বায়তুল মোকাররমকে দৃষ্টিনন্দন মসজিদে রূপান্তর করা হবে: ধর্ম উপদেষ্টা
বায়তুল মোকাররমকে দৃষ্টিনন্দন মসজিদে রূপান্তর করা হবে। এ লক্ষ্যে শতকোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। একনেকের অনুমোদন পেলে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদটিকে মসজিদে নববির আদলে নতুনভাবে তৈরি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কুয়েত চ্যারিটি হতে প্রাপ্ত ১০ কোটি টাকা তহবিলে জমা আছে। এ টাকা দিয়ে কাজ শুরু করা হবে। এর অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন হলে স্থানীয়ভাবে সেটা সংগ্রহ যাবে।
প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, নিজেকে যোগ্য ও দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং দক্ষতা শাণিত হয়। এ কারণে প্রশিক্ষণের প্রতি মনোযোগী হতে হবে। প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীদেরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
ড. খালিদ বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে যারা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকে তাদেরকে ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে। এখন থেকে ঋণ নিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ ট্রাস্টের ঋণ আদায়ের হার শতভাগ, কোনো খেলাপী ঋণ নেই।
ড. খালিদ আরো বলেন, ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য একটি বেতনস্কেল তৈরি করছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সরকারি কিংবা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মসজিদগুলোতে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন কাঠামোতে তারতম্য রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের ইমামের বেতন-ভাতা সমান নয়। এ কারণে ২০১৫ সালের সরকারি বেতনস্কেলকে সামনে রেখে ইউনিফাইড (একীভূত) বেতন কাঠামো তৈরি করা হবে। এ বিষয়ে কাজ চলছে। যথাদ্রুত সম্ভব বেতনস্কেল প্রস্তুত করে মন্ত্রিপরিষদে পেশ করা হবে এবং মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদনক্রমে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। বেসরকারি যেসব মসজিদের তহবিলে টাকা আছে তাদেরকে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এই বেতনস্কেল বাস্তবায়নে অনুরোধ করা হবে। এর মধ্য দিয়ে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে।
ইমাম-মুয়াজ্জিনদের উদ্দেশে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আপনারা হলেন তৃণমূল পর্যায়ে ইসলামের প্রতিনিধি। আপনারা সামাজিক শক্তির প্রতিভূ। এই সামাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব হলে দেশের জন্য বড় ধরণের ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।
জাকাত বোর্ডের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, জাকাত বোর্ড পুনর্গঠণ করা হয়েছে। এ বছর জাকাত বোর্ড হতে ১১ কোটি টাকা গরীব-দুস্থদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। আগামী বছর জাকাত আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা ২৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। উপদেষ্টা সরকারি জাকাত ফান্ডে জাকাতের অর্থ প্রদানে আহ্বান জানান।
জেলা প্রশাসক বরিশাল মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন পুলিশ সুপার মো. শরিফ উদ্দিন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গর্ভনর সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি এবং মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক কৃষিবিদ নূরুল ইসলাম প্রমুখ।
এ অনুষ্ঠানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত ইমাম-মুয়াজ্জিন ও মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের শিক্ষকমন্ডলিসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।