আবু সাঈদের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ৬ বার পরিবর্তন করা হয়: চিকিৎসক

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,রংপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আবু সাঈদের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ৬ বার পরিবর্তন করা হয়: চিকিৎসক

আবু সাঈদের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ৬ বার পরিবর্তন করা হয়: চিকিৎসক

'গণঅভ্যুত্থান পূর্ববর্তী সময়ে রংপুর মেডিকেল কলেজের দায়িত্বে থাকা ভাইস প্রিন্সিপাল ডা. মাহফুজার রহমান নানাভাবে শহীদ আবু সাঈদ এর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পরিবর্তন করতে অপচেষ্টা চালিয়েছে। শহীদ আবু সাঈদের বুক গুলিতে ঝাঁঝরা ছিল এই রিপোর্ট পরিবর্তনের জন্য আমাকে ঢাকা থেকে হুমকি এবং ভয় দেখানো হয়েছিল। এমনকি সেই পোস্টমর্টেমের রিপোর্টের দায়িত্বে থাকায় আমার ওপর নানাভাবে মানসিক টর্চারও করা হয়েছে। ফলে শহীদ আবু সাঈদের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ৬ বার পরিবর্তন হয়েছিল। তবুও তাদের মনের মত হয় নাই তদন্ত রিপোর্ট। আন্দোলনে গুলিবিদ্ধে নিহতের পরিবর্তে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে মৃত্যুবরণের রিপোর্ট দিতে নানা প্ররোচনায় পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলো এই ডা. মাহফুজ।'

রমেক অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজকে পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে পোস্টমর্টেমের রিপোর্ট নিয়ে মুখ খুলেন রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজের সামনে বৈষম্য বিরোধী চিকিৎসক,কর্মচারী ও ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে অধ্যক্ষের পদত্যাগের আন্দোলনে এসব কথা বলেন রমেক বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলাম।

তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজের সদ্য দায়িত্ব পাওয়া অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজার রহমানের পদত্যাগের দাবিতে উত্তপ্ত ক্যাম্পাস। এই দাবি আদায় মাঠে নেমেছে বৈষম্য বিরোধী চিকিৎসক, কর্মচারী ও ছাত্র-জনতা।

বিজ্ঞাপন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও ৪৭ তম ব্যাচের ইন্টার্ন চিকিৎসক, রিয়াজ শরীফ লিমন জানান, ২৪ এর বিপ্লবের অন্যতম মহানায়ক শহীদ আবু সাঈদের রিপোর্ট নিয়ে মেডিকেলে বসে ষড়যন্ত্র করেছিল ডা. মাহফুজ। তাকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ ও কলেজ থেকে অপসারণ এর দাবি জানান। তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে কলেজের সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

পরে ছাত্র শিক্ষকের আল্টিমেটামের ২ ঘণ্টা পরে নগরীর রায়ান্স হোটেলের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজার রহমান। নিজেকে অরাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় দিয়ে জানান, একটি মহল তার এই অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের বাহিরের কিছু লোককে সংযুক্ত করে ছাত্রদেরকে উস্কিয়ে দিয়ে আন্দোলন করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। একই সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার না চাইলে অধ্যক্ষ পদ থেকে সরে যাবেন বলেও জানান ডা. মাহফুজার রহমান।

আগামী তিন দিনের মধ্যে তাকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম ঘোষণা করা হয়। একই সাথে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বৈষম্য বিরোধী চিকিৎসক, কর্মচারী ও ছাত্র-জনতা।

এসময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, গণঅভ্যুত্থান পূর্ববর্তী সময়ে ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ আবু সাঈদের পোস্টমর্টেমের রিপোর্টও বিকৃত করতে অপচেষ্টাও করেছেন ডা. মাহফুজার রহমান। একই সাথে ক্যাম্পাসের নানা বিষয়ে সুবিধাভোগ করাসহ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে পৃষ্ঠপোষক করার অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। বিগত সময়ে কলেজের ভাইস প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামী সরকারের দোসর হিসেবে ডা. মাহফুজ কাজ করেছেন। তার পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবেই।

উল্লেখ্য, গত ২৯ অক্টোবর রংপুর মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ থেকে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন করা হয় ডা. মাহফুজার রহমানকে।