‘আ.লীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই, তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে’

  • স্টাফ করসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্নেল (অব.) অলি আহমদ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্নেল (অব.) অলি আহমদ

আওয়ামী লীগ দেশের ১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত। তাদের এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

এলডিপ সভাপতি কর্নেল অলি আহম্মেদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমন্ত্রণে আমরা আজকে দ্বিতীয়বার এসেছি, আলোচনাও করেছি, লিখিত প্রস্তাব দিয়েছি। প্রথমবার যখন এসেছি তখন ১০৩ টা প্রস্তাব দিয়েছি, আজকে আরও ২৩ টা প্রস্তাব দিয়েছি। আমাদের দল কাউকে সুবিধা দেওয়া জন্য বা কাউকে জেল থেকে মুক্তির জন্য কোনো প্রস্তাব দেয়নি। যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা বাংলাদেশের জনগণের প্রয়োজন। তার মধ্য সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন, সুন্দর প্রশাসন, ন্যায় বিচার ব্যবস্থা ও দ্রব্য মূল্যের দাম বাড়ার কারণে দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে- এই পয়েন্ট গুলো আমরা দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা পুরো জাতি জুলাই আগষ্টে একটা যুদ্ধের মধ্য গেলাম। এই যুদ্ধটা কার বিরুদ্ধে হলো? আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে। আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে যুদ্ধটা কেনো হলো? তারা অন্যায়ভাবে পুলিশকে ব্যবহার করেছে। প্রশাসনকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে। জনগনের সাথে মুখোমুখি করেছে। দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে, দেশ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে। জুলাই আগষ্টে আমাদের বহু ছেলে মেয়ে হতাহত হয়েছে। দেড় হাজারের উপরে আমাদের ছেলে মেয়ে মৃত্যু বরণ করেছে। অনেকে বলে আরও বেশি হবে যার কোন হিসেব নাই। অনেক লাশ পুড়িয়ে ফেলছে। ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ বিভিন্নভাবে আহত হয়েছে।

এলডিপ সভাপতি বলেন, ১৯৭১ সালে জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করছিল। পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সেদিন আমরা তাদের নিষিদ্ধ করেছিলাম। আজকে কি কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে না? আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ আওয়ামীলীগ ১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। তাদের রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সবাইকে ব্যবহার করেছে। শেষ পর্যন্ত তারা জনতার চাপে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি।

সংস্কার কমিশন নিয়ে অলি আহমদ বলেন, সংস্কার কমিশন গঠন করলে হবে না, কমিশনকে দায়িত্ব দিতে হবে। ওনার সাথে যে চারজন-পাঁচজন থাকবে তাদের সাথে নিয়ে রূপরেখা তৈরি করবে। এই রূপরেখা তৈরি করার পরে পুরো বাংলাদেশের যারা যারা বিশেষজ্ঞ আছে তাদের সাথে মতবিনিময় করে নতুন করে খসড়া তৈরি করবে। খসড়া শেষে তারা বিশেষজ্ঞদের সাথে ওয়ার্কসফ করবে। ওয়ার্কশপ শেষে তারা চূড়ান্ত করবে আগামীর বাংলাদেশে কি কি সংস্কার করবে। তারপরে রাজনীতিবিদদের কাছে এই সংস্কার কপি দেওয়া হবে। রাজনীতিবিদরা লিখিতভাবে কোনটা এগ্রি করল, কোনটা ডিস-এগ্রি করল- এটা লিখিতভাবে দিতে হবে।

আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছি, যারা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সাহায্য করেছে তাদের চিহ্নিত করে এবং ১৮ সালে যারা দিনের ভোট রাতে করেছে তাদের সরকার থেকে বের করে দিতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টাকে আমরা বলেছি আপনারা সাহসিকতার সাথে এগিয়ে যান আমরা আপনাদের সাথে আছি। এখানে সহজ সরলভাবে কিছু করার নেই। শক্তভাবে এগিয়ে যেতে বলেছি। যারা অন্যায় করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

অর্থ পাচার নিয়ে অলি আহমদ বলেন, যারা জনগণের টাকা লুণ্ঠন করেছে তাদেরকে একটা হোটেলে বা আর্মির ব্যারাকে নিয়ে আসা হোক। নিয়ে এসে ফ্লোরে শুইয়ে দেয়া হোক। অনেকদিনতো নরম বিচানায় শুয়েছিল। এই চোরগুলোকে জেলে রেখে বেশি খাবার দিয়ে মোটা করে লাভ নেই। যত টাকা পাচার করেছে সেইগুলো উদ্ধার করা হোক। তাদের যে ঘরবাড়ি আছে সেইগুলোর দলিল উদ্ধার করে বিক্রি করে রাষ্ট্রের কোষাগারে টাকা জমা করা হোক।

নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘরটা আগে বানাই, পরে চিন্তা করবো কোন রুমে থাকবো। এখন মাত্র ইট ঢালাই শুরু হয়েছে।

নির্বাচন করে লাভ কি সব চোর দিয়া ভরা। যারা অন্যায় করেছে গুলি করে মানুষ মেরেছে তাদের আগে বিচার করতে হবে, তারপর নির্বাচন করতে হবে। সংস্কার কমিশনের কাজ আরও দ্রুত করতে হবে।