ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের গণরুমে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত ৯ জনের মধ্যে আটক ৫ জনকে জামিনে মুক্ত দিয়েছেন কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেল ৪ টার দিকে তাদেরকে জামিনে মুক্ত করা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট নুরুল ইসলাম রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জামিনে মুক্ত অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন মো. সাব্বির হোসেন (২১), শরিফ শেখ শেহান (২১), শরিফুল ইসলাম লিমন (২১), সুকুমার কান্ত বড়ুয়া (২০) ও সঞ্চয় বড়ুয়া (২০)।
আসামিপক্ষ এডভোকেট নুরুল ইসলাম জানান, আটককৃত ৫ জনকে জামিনে মুক্ত করা হয়েছে। বাকিরা অনুপস্থিত। আগামীকাল (২১ নভেম্বর) জানা যাবে শুনানির তারিখ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি সম্পর্কে মন্তব্য করে বলেন, যেহেতু একবার শাস্তি হয়ে যাচ্ছে, সংবিধান ও সিপিসি অনুযায়ী পুনরায় শাস্তি দেয়ার সুযোগ নাই।
এদিকে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জামিন দেয়া হয়। এখন মামলার তদন্ত হবে। তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। ঘটনা সত্য নাকি মিথ্যা সে অনুযায়ী তদন্ত রিপোর্ট জমা দিবে এই টাইপের। তবে আইনী বিষয়ে আমার এত ধারণা নেই। এতে ক্লাস পরীক্ষা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক আইন উপদেষ্টা ও আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিচুর রহমান বলেন, আসলে এরকম একই বিষয়ে দুইবার শাস্তি দেওয়ার সুযোগ নাই। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা নিজস্ব শৃঙ্খলা ‘কোড অব ল’ আছে সেই অনুযায়ী আবাসিক হলে যেকোনো ফৌজদারি অপরাধ সংগঠিত হলে ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে জটিল সমীকরণ তদন্ত কমিটি অবগত কিনা দেখার বিষয়।
হল তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আকতার হোসেন বলেন, বাহিরে কী হচ্ছে সেটা দেখার বিষয় না বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইনে তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের শাস্তি হবে। যদি আইনে এরকম বাধা দেয় তাহলে তদন্ত কমিটি আদালতের সহায়ক হতে পারে বা আদালতের রায় আমাদের সহায়ক হতে পারে। যা পরবর্তী পদক্ষেপ আলোচনার মাধ্যমে হবে।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) লালন শাহ হলে র্যাগিংয়ের ঘটনায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী মো. তারেক। তিনি ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় অভিযুক্ত ৯ জনের বিরুদ্ধে ইবি থানায় এই মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী। এর মধ্যে ইবি থানায় আটক থাকা ৫ শিক্ষার্থীকে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চালান দেয়। দণ্ডবিধির ১৪৩, ৩২৩, ৩৪১ ও ৫০৬ নং ধারা অনুযায়ী মামলা হয় বলে এজহার সূত্রে জানা যায়।
অভিযুক্তরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাব্বির হোসেন, শরিফুল ইসলাম লিমন, কান্ত বড়ুয়া, শেহান শরীফ শেখ, জিহাদ, শফিউল্লাহ, তরিকুল, মুকুল ও ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সঞ্জয় বড়ুয়া।