চসিকের সাবেক 'কাউন্সিলর লিটনের' গুদামে ৩ কোটি সিগারেট স্ট্যাম্প

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪. কম, চট্টগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরের রমনা আবাসিক এলাকার একটি ভবনের গুদাম থেকে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি অবৈধ সিগারেটের স্ট্যাম্প জব্দ করেছে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটে একটি দল।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল থেকে টানা প্রায় ৪ ঘন্টার বিশেষ অভিযানে ওই আবাসিকের আল ফরিদ ভবন থেকে এসব জব্দ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

কাস্টমস গোয়েন্দার তৎকালীন মহাপরিচালক ফখরুল আলমের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির অভিযানের আওতায় কাস্টমস ভ্যাট ও কাস্টমস গোয়েন্দা দল যৌথ এই অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে ভবনটির নিচতলায় থাকা গুদাম থেকে ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার পিস সিগারেট স্ট্যাম্প, ১৪৮টি সাদা বড় রোল, ৪২৫টি সাদা ছোট রোল, ১২৬টি কালো বড় রোল ও ১ হাজার ৩৭টি কালো ছোট রোল জব্দ করা হয়।

অভিযান ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গুদামটির মালিক চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সাবেক প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সবুর লিটন ও তার ভাই আবদুল মান্নান খোকন। গুদামের পাশের ভবন আপন নিবাসে উভয় ভাই বসবাস করতেন। লিটন ২৫ নম্বর রামপুরা ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে পড়ে প্যানেল মেয়র মনোনীত হয়েছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের মতো আবদুস সবুর লিটনও পলাতক রয়েছেন।

অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোছা. আয়শা সিদ্দিকা।

তিনি বলেন, সিগারেট তৈরির কাঁচামাল আমদানি ও এসবের আইনবহির্ভূত ব্যবহার এবং নকল সিগারেট উৎপাদনসহ এ খাতে বিদ্যমান অনিয়ম চিহ্নিত করতে ও নিবারণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এনবিআর একটি কমিটি গঠন করে। এ কমিটি রাজস্ব ফাঁকিসহ সিগারেট খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

সংস্থাটির এই উপ-পরিচালক আরও বলেন, জব্দ করা উপকরণ নকল সিগারেট তৈরিতে ব্যবহার হত এবং রাজস্ব ফাঁকিসহ সিগারেট খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সাথে জড়িত। মজুদকরণের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছে, জব্দ করা উপকরণ দিয়ে ওরিস ও ইজি লাইটসের মতো বিদেশি ব্র্যান্ডের সিগারেটের নকলসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিগারেট তৈরি করা হতো। আর তৈরি সিগারেট চট্টগ্রামের রিয়াজুদ্দিন বাজারসহ দেশেন বিভিন্ন শহরের বাজারগুলো বিক্রি করা হতো। দেশের অবৈধ সিগারেটের বাজারের একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করত আবদুস সবুর লিটন ও তার ভাই আবদুল মান্নান খোকনের মালিকানাধীন ‘বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো’ ও ‘তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো’ নামের দুই প্রতিষ্ঠান।

এসব কারখানায় প্রস্তুতকৃত সিগারেটে নকল ব্যান্ডরোল লাগানো হত। ভ্যাট গোয়েন্দা একটি টিম তদন্ত করে এসবের সত্যতা পেয়েছিলেন কয়েকবছর আগেই। তবে তৎকালীন আওয়ামী সরকারের এক মন্ত্রীর প্রভাবের কারণে শেষমেষ লিটনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি এনবিআর।