ে কাজ করছে বলে জানান গাওয়ান্দে।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধেও কেমোনিক্স ও ইউএসএইড তাৎক্ষণিক কোনও সাড়া দেয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিশ্বজুড়ে মার্কিন সহায়তা ও অর্থায়ন ৯০ দিনের জন্য স্থগিতের নির্বাহী আদেশ দেন। সেই আদেশের আওতায়ই আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার সহায়তাভোগী বিভিন্ন দরিদ্র দেশে এইচআইভি, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়ার মতো রোগের জীবনরক্ষাকারী ওষুধ এমনকি নবজাতকদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।