‘সংবিধান থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা স্তম্ভটি কখনোই বাতিল যোগ্য নয়’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ধর্ম নিরপেক্ষতা ১৯৭২ সালের বাংলাদেশের সংবিধানের চারটি মূল ভিত্তির একটি। তাই সংবিধান থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা স্তম্ভটি কখনোই বাতিল যোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছে "সনাতন একতা মঞ্চ" নামের একটি ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সনাতন একতা মঞ্চ আয়োজিত 'সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিল এবং সনাতন নেতৃবৃন্দদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে' সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনের সদস্যরা।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি সুস্মিতা কর। তিনি বলেন, ধর্মনিরপেক্ষবাদ বলতে সাধারণত রাষ্ট্র আর ধর্মকে পৃথকরূপে প্রকাশ করাকে বোঝায়। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে ধর্ম বা ধর্মীয় রীতিনীতির বাইরে থেকে পরিচালনা করাকে বোঝানো হয়। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের আইন কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের ওপর নির্ভরশীল থাকে না। সকল 'ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো, তথ্য এবং প্রমাণের ওপর নির্ভর করবে, কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর নয়। অর্থাৎ বলা যায়, “ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার"।

তিনি বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী বিলটি তৎকালীন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ সংসদে এনেছিলেন ২০১১ সালের জুন মাসে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭২ সালের সংবিধানের মৌলিক কিছু বিষয়ও ফিরিয়ে আনা হয়। রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসাবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়। সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল করা হয়। তবে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখা হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ধর্ম নিরপেক্ষতা ১৯৭২ সালের বাংলাদেশের সংবিধানের চারটি মূল ভিত্তির একটি। আমাদের এই সংগঠন তথা আমারা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ধর্মালম্বীরা কখনোই এই ধর্মনিরপেক্ষতা বাতিল হোক চাই না ও আগামীতেও চাইবো না। এটা আমাদের একটা বড় শক্তি ও সাহস মনোবলের স্থান। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে, এটা আমাদের জন্মগত অধিকার কারণ আমারা এই দেশের ভূমিতে যুগ যুগ ধরে জন্মগ্রহণ করে বসবাস করে আসছি পৈত্রিক ভূমির বসতবাড়িতে। এককথায় এটাই আমাদের একমাত্র অবলম্বন, এটাই আমাদের সর্বেসর্বা। তাই সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা স্তম্ভটি কখনোই বাতিল যোগ্য নয়। বাতিল হওয়ার প্রশ্নই আসে না। এ বিষয়ে বর্তমান সরকারের এবং সংবিধান প্রণেতাদের প্রখর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

লিখিত বক্তব্যে সুস্মিতা কর আরও বলেন, বেশ কিছু দিন ধরে দেখা যাচ্ছে আমাদের সনাতনী নেতৃবৃন্দদের বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। যার কোন রকম যুক্তিসংগত কারণ নাই বললেই চলে। অনতিবিলম্বে তাদের মামলা প্রত্যাহার করতে মুক্তি প্রদানের সবিনয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি।

তাদের ৮ দফা দাবি কার্যকর করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমারা সনাতনীরা জোট বদ্ধ হয়ে আমাদের অধিকার আন্দোলনের জন্য ৮ দফা দাবি ইতিমধ্যে বর্তমান সরকারের নিকটে পেশ করেছি। কিন্তু কোনো রকম অগ্রগতি না হওয়ার কারণে আমাদের সেই ৮ দফার জন্য আন্দোলন অব্যাহত রাখা হয়েছে। আমারদের অধিকার আন্দোলন এই ৮ দফা দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বর্তমান সরকারের নিকটে অনুরোধ জানাচ্ছি।

এসময় সংগঠনের সভাপতি মিথুন ভট্টাচার্য (শুভ) বলেন, গতকালকে চিন্ময় প্রভুকে নিয়ে যা ঘটেছে সেটা থেকে বোঝা যায় আমাদের মধ্যে দুষ্কৃতিকারী রয়েছে। এটার দায় সম্পূর্ণ দুষ্কৃতিকারীদের। এর দায় সনাতনীদের না।

এসময় সংগঠনের সদস্যরা দুষ্কৃতিকারীদের বিচারের দাবি জানান।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা প্রতিষ্ঠাতা স্বামী মহেশ্বনান্দ পুরি মহারাজ প্রমুখ।