ইউরোপ পাঠানোর নামে প্রতারণা, দালালের বাড়ি ঘেরাও

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইউরোপ পাঠানোর নামে প্রতারণা, দালালের বাড়ি ঘেরাও

ইউরোপ পাঠানোর নামে প্রতারণা, দালালের বাড়ি ঘেরাও

ছয় মাসের মধ্যে পাঠানো হবে ইতালি, সুইডেন, রোমানিয়া, সাইপ্রাসসহ ইউরোপের বিভিন্ন উন্নত দেশে। আপাতত পাসপোর্ট ও ১ থেকে ২ লাখ টাকা দিলে ছয় মাসের মধ্যেই পাওয়া যাবে ভিসা। একথা বলে আড়াইশ জনের কাছ থেকে টাকা ও পাসপোর্ট জমা নেওয়ার পর ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও একজনকেও বিদেশে পাঠাতে পারেননি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শংকরবাটি তেনু মণ্ডলপাড়ার আব্দুল লতিফ নবীন ওরফে নবীন দালাল।

রোববার (২০ অক্টোবর) আব্দুল লতিফ নবীন ওরফে নবীন দালালের বাড়ি ঘেরাও করে ভুক্তভোগী বিদেশ গমনেচ্ছু যুবকেরা। এসময় বাড়িতে প্রবেশ করে টাকা ও পাসপোর্ট ফেরতের দাবিতে অবস্থান নেয় তারা।

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ছয় মাসের কথা বলে ১-২ লাখ করে টাকা ও পাসপোর্ট নেওয়ার পর থেকে প্রতারণা শুরু করেন নবীন। দিনের পর দিন ভিসা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও ব্যর্থ হয়েছেন। ২৫০ জনের মধ্যে কয়েকজনকে ওয়ার্ক পারমিট দিলেও তা ভুয়া। জনগণের টাকায় গড়ে তুলেছেন আলিসান তিনতলা বাড়ি ও জমিজমা।

এনিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে সালিশে বসলে সেখানে ২৫০ পাসপোর্টের ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে দুই মাসের মধ্যে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতির সময় পেরিয়ে গেলেও একজনকেও টাকা বা পাসপোর্ট ফেরত দেননি। অন্যদিকে, ইউরোপের উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখে ঋণ ও ধারদেনা করে টাকা দিয়ে পথে বসেছেন অনেকেই।

বাড়ি ঘেরাওয়ের সময় নবীন বাড়িতে ছিলেন না। ভেতরে গিয়ে দেখা যায় আলিশান তিন তলা ভবনের নিচতলায় ইন্টেরিয়র ডিজাইনও চোখ ধাঁধানো। প্রতারণা করে এমন বিলাসবহুল বাড়ি বানিয়েছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। জানা গেছে, কয়েকদিন আগে প্রতারক সিন্ডিকেটের আরেক সদস্য শহরের ধাপাপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর বাড়িও ঘেরাও করে ভুক্তভোগীরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

ভুক্তভোগী আরাফাত আলী বলেন, ধারদেনা করে এক লাখ টাকা ঋণ করে নবীনকে টাকা ও পাসপোর্ট দিয়েছিলাম। কিন্তু ছয় মাস বলে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও কোনকিছুই করে দিতে পারেননি। উল্টো হাজারবার ঘুরিয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে তার বাড়ি ঘেরাও করেছি। টাকা না পেলেও পাসপোর্ট ফেরত চাই। আমাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু ব্যবস্থা চাই।

এ বিষয়ে ক্যামেরার সমানে কথা বলতে রাজি হয়নি নবীনের পরিবারের সদস্যরা। মোবাইল ফোনে নবীনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ বলেন, বাড়ি ঘেরাওয়ের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।