ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) গুলশান-১ ও গুলশান-২ এলাকায় রাস্তা ও ফুটপাতের অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করেছে ডিএনসিসি।
সোমবার (২১ অক্টোবর) ডিএনসিসির অভিযানে গুলশান-১ ও গুলশান-২ গোলচত্বরের আশেপাশে রোড ও ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা অন্তত ২৫০টি দোকান উচ্ছেদ করে প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়।
বিজ্ঞাপন
উচ্ছেদ করা দোকানের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন খাবারের অবৈধ টং দোকান, হকারদের বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান। অভিযানে দুটি রেস্তোরাঁয় অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার প্রস্তুত করায় সতর্কতামূলক নোটিশ দেওয়া হয় এবং একটি রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স যথাযথ না থাকায় তা বাতিলের প্রক্রিয়া চলমান আছে।
অভিযান পরিচালনা করেন অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন।
তিনি বলেন, রাস্তা ও ফুটপাতে অবৈধভাবে গড়ে তোলা দোকান ও স্থাপনার কারণে জনগণের স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এসব অবৈধ দোকানের ফলে যানজটও অনেক বেড়েছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দূর করতে এবং সড়কে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে রাস্তা ও ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ক্ষুদ্রঋণের ২৫ হাজার টাকা নিয়ে ব্যাংক থেকে বের হতেই ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন আশরাফ হোসেন (৬৪) নামে এক বৃদ্ধা। টাকা হারানোর শোকে সঙ্গে সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান তিনি।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে সৈয়দপুর শহরের শহীদ তুলসীরাম সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আশরাফ হোসেন সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের দক্ষিণ অসুরখাই গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানায়, সম্প্রতি সৈয়দপুরে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে। গত দেড় মাসে শুধু ব্যস্ততম শহীদ তুলসীরাম সড়কেই অন্তত পাঁচটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এই সময়ে গোটা সৈয়দপুরে অন্তত ১৮টি চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মারা যাওয়া আশরাফ হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন বলেন, তার বৃদ্ধ মা–বাবা ব্যাংকে ক্ষুদ্রঋণ নিয়েছেন।আজ দুপুরে তুলসীরাম সড়কে অবস্থিত ইসলামী ব্যাংক থেকে সেই ঋণের ২৫ হাজার টাকা নিয়ে দুজন ব্যাংক থেকে বের হন। ব্যাংকের মূল ফটকের কাছেই ছিনতাইকারী চক্রটি বৃদ্ধদের শাড়ি লুঙ্গি দিচ্ছে বলে তাদের দুজনকে ভ্যানে পাশের একটি গলিতে নিয়ে যান। সেখানে ভ্যানের ভাড়া দেওয়ার জন্য তার মাকে টাকা বের করতে বলেন। তিনি টাকা বের করার সময় কৌশলে ঋণের ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় তার বৃদ্ধ বাবা সেখানেই অচেতন হয়ে পড়েন। পরে আশপাশের লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাজমুল হুদা বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার পথেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। মূলত শোকে তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।
সৈয়দপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ফইম উদ্দিন বলেন, ছিনতাইয়ের শোকে বৃদ্ধের মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছি। ব্যাংকসহ সড়কের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িত ব্যক্তিদের ধরার চেষ্টা করছে পুলিশ। ব্যাংক পাড়ায় নিরাপত্তাও বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশে গুলশান লেক ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করেছে পরিবেশ অধিদফতর।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে পরিবেশ অধিদফতরের একটি টিম সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়জুন্নেছা আক্তারের নেতৃত্বে টিমটি হোল্ডিং নং-৪/এ, এ কে খন্দকার বীর উত্তম সড়কে সরেজমিনে তদন্ত চালায়। সেখানে লেকের কিছু অংশ ভরাটের চিত্র পায় তারা।
পরে ভরাটের উদ্যোগের প্রমাণ পাওয়ায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গুলশান লেকের বর্ণিত অংশে জলাশয় ভরাটের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার নোটিশ দেয় পরিবেশ অধিদফতর। আইন অমান্য হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।
গুলশান লেক একটি প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ECA)। এই লেক ভরাটে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী কঠোর বিধি-নিষেধ রয়েছে।
পরিবেশ অধিদফতর পরিবেশ দূষণ রোধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন অধিদফতরের মহাপরিচালক।
হেফাজতে ইসলামের ব্যানার ও পদবি ব্যবহার করে রাজনীতির সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির ও দেশের সর্ববৃহৎ ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা মুফতি খলীল আহমদ কাসেমী।
সোমবার (২১ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ঈমান-আকিদাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ভিন্ন কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সঙ্গে ঐক্য বা এ জাতীয় কোন আলাপ-আলোচনার সুযোগ নেই। গঠনতান্ত্রিকভাবে হেফাজতের অরাজনৈতিক অবস্থানের ওপর যে অঙ্গীকার রয়েছে, সেটাকে সর্বাত্মকভাবে বজায় রাখতে হবে।
একই সঙ্গে দেওবন্দী পূর্বসুরী হক্কানী উলামায়ে কেরামসহ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতাবৃন্দের যে মতাদর্শিক অবস্থান, সেখান থেকেও হেফাজতে ইসলাম বিচ্যুত হবে না জানিয়ে মুফতি খলীল আহমদ কাসেমী বলেন, হেফাজতে ইসলাম সাংগঠনিক স্বকীয়তা ও অরাজনৈতিক অবস্থান বজায় রেখে ঈমান-আকিদার সুরক্ষায় নাস্তিক্যবাদী চক্রের ইসলামবিদ্বেষী যেকোন ষড়যন্ত্র উৎখাতসহ দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মানবাধিকারকে হুমকিমুক্ত রাখতে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে কাজ করে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
বিবৃতিতে তিনি হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বলেন, ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রসার ও অবাধ তথ্যপ্রবাহের সুযোগ নিয়ে নাস্তিক্যবাদী চক্র যখন ইসলামের বিরুদ্ধে বহুবিদ ষড়যন্ত্র শুরু করে এবং পুঁজিবাদী ষড়যন্ত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবেও নানান অনৈসলামিক সিদ্ধান্ত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা শুরু হয়, এমন পরিস্থিতিতে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.) এর উদ্যোগে ২০১০ সালের ১৯ জানুয়ারি উম্মুল মাদারিস দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরাসায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ গঠন করা হয়। তখন প্রতিষ্ঠাতা মুরুব্বী আলেমগণ সর্বাবস্থায় এই সংগঠনকে অরাজনৈতিক, সামাজিক, অধ্যাত্মিক ও আত্মসংশোধনমূলক সংগঠনরূপে পরিচালনার ওপর দৃঢ়তার সাথে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠাকালে শীর্ষ মুরুব্বী আলেমগণ আরও অঙ্গীকার করেন যে, এ সংগঠন আকাবিরে ওলামায়ে দেওবন্দের নীতি-আদর্শের ভিত্তিতে মহান আল্লাহর আনুগত্য, ইসলামের বিধি-নিষেধকে জাতীয় ও সামাজিক স্তরে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে পরিচালিত হবে। একই সাথে ঈমান-আক্বিদা, মুসলিম সভ্যতা-সংস্কৃতি, ইসলামের বিধান ও প্রতীকসমূহের হেফাজতে দেশের মুসলমানদেরকে সচেতন করতে কাজ করে যাবে। পাশাপাশি ধর্মীয় ইস্যুতে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন জারি রেখে যাবে। কোনো রাজনৈতিক লক্ষ্যে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি পরিচালিত হবে না। কিন্তু রাজনৈতিক ইস্যুর আড়ালে ইসলামকে টার্গেট করা হলে হেফাজতে ইসলাম সর্বস্তরের মু’মিন- মুসলমান তথা নবীপ্রেমিক, ইসলামপ্রিয় জনতাকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
বিবৃতিতে আল্লামা মুফতি খলীল আহমদ কাসেমী বলেন, ঈমান-আকিদার হেফাজত এবং দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা, সামাজিক সম্প্রীতি ও স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থেই ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলাম ঐতিহাসিক ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করেছিল। হেফাজতের এসব দাবির প্রতি দলমত নির্বিশেষে দেশের গণমানুষের সমর্থন ও আস্থা লংমার্চ ও ঢাকা অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে বার বার প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি হেফাজতের ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.) প্রায় সবসময়ই বলতেন- ‘হেফাজতে ইসলাম কখনোই রাজনীতিতে জড়াবে না, ক্ষমতার মসনদে বসবে না। হেফাজত ক্ষমতায় যেতে কারো সিঁড়ি হিসেবেও ব্যবহৃত হবে না। তবে হেফাজতের ঈমান-আকিদার নীতি-আদর্শকে অবজ্ঞা করে কেউ ক্ষমতার মসনদে থাকতেও পারবে না’। প্রতিষ্ঠাতা আমিরের এই দর্শন কঠোরভাবে অনুসরণ করে যেতে কোনরূপ ছাড় না দেওয়ার ওপর সংগঠনের প্রতিটি নেতা-কর্মীর দৃঢ় প্রত্যয় থাকা কর্তব্য।
সংগঠনের ব্যানার ও পদবি ব্যবহার করে হেফাজতের এসব নীতি-দর্শন থেকে কোন নেতাকর্মীর বিচ্যুত হওয়ার সুযোগ নেই। তবে হেফাজতের পদ-পদবি, ব্যানার ও কর্মসূচির বাইরে যার যার পছন্দের বৈধ ক্রিয়াকলাপ ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে হেফাজত কাউকে বাধা দেয় না, বলে জানান তিনি।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরার অপরাধে ৬ জেলেকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ জাল জব্দ করে তা নষ্ট করা হয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পদ্মা নদীতে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন দৌলতপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আহমেদ।
ভ্রাম্যমাণ আদালত ও উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ শিকার করার সময় বিভিন্ন স্থান থেকে ৬ জেলেকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইনে তাঁদের প্রত্যেককে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ সময় ৬ জেলের কাছ থেকে ২৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আর জব্দ করা ৮৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও ৪০টি চায়না দুয়ারি জাল আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়। যার বাজার মূল্য অন্তত ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এবিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ জানান, জেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ নদীতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসময় ৬ জেলেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাধ্যমে ২৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে ও বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ জাল জব্দ করে তা নষ্ট করা হয়েছে।