রাজধানীর গুলিস্তান ও পল্টন এলাকার প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে ফুটপাত দখল করে বসে ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। যাদের বেশির ভাগই কাপড় ব্যবসা। সারা বছর মোটামুটি ব্যবসা করলেও শীতের কয়েক মাসে ব্যবসা চাঙ্গা করতে মরিয়া হয়ে উঠেন তারা।
তবে এবার এখনও প্রস্তুতি শুরু করেনি ব্যবসায়ীরা। বিক্ষিপ্তভাবে বেশ কিছু দোকানে শীতের কাপড় পাওয়া গেলেও, নতুন গার্মেন্টস পণ্য আসেনি ফুটপাতের অধিকাংশ দোকানেই।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে খানিকটা অলস সময় কাটাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ এই ব্যবসায়ীরা। ক্রেতা সংকটের পাশাপাশি উচ্ছেদ অভিযানের ভয়ে আতঙ্কিতও তারা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর চাঁদাবাজি কমলেও ফুটপাতের ব্যবসা নিয়ে ভয়ে আছেন তারা। উচ্ছেদ অভিযানের আতঙ্ক বিরাজ করছে তাদের মনে৷
বিজ্ঞাপন
তবে কিছু কিছু দোকানে শীতের নতুন কাপড়ের সরবরাহ দেখা গেছে। বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের শীতের কাপড় বেশি চোখে পড়েছে। ফুটপাতের পাশে শিশুদের শীতের পোশাক নিয়ে বসলেও বিক্রি কম বলে জানান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রাজু হাসান।
বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, এবার নভেম্বরের মাঝামাঝিও তেমন শীত না আসায় শীতের পোশাকের চাহিদা কম। এর পরের সপ্তাহে চাহিদা বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।
পোশাকের পাশাপাশি গুলিস্তানের মার্কেটসহ ফুটপাতগুলোতে ভারী ও পাতলা কম্বল, সাথে কমফোর্টারও বিক্রি হচ্ছে । আসন্ন শীতের কথা চিন্তা করে অনেকেই কিনছেন এসব। তবে এখন শীতের প্রকোপ তেমন না পড়ায় বিক্রি আশানুরুপ হচ্ছেনা বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
কম্বল বিক্রি করছে ইয়াসিন আলী তিনি জানান, শীত পড়লেই বিক্রি শুরু হবে৷ আমরাও বেশি মাল আনিনি। কিন্তু আমরা এহেনে ব্যবসা করে খাইতে পারুম না, উডায় দিবো। আমগো অল্প পুঁজি, দোকান নেওয়ার সমর্থ নেই। আমগো তাইলে অন্য ব্যবস্থা করুক, না হইলে পোলাপাইন লই পথে বসুম।
এদিকে বাইতুল মোকাররম মার্কেটের আশে পাশের দোকানগুলোতে শীতের কাপড়ের সরবরাহ দেখা গেছে। এছাড়া কম্বল, হালকা, ভারী শীতের কাপড় বিশেষ করে বাচ্চাদের সোয়েটার, হুডি, জ্যাকেটসহ মেয়েদের শীতের পোশাকও বিক্রি করতে দেখা গেছে।
শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, দেশের রাষ্ট্রায়াত্ত খাতের বন্ধ চিনিকলগুলো পুনরায় চালু করা হবে। বন্ধ চিনিকলগুলো কিভাবে চালু করা যায়, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছে একটি টাস্কফোর্স কমিটি।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে আখ মাড়াই কার্যক্রম উদ্বোধনে তিনি এ কথা বলেন।
নাটোরের নর্থ বেঙ্গল চিনিকলে চলতি মৌসুমের আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুই লাখ টন আখ মাড়াইয়ের মাধ্যমে ১৫ হাজার টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এ চিনিকলটি আখ মাড়াই শুরু করেছে।
‘এ কমিটি বন্ধ চিনিকলগুলো চালু করার প্রতিবন্ধকগুলো পর্যবেক্ষণ করছে’ উল্লেখ করে আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘জনগণ পাশে থাকলে সমন্বিত শক্তির উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে, সাহসিকতার সঙ্গে এ বিষয়ে সফল হতে চাই। সেই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কাজ করছি।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের পিছিয়ে পড়া এলাকায় কলকারখানা কম থাকায় জীবন-জীবিকার পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সামগ্রিকভাবে আমরা উদ্যোগ নিতে চাই। আমরা যদি সামগ্রিকভাবে চেষ্টা করি, নিশ্চয়ই আমরা পরিবর্তনের ধারা শুরু করে যেতে পারব। রাষ্ট্র পরিচালনায় এরপরে যারা আসবেন, তারা এই ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
নর্থ বেঙ্গল চিনিকলের আখ মাড়াই কার্যক্রম উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ড. লিপিকা ভদ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের (বিএসএফআইসি) পরিচালক এটিএম কামরুল ইসলাম, নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হোসাইন, আখচাষী হাসান রাজা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
নর্থ বেঙ্গল চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ খবির উদ্দিন মোল্ল্যা জানান, চলতি মৌসুমে দুই লাখ টন আখ মাড়াই করে ১৫ হাজার টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১১৭ আখ মাড়াই দিবসে চিনি আহরণের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠজুড়ে এখন সোনালি ধানের উৎসব। শুরু হয়েছে আমন ধান কাটার মৌসুম। দলবদ্ধভাবে এখন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মাঠে তৈরি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। কেউ ধান কেটে জমি খালি করছেন, আবার কেউ মাড়াই শেষে ধান বস্তায় ভরে বাড়িতে তুলছেন। বাম্পার ফলনের আনন্দে কৃষকরা নতুন স্বপ্ন বুনছেন।
এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা, যা কৃষকদের মনে বাড়তি উৎসাহ যোগাচ্ছে।
কৃষকরা বলছেন, মৌসুমের প্রথমদিকে আবহাওয়ার অনিয়মিত পরিস্থিতি ও খরার কারণে আমন উৎপাদন নিয়ে কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তবে শেষ পর্যন্ত প্রকৃতির অনুকূলতায় সেই শঙ্কা কাটিয়ে উঠেছেন।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে রাজশাহী জেলায় আমনের বাম্পার ফলনের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। এ সফলতার পেছনে জমির পরিমাণ বৃদ্ধি, কৃষি বিভাগের সঠিক নির্দেশনা, এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মাঝেও কৃষকদের প্রচেষ্টা ও ধৈর্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্রে জানা গেছে, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। এই অতিরিক্ত আবাদ এবং পরিবেশের সহায়ক পরিস্থিতির কারণে আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তারা জানিয়েছেন যে কৃষকরা বর্তমানে ধান কাটার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন এবং ইতিমধ্যেই বাজারে ধানের ভালো মূল্য পাওয়ায় তাদের মাঝে সন্তোষ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
কৃষি অফিস বলছে, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৩ হাজার ৫৬৭ হেক্টর জমি। তবে বাস্তবে চাষ হয়েছে ৮৪ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে। এ আবাদ থেকে ৩ লাখ ৫ হাজার ৭৬২ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আবাদের ৩০ শতাংশ জমি থেকে ধান কর্তন সম্পন্ন হয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় ৯২ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। এই তথ্যের ভিত্তিতে এ বছর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা যেমন ছাড়ানো সম্ভব হয়েছে, তেমনি উৎপাদনেও রেকর্ড সৃষ্টি হবে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমনের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮১ হাজার ৭৫৯ হেক্টর জমি, যার মধ্যে আবাদ হয়েছিল ৮৩ হাজার ১৭৭ হেক্টরে। ঐ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই লাখ ৯১ হাজার ৬২ মেট্রিক টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হয়েছিল, এবং উৎপাদনের ক্ষেত্রেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়েছিল। অর্থাৎ ধারাবাহিকভাবে গত কয়েক বছর ধরে আমন উৎপাদনে রাজশাহী জেলার কৃষকরা সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। তবে পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় এবার আমনের আবাদ ও উৎপাদনে বেশ ভালো অগ্রগতি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার গোদাগাড়ী, পবা, এবং দূর্গাপুর উপজেলায় ধান কাটার চিত্র বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়। এখানে উৎসবমুখর পরিবেশে কৃষকরা তাদের ফসল কেটে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন এবং কেউ কেউ মাঠের পাশেই মাড়াইয়ের কাজ করছেন। ধান মাড়াইয়ের সময়ও স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে সহযোগিতার এক আবহ সৃষ্টি হয়েছে, যা কৃষি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা যায়। কৃষকদের মধ্যে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস দেখা যাচ্ছে। কারণ মৌসুমের শুরুতে বাজারে ধানের ভালো দাম পেয়েছিলেন তারা।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারের আমন মৌসুমে শুরুতে অনাবৃষ্টি এবং পরে অতিবর্ষণের কারণে কিছু কিছু জমিতে ধানের ক্ষতি হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাম্পার ফলন হয়েছে। অনেক জমিতে ডুবে যাওয়ার ফলে ফলন কম হয়েছে, তবে এতে পুরো চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কৃষক আফজাল হোসেন জানান, তার আড়াই বিঘা জমিতে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। পানির খরচ কিছুটা বেশি হলেও ফলন আশানুরূপ হচ্ছে। প্রতিটি বিঘায় ২২ মণের বেশি ধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
দূর্গাপুর উপজেলার কৃষক শহীদুল ইসলাম জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে আমন আবাদ করেছেন এবং মোটামুটি ভালো ফলন পেয়েছেন। বন্যার সময় কিছু জমি ডুবে গিয়েছিল, তবে বাকি জমিতে ভালো ফসল হয়েছে। তিনি আশাবাদী যে এ মৌসুমে তিনি লাভবান হবেন।
পবা উপজেলার কৃষক বারিউল হক বলেন, এবার আমন ধানের ফলন খুবই ভালো হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া নিয়ে কিছুটা শঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত বাম্পার ফলন পেয়েছি। আমার তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি, আর প্রত্যেক বিঘায় ২০ মণের বেশি ফলন হয়েছে। ধানের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। আশা করছি, এবার খরচ তোলার পর হাতে ভালো পরিমাণ টাকা থাকবে। এই ফলন আমাদের পরিবারের জন্য অনেক স্বস্তি এনে দিয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোসা. উম্মে ছালমা জানান, এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে এবং ফলন ভালো হচ্ছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হওয়ায় আশা করছি যে এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে।
বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় মাকে হত্যার অভিযোগে ছেলেকে গ্রেফতারের ঘটনাটি নাটকীয় মোড় নিয়েছে। পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। জানা যায়, এ হত্যাকাণ্ড ছেলে নয় ঘটিয়েছে নিহতের বাসায়ই ভাড়া থাকা ভাড়াটিয়া ও তার দুই সহযোগী।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বগুড়ার গোয়েন্দা পুলিশ ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া এক নারী ও দুই পুরুষকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে এই তথ্য।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন, আজিজিয়া মঞ্জিল নামের ওই বাড়ির চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া মাবিয়া (৪২) ও তার দুই সহযোগী সুমন চন্দ্র (৩৫) এবং মোসলেম উদ্দিন (৪৫)।
দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় সাদ বিন আজিজুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে সাদ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় নিহত উম্মে সালমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি মোসলেম উদ্দিনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে মোসলেম উদ্দিনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভ্যান চালক সুমন চন্দ্র ও ভাড়াটিয়া মাবিয়া খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়।
আটকের পর মাবিয়া, সুমন ও মোসলেম উম্মে সালমাকে হত্যার কথা স্বীকার করে ঘটনার পুরো বর্ণনা দিয়েছে। পরে তাদের দেখানো জায়গা থেকে পুলিশ আলামত হিসেবে প্রধান গেটের তালার চাবি, রাউডার, মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।
গ্রেফতারের পর মাবিয়া পুলিশকে জানান, চার মাস আগে উম্মে সালমা আজিজিয়া মঞ্জিলের চতুর্থ তলা ভাড়া নিয়ে একাই বসবাস করতেন। বাসায় মাদক বিক্রি এবং অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে উম্মে সালমা ও তার স্বামী আজিজুর রহমান তাকে এক মাসের মধ্যে বাসা ছেড়ে দিতে বলেন। তার কাছে দুই মাসের ভাড়াও পাওনা ছিলো। বিষয়গুলো নিয়ে মাবিয়া উম্মে সালমার উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাই তিনি তার সহযোগী ও মাদক ব্যবসায়ী সুমন চন্দ্র সরকার এবং মোসলেমকে নিয়ে গত শনিবার উম্মে সালমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা মাফিক রোববার সুমনের ভ্যানে মোসলেম ওই বাসায় আসেন। বেলা ১২টার দিকে মাবিয়া প্রথমে তিন তলায় প্রবেশ করেন। তারপর পরই সুমন ও মোসলেম বাসায় ঢুকেই চেতনানাশক স্প্রে করে উম্মে সালমাকে অচেতন করেন। এরপর তার নাক মুখ ও হাত বেঁধে বাসার ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখে তারা তিনজন সেখান থেকে বেরিয়ে যায়।
বগুড়া জেলা পুলিশের মুখপত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, উম্মে সালমা হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কিছু আলামত উদ্ধারের পর তাদেরকে শুক্রবার বিকেলে আদালতে নেয়া হয়েছে। আদালতে জবানবন্দী দেয়ার পর বিস্তারিত জানানো হবে।
এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত এখনও শেষ হয়নি বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত রোববার দুপচাঁচিয়া পৌর শহরের জয়পুরপাড়া এলাকায় আজিজিয়া মঞ্জিল নামের নিজ বাড়িতে হত্যাকাণ্ডের পর খুনিরা উম্মে সালমার মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রেখে যান। দু'দিন পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উম্মে সালমার ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে আটক করে র্যাব। পরদিন র্যাব প্রেস ব্রিফিং করে জানায় উম্মে সালমার ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান স্বীকার করেছেন তিনি নিজেই তার মাকে হত্যা করেছেন।
ফ্যাসিবাদের শেকড় অনেক দূর ছড়িয়ে আছে বলে মন্তব্য করে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ফ্যাসিস্টের শেকড় এতটাই গভীরে চলে গেছে যে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই এত সহজ নয়। গত ১৫ বছরে তারা জড়ো হয়েছে আর এদিকে আমরা কয়েক সপ্তাহ এই প্রক্রিয়ার বিপরীতে কাজ করছি।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) এশিয়ান ফেডারেশন অ্যাগেইনস্ট ইনভলান্টারি ডিসএপিরেন্স (এএফএডি)-এর অনুষ্ঠানে আসিফ নজরুল এ কথা বলেন। দুই দিনব্যাপী অষ্টম কংগ্রেসের উদ্বোধনী এ অনুষ্ঠানে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, খুনের চেয়েও গুম ভয়াবহ। সক্ষমতার ঘাটতি থাকতে পারে কিন্তু গুমের বিরুদ্ধে আইন করায় আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই অন্তর্বর্তী সরকারের।
আইন উপদেষ্টা বলেন, হত্যাকাণ্ডের চেয়ে গুম খারাপ অপরাধ। গুমের শিকার পরিবারের সদস্যদের পুনর্বাসনের বিষয়ে চিন্তা করছে সরকার।
অনুষ্ঠানে গুমের শিকার পরিবারের স্বজনরা নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা জানান।