লক্ষ্মীপুর আদালতে আয়নাবাজি

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করে হত্যাচেষ্টা মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের জামিন করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুর জজ কোর্টের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে।

প্রতারণার এ বিষয়ে ওই মামলার বাদী শামছুর নেছা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনায় জড়িতদের বুধবার (৮ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইসমাইলের আদালতে হাজির করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বাদীর আইনজীবি মো. রায়হান ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় বিজ্ঞ আদালত সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর লিখিতভাবে ব্যাখ্যাও জানতে চেয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার মোরশেদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের একটি মারামারি-হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি সজিব ও সাইফুল ইসলাম শুভ বিদেশে রয়েছে। অথচ তাদের নাম-পরিচয় ব্যবহার করে ভিন্ন দুই ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করে বেআইনিভাবে জামিন করানো হয়েছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. লুৎফুর রহমান রহিম গাজী।

লিখিত ব্যাখ্যায় আদালতকে তিনি জানান, আইনজীবীর সহকারী আবুল কাশেমের পরামর্শে মামলার ২ ও ৪ নম্বর আসামি প্রবাসে থাকার বিষয়টি গোপন রেখেছে অন্যান্যরা। ওই বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না এবং তার সংশ্লিষ্টতা ছিল না। বিষয়টি নিয়ে তিনি আদালত, আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। 

আদালত ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের সোন্দড়া গ্রামের আবদুল খালেকদের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে তাজুল ইসলাম খোকাদের জমিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে ২০২৩ সালে আদালতে মামলা হয়। ২০২৪ সালের ১৯ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামান আদালতে চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তারা হলেন তাজুল ইসলাম খোকা, সজীব, আনোয়ার হোসেন ও সাইফুল ইসলাম শুভ। এদিকে ঘটনা পর আসামি সজিব সৌদি আরব ও সাইফুল কাতার চলে যায়।

অন্যদিকে, গেল বছরের ৩০ জুন আসামি খোকা ও আনোয়ার জামিন নেয়। তখন সজিব ও সাইফুলের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালতের বিচারক। আসামিরা বিদেশে রয়েছেন। কিন্তু গত ৬ নভেম্বর মামলার ২ ও ৪ নম্বর আসামির স্থলে ভিন্ন ব্যক্তিদের রামগঞ্জ আমলী আদালতে উপস্থিত করা হয়। পরে আদালত তাদেরকে জামিনে মুক্তির আদেশ দেয়। তবে আদালতে উপস্থিত করা ভূয়া ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। 

ঘটনাটি জানতে পেরে গত ৮ ডিসেম্বর বাদী শামছুর নেছা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি সজিব ও সাইফুলকে স্বশরীরে হাজির হওয়ার জন্য ও তাদের জামিনের আদেশ বাতিল করতে আবেদন করে। একইসঙ্গে আসামিদের নিযুক্ত কৌশুলী ও স্থানীয় জামিনদারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রার্থনা জানিয়েছেন।

এতে আদালতের বিচারক ঘটনাটি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চায়। পরে ২৯ ডিসেম্বর আসামিদের আইনজীবী রহিম গাজী আদালতে লিখিত ব্যাখ্যা দেন। একই ব্যাখ্যা আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে দিয়েছেন।

এতে তিনি জানান, আইনজীবী সহকারী আবুল কাশেম দুইজন লোককে এনে আসামি হিসেবে আদালতে উপস্থিত করায়। পরে তাদেরকে জামিন করানো হয়। তিনি আসামিদেরকে চিনতেন না।