ঘরের মধ্যে বায়ুদূষণ হয় যেসব কারণে
আমাদের পরিবেশ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচে্ছ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই পরিবর্তন গুলো নেতিবাচক। বিশেষ করে পরিবেশের প্রাকৃতিক উপাদানের ক্ষতি বেড়ে চলেছে। দিন দিন পানিদূষণ, মাটিদূষণ বেড়েই চলেছে। তবে সবচেয়ে বেশি আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে বায়ুদূষণ। মানুষ ছাড়াও অধিকাংশ প্রাণীর জন্য বায়ু অত্যন্ত জরুরি প্রাকৃতিক উপাদান। স্থলজ প্রাণীরা বায়ুর অক্সিজেন ছাড়া বাঁচতেই পারবে না। বায়ুদূষণ মানে, প্রাণী শরীরে ক্ষতি করতে পারে এমন বায়বীয় পদার্থের তুলনামূলক আধিক্য।
মূলত মানব সৃষ্ট বিভিন্ন কারণেই বায়ুদূষণ হয়। আমরা যে কেবল পরিবেশের বায়ু অতিরিক্ত মাত্রায় দূষিত হওয়ার কারণ, তা নয়! ঘরের মধ্যের নিরাপদ পরিবেশের বায়ুও অজান্তে নানাভাবে দূষিত করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত।
পরিবেশের বায়ুদূষণ রোধকরা কষ্টসাধ্য হলেও ঘরের মধ্যের বায়ুদূষণ কমিয়ে আনা উচিত। বায়ুদূষণের ফলে নানারকম রোগ হতে পারে, যা বাতাস দূষণ হওয়া রোধ করার মাধ্যমে আশঙ্কা কমিয়ে আনা যায়। সেক্ষেত্রে করণীয়-
১. দূষণের উৎস: ঘরের বায়ুদূষণের উৎসগুলো আগে খুঁজে বের করতে হবে। রান্নার তেল, কীট-পতঙ্গ দূর করার কয়েল ও মোম অথবা রাসায়নিক পদার্থসম্পন্ন ঘর পরিষ্কার করার সামগ্রী ব্যবহার করলে তার মাধ্যমে ঘরের ভেতরের বায়ু দূষিত হতে পারে। এসব থেকে বাতাসে ফরমালডিহাইড, ভোলাটাইল অর্গানিক কম্পাউন্ডস, ২.৫ এবং ১০ পিএম পার্টিকুলেট ম্যাটার নিঃসৃত হয়। এর ফলে ঘরের মধ্যের বাতাসের দূষণমাত্রা বাইরের বাতাসের চেয়েও বেড়ে যেতে পারে।
২. বায়ু চলাচল: ঘরের মধ্যে বাইরে থেকে আলো-বাতাস আসা-যাওয়ার ভালো ব্যবস্থা থাকতে হবে। সূর্যরশ্মির উপস্থিতিতে গ্রিনহাউজ গ্যাসের প্রভাব কম বিস্তার লাভ করে। অনেকে দরজা- জানালা খুব একটু খুলতে পছন্দ করেন না, বিশেষ করে শীতকালে। ঘর এরকম বন্দি অবস্থায় থাকলে বাতাসের ক্ষতিকর উপাদান, যেমন কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণে বেড়ে যায়। বাইরের বাতাসের সাথে আদান-প্রদানের সুযোগ থাকলে বায়বীয় উপাদানের ভারসাম্য বজায় থাকে।
৩. ধূমপান: আমাদের দেশে ঘরোয়া বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ ধূমপান করা। সিগারেটে অনেক ক্ষতিকর উপাদান থাকে। বাড়ি বা গাড়ির মতো বদ্ধ স্থানে ধূমপান করার ফলে ওই স্থানের বাতাস দূষিত হয়ে যায়।
৪. বায়ু নিষ্কাশন ব্যবস্থা: বর্তমানে বাসাবাড়িতে চিমনি, এসি, এয়ারকুলার ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এইসব যন্ত্র ঘরের মধ্যের প্রাকৃতিক বায়ু অবস্থা বিরাজ করতে বাঁধা প্রদান করে। তাছাড়া ঘরের মধ্যে এসব উপকরণের ফলে ধূলাবালি বদ্ধ অবস্থায় থেকে যায়, যা বায়ুদূষণের কারণ।
৫.ফেসমাস্ক: করোনা মহামারির সময় বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসচেতনতা অনেক বেড়ে গিয়েছিল। বাইরে গেলে সকলে মাস্ক পড়ে বের হতো। এখন আবার মাস্কের ব্যবহার কমে গেছে। শুধু ঘরেই বায়ুদূষণের ফলে স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়ে এমনটা নয়। বাইরের বাতাসেও ধূলা-বালিসহ ক্ষতিকর অনেক দূষিত পদার্থে থাকে। তাই বাইরে বের হলেও মাস্ক পড়তে হবে।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস