সাভারে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বিএনপি নেতাসহ আহত ১০

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাভারে দূর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাত/ছবি: সংগৃহীত

সাভারে দূর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাত/ছবি: সংগৃহীত

সাভারের হেমায়েতপুরের ঝাউচর এলাকায় দুর্বৃত্তদের কোপে বিএনপির এক নেতা ও তার ভাইসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। এরমধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের অভিযোগ, হামলাকারীরা আগে আওয়ামী লীগের সহযোগী থাকলেও বর্তমানে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে সাভার উপজেলার তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের ঝাউচর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

আহতরা হলেন- তেঁতুলঝোরা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, তার ভাই আশরাফুল ইসলাম মনির, ভাতিজা রিফাত ও শামীম আহমেদসহ আরও ছয়জন। তারা সবাই ঝাউচর এলাকার বাসিন্দা।

হামলায় জড়িতরা হলেন- ওসমান গনি (৪৭), আউয়াল (৪০), সালেহ আহমেদ (২৫), আশরাফ (৪৫), মাহমুদউল্লাহ (২৬), আলাউদ্দিন মোক্তার (৬০), রতন শেখ (৪৪), মো. শরিফ (৩৫), ইয়াকুব (৩৪), খলিল (৪০), ইসমাইল হোসেন সিরাজি (৪২), বিল্লাল হোসেন (৪০), আউয়াল (৩০), নাজির হোসেন (৩২), সুমন (২৫), ইকবাল (৩৫), আলতু মিয়া (৩৫), তোফাজ্জল হোসেন তপু (৪৫), বজলুর রশিদ রাসেল (৪৫), সালাম (৩৫) সহ আর অজ্ঞাত ১৫-২০ জন।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনায় বুধবার রাতে সাভার মডেল থানায় করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সহযোগী মোশাররফ হোসেন মুসার ভাই শরিফ ও রাসেলের নেতৃত্বে প্রায় ৩০-৪০ জন ঝাউচর বাজারে রাম দা, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশিয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে ভুক্তভোগীদের ওপর হামলা করে। এতে ১০ জন আহত হন। তাদের সাভারের বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরমধ্যে গুরুতর আহত মনিরকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মুসা বাহিনী হিসেবে পরিচিত এ চক্রের হামলার বিবরণ দেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী তেঁতুলঝোরা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, আমার সঙ্গে ব্যবসা নিয়ে তাদের সঙ্গে বিরোধ চলছে কিছু দিন ধরে। গতকাল রাতে আমি বাজারে যাই, তখন মোশাররফ বাহিনীর প্রধান শরিফ ও রাসেলসহ অন্তত ৩০-৪০ জন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে আমার ওপর হামলা করে। আমাকে বাঁচাতে এসে তাদের ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর আহত হয় আমার ভাই ও ভাতিজা। আমার ভাই হাসপাতালে ভর্তি। আমরা এই মুসাবাহিনীর হাত থেকে পরিত্রাণ চাই। আমরা এখনও খুবই আতঙ্কে আছি।

কোপের আঘাতে আহত আলমগীরের ভাতিজা রিফাত বলেন, আমি বাজারে ছিলাম দেখি মুসা বাহিনীর শরিফ ও রাসেলের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন আমার কাকার ওপর হামলা করে। আমি এগিয়ে গেলে আমাকেও দুটি কোপ দেয়।

এদিকে মুসা বাহিনীর বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবি জানান।

স্থানীয় বাসিন্দা মেহেদি হাসান অয়ন বলেন, আমরা মুসা বাহিনীর অত্যাচারে আতঙ্কিত হয়ে আছি। প্রশাসন তাদের থামাতে পারছে না। গতকালও বাজারে তারা কয়েক জনকে কোপায়। আহতরা না পালালে তাদের হয়তো মেরেই ফেলতো।

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, সরকার পতনের পর থেকে কয়েক দিন পরপরই তারা বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্নভাবে মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, হামলা করছে। গতকাল যেভাবে দল বেধে তারা হামলা করেছে তাতে এলাকার সবাই খুব আতঙ্কিত। প্রশাসন যদি নিরাপত্তা না দেয়, আমাদের এলাকায় মানুষের বাস করাই কষ্ট হয়ে যাবে।

এ ঘটনায অভিযুক্তদের বক্তব্যের জন্য যোগাযোগ করলে তারা বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে পাওয়া অভিযোগের তদন্ত চলছে বলে জানায় সাভার মডেল পুলিশ। সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিয়া বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ হামলার ঘটনায় এখনও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে এলাকাটিতে। এলাকাবাসী প্রশাসনের তৎপরতার দাবি জানিয়েছেন।