পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীদের অনৈতিক চাপে নতি স্বীকার না করার আহ্বান

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশের গ্রামাঞ্চলের ৫৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনকে ঘিরে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা অনভিপ্রেত ও গভীর উদ্বেগজনক। চাকরির নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি আদায়ের জন্য বিদ্যুতের মতো একটি জরুরি সেবার সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় ও রাষ্ট্রদ্রোহী বলে মন্তব্য করেছেন দেশের ক্রেতা ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটির নেতারা।

একই সঙ্গে জোর করে এবং জনগণকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের অনৈতিক চাপে নতি স্বীকার না করে প্রয়োজনে শৃঙ্খলা আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান ক্যাবের নেতারা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২০ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের প্রেসিডেন্ট জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান প্রমুখ।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি একীভূতকরণ এবং অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন, চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের স্থায়ী নিয়োগের দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন সমিতির প্রায় ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন সমিতির কর্মচারীরা। দেশের ৮০টির মধ্যে ৬০টি সমিতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন। এতে বিপুলসংখ্যক গ্রাহক কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিলেন। পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর সঙ্গে আলোচনা শেষে আন্দোলনকারীরা আন্দোলন স্থগিত করেন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের মধ্যে দ্বন্দ্ব অনেক পুরানো। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ বছরের শুরু থেকে আন্দোলন করছেন। বিগত সরকারের আমলে বিদ্যুৎ বিভাগ দাবি-দাওয়া পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি করেন। কিন্তু সেই কমিটি কোনো প্রতিবেদন দিতে পারেনি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সমিতি আন্দোলন অব্যাহত রাখে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়মতান্ত্রিকভাবে উত্থাপন করতে পারেন। কিন্তু এর বদলে হুমকি-ধমকি কিংবা কমপ্লিট সাটডাউনের মতো শৃঙ্খলা বিরোধী আচরণ দাবি আদায়ের পন্থা হওয়া উচিত নয়। বিদ্যুৎ জনজীবনে অত্যাবশ্যকীয় সেবা এবং এ-সংক্রান্ত স্থাপনাগুলো কি-পয়েন্ট ইনস্টলেশনের (কেপিআই) আওতায় হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড।

আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিভিন্ন মহল থেকে নানা দাবি দাওয়া নিয়ে সরকারকে অস্থির করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তার ফাঁকে রাষ্ট্রীয় এই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কিছু বিপথগামী কর্মকর্তা-কর্মচারী বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করছেন। পতিত সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সুবিধাভোগীদের মদদে বিদ্যুৎ কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য নানা পরিকল্পনা করছেন। আর কেউ যেন এ ধরনের রাষ্ট্র ও জনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়লে তার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে।